চলতি বছরের জুলাইয়ে ভারত অ-বাসমতি সাদা চালের রফতানি নিষিদ্ধ করেছে। মজুত শস্যের হ্রাস, খাদ্যশস্যের দাম বৃদ্ধি আর যথেষ্ট বৃষ্টি না-হওয়ার কারণে সরকার এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। শুক্রবার কৃষক ও কৃষককল্যাণ মন্ত্রক ২০২৩-২৪ সালের জন্য প্রধান খরিফ ফসল কতটা পরিমাণে উৎপাদিত হতে পারে, সেই সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ধানের উৎপাদন হ্রাস সম্পর্কিত সরকারের আশঙ্কা মিথ্যে ছিল না। মন্ত্রকের অনুমান, ২০২৩-২৪ সালে মোট খরিফ মরশুমে উৎপাদিত হবে ১০৬৩.১৩ লক্ষ মেট্রিক টন (এলএমটি) চাল। গত বছর একই সময়ে উৎপাদিত হয়েছিল ১১০৫.১২ লক্ষ মেট্রিক টন (এলএমটি) চাল। সেই হিসেবে এবার চাল উৎপাদনের পরিমাণ গতবারের তুলনায় ৩.৭ শতাংশ কম।
ভারতের বিধিনিষেধ কি বিশ্বে চালের দাম বাড়িয়েছে?
গত ২০ জুলাই ভারত অ-বাসমতি সাদা চাল রফতানি নিষিদ্ধ করার পরপরই, বাজারজুড়ে চালের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। পরবর্তী মাসগুলিতে দাম কমলেও, নিষেধাজ্ঞা জারির আগে চালের দাম যা ছিল, তার চেয়ে এখনও দাম যথেষ্ট বেশি। এই ব্যাপারে আমেরিকান ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচারের ইকোনমিক রিসার্চ সার্ভিসের রাইস আউটলুক জানিয়েছে, 'গত একমাসে, থাইল্যান্ড থেকে পাওয়া বেশিরভাগস্তরের নিয়মিত (পার্বোল্ড বা সুগন্ধি নয়) হোল গ্রেন মিলড চালের বিক্রয় মূল্যের দাম ৫-৬ শতাংশ কমেছে। ১০ অক্টোবর শেষ হওয়া সপ্তাহে, থাইল্যান্ডের ১০০-শতাংশ গ্রেড বি লং-গ্রেন মিলড চাল রফতানির জন্য প্রতিটন চালের দাম স্থির হয়েছিল ৫৯৫ ডলার। যা ১২ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহ থেকে ৩৪ ডলার কম। কিন্তু, জুলাইয়ের শুরু থেকে এই চালের দাম বেড়ে হয় টনপ্রতি ৬০ ডলারেরও বেশি। যাকে ভারতের চাল রফতানির নিষেধাজ্ঞার জের বলেই মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে থাইল্যান্ডের চালের দাম জুলাইয়ের শেষ থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত দ্রুত বেড়েছে। যাকে প্রাথমিকভাবে ভারতের জুলাই মাসে নিয়মিত সাদা চালের রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞার জের বলে মনে করা হচ্ছে।'
আরও পড়ুন- কেরলের সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন হামাসের প্রাক্তন শীর্ষনেতা, কে এই খালেদ মাশাল?
চালের দামে কতটা প্রভাব পড়েছে?
রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার পরও চালের দাম বৃদ্ধি থেকে রেহাই মেলেনি। কৃষি মন্ত্রকের ইউপিএজি পোর্টালে উপলব্ধ তথ্য অনুসারে ২০২৩ সালের ২৪ অক্টোবর, চালের দৈনিক গড় পাইকারি মূল্য হয় কুইন্টালপ্রতি ৫,৮০০ টাকা। যা একমাস আগের তুলনায় ২৭.৪৩ শতাংশ (প্রতি কুইন্টাল ৪,২০৮.৫৭ টাকা) বেশি।