সোমবার ভারতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ছাড়িয়েছে। নতুন ৪৫০০-র বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে এদিন। মোট ১০ টি দেশে এখন সংক্রমণ সংখ্যা ভারতের চেয়ে বেশি।
২৪ মার্চ প্রথম লকডাউনের পর থেকে দেশে সংক্রমণ সংখ্যা পৌঁছতে তিন সপ্তাহ দেরি হয়েছে। সে সময়ে যে হারেরোগ ছড়াচ্ছিল, তাতে লকডাউন না হলে এপ্রিলের শেষেই সংখ্যাটা ১ লক্ষে পৌঁছত বলে কম্পিউটার মডেলিং প্রজেকশনে গত মাসের শেষে দেখা গিয়েছিল।
২ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে ০ থেকে ১০০ সংক্রমণে পৌঁছতে ১৪ দিন সময় লেগেছিল, যদি কেরালায় ২০ জানুয়ারি প্রথম তিনটি সংক্রমণের কথা ছেড়ে দেওয়া হয়। পরের ১৪ দিনে অর্থাৎ ২৯ মার্চে সংক্রমণ সংখ্যা পৌঁছয় ১০০০-এ। সেখান থেকে ১০ হাজার পৌঁছতে সময় লাগে ১৫ দিন এবং সেই হারে এপ্রিলের শেষেই সংক্রমণ এক লক্ষে পৌঁছতে পারত, যদি কোনও রকম নিয়ন্ত্রণ না থাকত।
তবে, সেই সময়েই লকডাউনের প্রভাব দেখা যেতে শুরু করে, এবং সংক্রমণ হার কমতে থাকে অনেকটাই। এপ্রিলের শেষে ভারতে সংক্রমিত ছিল ৩৫ হাজার।
লকডাউন জারি করা হয়েছিল এই লক্ষ্যে সামনে রেখেই, যাতে রোগ ছড়ানোর হার কমে এবং কর্তৃপক্ষ ক্রমবর্ধমান রোগীর সংখ্যা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হতে পারে। ১ লক্ষে পৌঁছতে তিন সপ্তাহ দেরি হওয়ার ফলে সে লক্ষ্য পূরণ হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।
কিন্তু লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা যেহেতু ক্রমশ শিথিল হচ্ছে, এবার সংখ্যা ব্যাপক বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে, এবং তার ইঙ্গিতও মিলছে।
৪ মে লকডাউন শিথিল হওয়ার পর আজ পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এটা ব্যাপক স্ফীতি বলে মনে হলেও বৃদ্ধির হার গত কয়েকদিন আগে পর্যন্ত ছিল সামান্য কম। দ্বিগুণত্বের হারের ক্ষেত্রেও দিনের সংখ্যা বেড়েছে। গত দুদিন ধরে বৃদ্ধির হার বেড়েছে এবং দ্বিগুণত্বের হারের দিনসংখ্যাও কমেছে, যদিও দুটি ক্ষেত্রেই তা সামান্য।সোমবার সারা দেশে ৪৭০০-র বেশি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে। যা একদিন আগের প্রথমবার ধরা পড়া ৫০০০ নতুন সংক্রমণের চেয়ে সামান্য কম।
সোমবারের হিসেবে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাট, দিল্লি ও রাজস্থানে দেশের মোট নতুন সংক্রমণের ৭৫ শতাংশের বেশি সংক্রমিত। এই প্রবণতা প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে উঠছে।
তবে বিহার ও ওড়িশার মত রাজ্যেও সংক্রমণে স্ফীতি দেখা দিচ্ছে। বিহারে সোমবার ১৩৯ জনের নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে। গত তিন দিনে রাজ্যে প্রায় ৩০০-র বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা আগের তুলনায় হিসেব করলে ব্যাপক বৃদ্ধি। এখন রাজ্যে দ্বিগুণত্বের হার ৭.৫ দিন, যা জাতীয় দ্বিগুণত্বের হারের (১৩.৬৮ দিন) তুলনায় অনেকটাই দ্রুত।
ওড়িশায় ফেরত আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক সংখ্যক সংক্রমণের কারণে স্ফীতি হচ্ছে। বিহারের মতই এখানেও গত তিনদিনে ৩০০-র বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে এবং তারা এখন দ্রুতবৃদ্ধিকালীন রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে।
তামিলনাড়ু ফের একবার সংক্রমণ সংখ্যায় গুজরাটকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। দেশের সংক্রমণে দ্বিতীয় শীর্ষে এখন দক্ষিণের এই রাজ্য।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন