মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ইতিমধ্যেই দিল্লি পৌঁছেছেন, প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে ‘প্রধান অতিথি’র পদ অলনকৃত করবেন তিনি। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দিল্লি পৌঁছেছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। বিমানবন্দরে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি।
সফরকালে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গেও দেখা করবেন। ২৪-২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারী সফরে পাঁচ মন্ত্রী ও মিশরের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে রয়েছে। আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি নয়াদিল্লিতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্বাগত জানাতে ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্য পরিবেশন করা হয়। উল্লেখ্য এই প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসে মিশরের রাষ্ট্রপতিকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ভারত ও মিশর চলতি বছর কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৭৫তম বছর উদযাপন করছে। ভারত তার G20 সভাপতিত্বে মিশরকে 'অতিথি দেশ' হিসাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুধবার রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে স্বাগত জানানো হবে। তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সহ অন্যান্যদের সঙ্গে দেখা করার পর রাষ্ট্রপতি ভবনে এক বৈঠকে হাজির হবে। একই দিনে তিনি মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থল রাজঘাটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
মিশরের রাষ্ট্রপতি তার এই সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে একটি বৈঠক করবেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক,বৈশ্বিক একাধিক বিষয় উঠে আসবে এই আলোচনায়। সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তার জন্য রাষ্ট্রপতি ভবনে এক নৈশ ভোজের আয়োজন করেছেন। প্রজাতন্ত্র দিবসে্র অনুষ্ঠানে, সিসি (আব্দেল ফাত্তাহ এল-সিসি) প্রধান অতিথি হিসেবে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন। মিশরীয় সেনাবাহিনীর দলও কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে সামিল হবে।
অর্থনৈতিক সংকটে ত্রাতা ভারত, মিশরের হাত ধরে তৈরি হচ্ছে নতুন সম্পর্কের। ভারত ও মিশরের মধ্যে সম্পর্ক গভীর হলেও বর্তমানে পাকিস্তানের মতো এই মুসলিম দেশেরও আর্থিক অবস্থাও তলানিতে ঠেকেছে। মিশরে মুদ্রাস্ফীতির হারও প্রায় পাকিস্তানের সমান। পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতি ২৪.৫ শতাংশে পৌঁছেছে, অন্যদিকে মিশরেও মুদ্রাস্ফীতির হার ২৪ শতাংশের কাছাকাছি।
ভারত মিশরের জন্য 'ত্রাতা' হয়ে উঠতে, উভয় দেশই সম্পর্কের নতুন উচ্চতায় পৌঁছতে পারে। নিরাপত্তা, পরিকাঠামো, আইটি, ফার্মাসিউটিক্যালস, কৃষি, উচ্চ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো অনেক ক্ষেত্রে ভারত ও মিশরের মধ্যে অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হচ্ছে। উভয় দেশই প্রতিরক্ষা এবং কৃষি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর উপর বিশেষ জোর দিয়েছে।
মিশরের সঙ্গে ভারতের ১৯৭৮ সাল থেকেই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারত ও মিশরের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক বছরের কথা বললে, ভারত ও মিশরের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার হয়েছে।মিশর একটি মুসলিম দেশ কিন্তু তারা বরাবরই পাকিস্তানের নীতি ও সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে আসছে। আর এই কারণেই ভারত ও মিশরের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমশই মজবুত হয়েছে।