প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সংসদে বলেছেন, 'চিনের সৈন্যরা তাওয়াং সেক্টরের ইয়াংতসে এলাকায় এলএসি লঙ্ঘন করার চেষ্টা করেছিল। একতরফাভাবে সীমান্তের স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিল।' পালটা চিন দাবি করেছে, '৯ ডিসেম্বরের ভোরে চিনা সৈন্যদের ওপরে হামলা হয়েছিল। ডংঝাং এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) পাশে আমাদের নিয়মিত টহল ভারতীয় সৈন্যরা আটকে দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তারা অবৈধভাবে সীমান্তরেখা অতিক্রম করেছিল।'
চিনের দাবি
বেজিং থেকে চিনা সেনার পশ্চিম বিভাগের মুখপাত্র সিনিয়র কর্নেল লং শাওহুয়া বলেন, 'আমাদের সৈন্যদের প্রতিক্রিয়া ছিল পেশাদার। তাঁরা ছিল দৃঢ় এবং যোগ্যতাসম্পন্ন। যার ফলেই পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে। আমরা কঠোরভাবেই ভারতকে সংযত হতে বলছি। তাদের বলছি, প্রথমস্তরের বাহিনীকে সংযত করুন। শান্তি বজায় রাখতে চিনের সঙ্গে কাজ করুন।' চিনের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, 'চীন ও ভারতের মধ্যে বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল।' ২০২০ সালের জুনে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় দুই পক্ষের মধ্যে মারাত্মক সংঘর্ষের আড়াই বছর পরে তাওয়াংয়ের সংঘর্ষ হল।
তাওয়াং, ভারত-চিন সংঘর্ষের স্থান
অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরের ওপরের অংশে ইয়াংটসে নামে একটি এলাকায় দুই পক্ষের সৈন্যদের সংঘর্ষ হয়। শুধু তাওয়াং নয়। প্রকৃতপক্ষে গোটা অরুণাচলই তাদের বলে চিন বরাবরই দাবি করে এসেছে। সামগ্রিক সীমান্ত প্রশ্নে এটি ভারত ও চিনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর বিরোধের অন্যতম। তাওয়াং হল ষষ্ঠ দালাই লামার জন্মস্থান এবং তিব্বতীয় বৌদ্ধদের একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। ১৪তম দালাই লামা ১৯৫৯ সালে তিব্বত থেকে ভারতে আসার আগে তাওয়াং-এ আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারপর, সেখান থেকে চলে আসার আগে বেশ কিছুদিন তাওয়াঙের মঠে ছিলেন।
আরও পড়ুন- ভারত-চিন সংঘর্ষে উত্তপ্ত সীমান্ত, ঠিক কী হয়েছিল? কী জানালেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী?
ভারত-চিনের সমঝোতা
তাওয়াঙের মধ্যে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) নিয়ে ভারত এবং চিনের মধ্যে মোটামুটি সমঝোতা আছে। তার মধ্যে তিনটি জায়গা নিয়ে উভয়পক্ষের বিবাদ অতীতে চললেও, পরে তার মীমাংসা হয়েছে। এর অন্যতম ইয়াংতসে। যা লুংরু চারণভূমির উত্তরে তাওয়াং শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ফলে, এই অঞ্চলে হামেশাই ভারতীয় সেনা ও চিনের সেনার মধ্যে সরাসরি নিয়মিত যোগাযোগ হয়। কিন্তু, এই অঞ্চলের উঁচু দিকটা ভারতীয় সেনার দখলে থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ইয়াংতসের প্রতি চিনের কুনজর রয়েছে।
Read full story in English