History of India and Nepal’s border issue: নেপাল সরকারের মন্ত্রিসভা গত সপ্তাহে তাদের ১০০ টাকার নোটে মানচিত্র ছাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই মানচিত্রে তারা ভারতের উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন এলাকাকে রেখেছে। যাতে বেশ ক্ষুব্ধ ভারত। কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেছেন, নেপালের এই ধরনের উসকানিমূলক পদক্ষেপে মানচিত্রের প্রকৃত ছবিটা বদলাবে না।
ভারতের যে অঞ্চলটা নেপাল নিজেদের মানচিত্রে ঢুকিয়ে নিয়েছে, সেগুলো হল- উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় জেলার ভারত-নেপাল-চিন সীমান্তের লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ এবং কালাপানি। গোটা অঞ্চলটা ৩৭২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা। নেপাল বেশ কিছুদিন ধরে দাবি করে আসছে যে, ওই অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবে তাদের। আর, ওই অঞ্চল তাদের সীমান্তের অন্তর্ভুক্ত।
চার বছর আগে, ২০২০ সালে নেপালের সংসদ সর্বসম্মতিক্রমে নতুন মানচিত্রটিকে গ্রহণ করেছিল। এই নতুন মানচিত্রেই তারা লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ এবং কালাপানিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এরপর গত ২ মে, নেপালের মন্ত্রিসভা তাদের ১০০ টাকার নোটে নতুন মানচিত্রটিকে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা কার্যত, ভারতের অঞ্চল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টারই শামিল। নেপাল সরকারের এই নতুন পদক্ষেপে অসন্তুষ্ট বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর গত ৪ মে বলেছেন, 'সীমান্ত নিয়ে কিছু বলার থাকলে, তার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বা মঞ্চ আছে। সেখানেই আলোচনা চলে। কিন্তু, বোঝা যাচ্ছে যে নেপাল সেই প্রতিষ্ঠিত মঞ্চে চলা আলোচনার গতিতে খুশি নয়।'
নেপাল আচমকা ওই অঞ্চলগুলোকে নিজেদের বলে দাবি করে, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদ উসকে দিতে চাইছে। এর পিছনে চিনের উসকানি আছে, এমনটাই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। কিন্তু, তার চেয়েও বড় কথা হল- ১৮১৪ থেকে ১৮১৬ সালের মধ্যে অ্যাংলো-নেপালি যুদ্ধের শেষে বা গোর্খা রাজার সঙ্গে ইংরেজদের যুদ্ধের শেষে নেপালের গোর্খা রাজারা ইংরেজদের সঙ্গে সুগৌলি চুক্তি করেছিল। ওই চুক্তি অনুযায়ী, গোর্খা রাজারা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বেশ কিছু অঞ্চল দিয়েছিল। যা ছিল কালি নদীর পূর্ব দিকের জমি।
আরও পড়ুন- কেরলে ভয়ংকর ভাইরাসের হানা, কী এই ওয়েস্ট নাইল ফিভার, বাঁচবেন কীভাবে?
সীমান্ত বিশেষজ্ঞ বুদ্ধি নারায়ণ শ্রেষ্ঠ জানিয়েছেন, ১৮১৯, ১৮২১, ১৮২৭ এবং ১৮৫৬ সালে ব্রিটিশ সার্ভেয়ার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া দ্বারা জারি করা মানচিত্রগুলোয় লিম্পিয়াধুরাতে উৎপন্ন হওয়া কালী নদীকে সীমান্ত হিসেবে দেখানো হয়। পরবর্তী মানচিত্র, ১৮৭৯ সালে প্রকাশিত হয়। সেখানে, স্থানীয় ভাষায় নদীর নাম হিসেবে জানানো হয়- 'কুটি ইয়াংতি'। এমনকী, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা যখন ভারতের শাসন ছেড়ে চলে যায়, তখন সেটাই ছিল নেপাল এবং ভারতের মধ্যবর্তী সীমানা।