India Plastic Pollution: বিশ্বে প্লাস্টিক দূষণের শীর্ষে উঠে নজির গড়ল নরেন্দ্র মোদীর ভারত। এমনটাই দাবি করল এক নতুন গবেষণাপত্র। ভারত প্রতিবছর প্রায় ৫.৮ মিলিয়ন টন (mt) প্লাস্টিক পোড়ায়। আরও ৩.৫ মিলিয়ন টন প্লাস্টিককে কণা হিসেবে পরিবেশে (স্থল, বায়ু, জল) ছেড়ে দেয়। সমষ্টিগতভাবে, ভারত বিশ্বে বার্ষিক ৯.৩ মিলিয়ন প্লাস্টিক দূষণে অবদান রাখে। দূষণে ভারতের ঠিক পরেই রয়েছে নাইজেরিয়া (৩.৫ মেট্রিক টন), ইন্দোনেশিয়া (৩.৪ মেট্রিক টন) এবং চিন (২.৮ মেট্রিক টন)।
'অনিয়ন্ত্রিত' বর্জ্যের সমস্যা
লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জোশুয়া ডব্লিউ কটম, এড কুক ও কস্টাস এ ভেলিস দ্বারা পরিচালিত এই সমীক্ষায় অনুমান করা হয়েছে যে প্রতিবছর প্রায় ২৫১ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। যা প্রায় ২০০,০০০ অলিম্পিক আকারের সুইমিং পুল পূরণ করার পক্ষে যথেষ্ট। এই বর্জ্যের প্রায় এক পঞ্চমাংশ— ৫২.১ মিলিয়ন টন (mt) পরিবেশে 'নিঃসৃত' হয়, যা নিয়ন্ত্রণহীন।
গবেষকরা যা জানিয়েছেন
গবেষকরা জানিয়েছেন, 'পরিচালিত' বর্জ্য হল সেগুলো- যা মিউনিসিপ্যাল সংস্থাগুলো সংগ্রহ করে, আর তা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে বা ল্যান্ডফিলে পাঠানো হয়। বেশিরভাগ প্লাস্টিক বর্জ্যই জায়গা ভরাট করতে ব্যবহৃত হয়। 'অনিয়ন্ত্রিত' বর্জ্য বলতে প্লাস্টিকের সেই কণাকে বোঝায়, যা খোলা আকাশের নীচে আগুনে পোড়ানো হয়। এর সূক্ষ্ম কণা কার্বন মনোক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস তৈরি করে। এই গ্যাস হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্রের ব্যাধি, ক্যানসার এবং স্নায়বিক সমস্যা বাড়িয়ে তোলে বলে অভিযোগ। প্লাস্টিকের কণা মাউন্ট এভারেস্ট থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা খাতের (ট্রেঞ্চ) তলদেশ পর্যন্ত পৃথিবীর প্রতিটি স্থানকে দূষিত করে চলেছে।
আরও পড়ুন- চশমা ছাড়াতে বাজারে এল চোখের ড্রপ, জানুন PresVu সম্পর্কে
বিশ্বব্যাপী উত্তর-দক্ষিণ বিভাজন
গবেষণায় একটি প্রবণতা চিহ্নিত করা হয়েছে যে প্লাস্টিক দূষণের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য গ্লোবাল নর্থ এবং গ্লোবাল সাউথ বিভাজন রয়েছে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, 'নিখুঁতভাবে আমরা দেখতে পেয়েছি যে দক্ষিণ এশিয়া, সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে প্লাস্টিক বর্জ্য নির্গমন সবচেয়ে বেশি।' যেসব বর্জ্যের কোনও ব্যবস্থা করা যায়নি, তার মধ্যে, মোটামুটি ৪৩% বা ২২.২ মেট্রিক টন কণার আকারে তাকে। বাকি প্রায় ২৯.৯ মেট্রিক টন হয় ডাম্পসাইটে জমা হয়। অথবা, স্থানীয়ভাবে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
GAIA-এর সায়েন্স অ্যান্ড পলিসির সিনিয়র ডিরেক্টর নিল ট্যাংরি বলেছেন, 'এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে গেলে বিশ্বব্যাপী পরিবেশগত ন্যায়বিচার করা এবং বর্জ্যকে আরও ভালোভাবে পরিচালনা করা জরুরি।' ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অফ কেমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের কাউন্সিল সেক্রেটারি ক্রিস জাহন এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'এই গবেষণা স্পষ্ট করছে যে অসংগৃহীত এবং নিয়ন্ত্রণহীন প্লাস্টিক বর্জ্যই প্লাস্টিক দূষণে সবচেয়ে বড় অবদান রাখে।'