গত কয়েকসপ্তাহ ধরে কানাকানি চলছে যে করদাতারা যাতে তাঁদের আয়ের টাকা বেশি খরচ করতে পারেন, সে উদ্দেশ্যে আয়করে ছাড় দেওয়া হবে।
কেউ কেউ বলেছেন সম্ভাবন্য আয়কর ছাড় নির্ভর করবে সরকারি রিপোর্টের উপর, যে রিপোর্ট প্রকাশ না করা হলেও তা সরকারের হাতে পৌঁছিয়েছে - যার মাধ্যমে বর্তমান আয়কর কাঠামোকে যৌক্তিক করে তোলা যাবে। অন্যরা প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান বিবেক দেবরায়ের মত আধিকারিক ও অর্থনৈতিক উপদেষ্টার মুখের কথার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। বিবেক দেবরায় বলেছেন, এবার কর্পোরেট ট্যাক্স যেহেতু কমেছে, আজ হোক বা কাল হোক সরকার আয়করের হারও কমাবেই।
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: কর্পোরেট করে ছাড় ও তার প্রভাব
আয়কর ছাড় কি যৌক্তিক?
কানাকানি যতই হোক, সরকারের আয়কর ছাড়ের পথে হাঁটার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। গত ৬টি ত্রৈমাসিক ধরে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি কমছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার আরও কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর মূল কারণ হল উপভোক্তাদের চাহিদার পতন, যার ফলে মজুরি বৃদ্ধি দুর্বল হয়েছে, বেরোজগারি বেড়েছে এবং আর্থিক ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
আয়কর ছাড়ের ফলে করদাতাদের হাতে খরচ করার মত অর্থ আসবে এবং সরকারের আশা করদাতারা এই অতিরিক্ত অর্থ খরচ করবেন, যা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।
রেহাইয়ের ব্যাপারে কী হবে?
এখন একজনের করযোগ্য যে আয় তাতে একজন ব্যক্তি কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে টাকা জমানো (যেমন পিপিএফ)-র মাধ্যমে কর রেহাই পেতে পারেন। আয়করে ছাড় দেওয়া হলে আশা করা যায় এ ধরনের রেহাইএর ব্যাপারও আর থাকবে না। কর্পোরেট করের ব্যাপারে যেমন হয়েছে, যে কম করহার লাগু হলে কোনও রেহাইও আর থাকবে না, আয়করের হার কমালে, এক্ষেত্রেও তেমন হতে পারে।
একটি কর ব্যবস্থায় কোনও রেহাই না থাকলে বা ন্যূনতম রেহাইয়ের ব্যবস্থা থাকলে সে ব্যবস্থা অনেক বেশি উপযোগী হয় কারণ তার উপর কর্তৃত্ব চালানো অনেক সহজ হয়।
আয়করে ছাড় দিলে অর্থনীতি কীভাবে চাঙ্গা হবে?
এ প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করবে করে ছাড় ঠিক কীরকম হচ্ছে তার উপর। আয়করে যা সংগ্রহ হয় তার মূল অংশটাই আসে অতি ধনীদের কাছ থেকে। বহু মানুষই করের রিটার্ন ফাইল করেন, কিন্তু তাঁরা হয় কোনও কর দেন না, বা দিলেও অতি সামান্য পরিমাণ কর দেন।
সম্ভাব্য ফলাফল কী হতে পারে?
শুভদীপ রক্ষিত এবং অনিন্দ্য ভৌমিকের মত বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সম্ভাব্য করছাড় দ্বিমুখী তলোয়ারের কাজ করতে পারে। তাঁরা মনে করছেন এর ফলে
- সরকারের বর্তমান আর্থিক বর্ষে আয় ৬২০০ কোটি টাকা থেকে ১,২৫০০০ কোটি টাকা কমতে পারে।
-এর ফলে সরকারের আর্থিক ঘাটতি ২ বেসিস পয়েন্ট থেকে কমে ৩৭ বেসিস পয়েন্টে পৌঁছতে পারে।
-তবে ব্যক্তিক্ষেত্রে এই করছাড় লাগু হলে কম আয়ের মানুষরাই অধিক উপকৃত হবেন।
Read the Full Story in English