করোনা সংক্রমণে রাশিয়াকে রবিবার রাতে ছাড়িয়ে গেল ভারত। কোভিড-১৯ সংক্রমণের হিসেবে ভারতের আগে এখন শুধু আমেরিকা আর ব্রাজিল। এর আগেই প্রাথমিকভাবে ভারতের বিমান নিজেদের সীমানায় প্রবেশের ব্যাপারে অনিচ্ছা ব্যক্ত করেছে বেশ কিছু দেশ। রবিবার রাতের পর আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণের ব্যাপারে ভারতের পরিকল্পনা ধাক্কা খেতে পারে।
আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরুর ব্যাপারে ভারতের পরিকল্পনা কী?
বর্তমানে কেবলমাত্র প্রত্যর্পণের জন্য ভারতীয় ও অন্যান্য বিমান আন্তর্জাতিক স্তরে চলাচল করছে। কেন্দ্র ইঙ্গিত দিয়েছে বেশ কিছু দেশের সঙ্গে এয়ার ব্রিজ চালানোর ব্যাপারে আলোচনা চলছে। এই দেশগুলির মধ্যে রয়েছে আমেরিকা, কানাডা এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপিয় দেশ। এয়ার ব্রিজ হল সেইসব দেশের মধ্যে বিমান চলাচল করবে, যারা একে অপরের নাগরিকদের নিজেদের সীমান্তে প্রবেশ করতে দেবে।
আরও পড়ুন, পঙ্গপালের উপদ্রব, প্রকোপ ও প্লেগ- এসবের মধ্যে ফারাক কী?
ক্রমাগত সংখ্যাবৃদ্ধির প্রভাব কি অন্তর্দেশীয় বিমান চলাচলেও প্রভাব ফেলতে পারে?
দেশের কিছু অংশে সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের তরফ থেকে মুম্বই, নাগপুর, পুনে, আমেদাবাদ, দিল্লি ও চেন্নাইয়ের মত বিমানবন্দর থেকে বিমান প্রবেশ নিষিদ্ধ করার আবেদন জানানো হয়েছে। অসামরিক বিমান মন্ত্রক এই আবেদনে সাড়া দিয়ে এই বিমানবন্দরগুলি থেকে কলকাতায় বিমান চলাচল ৬-১৯ জুলাই, এই চোদ্দ দিনের জন্য বন্ধ রেখেছে। তেলেঙ্গানা ও কর্নাটকের মত অতি খারাপ পরিস্থিতির রাজ্যগুলিকে নিয়ে উদ্বিগ্ন অন্য রাজ্যগুলিও। রবিবার কর্নাটকে নতুন ১৯২৫ জনের ও তেলেঙ্গানায় সে রাজ্যের রেকর্ড ১৫৯০ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। দেশে করোনায় যত নতুন সংক্রমণ হয়েছে, তার মধ্যে এই রাজ্যগুলি থেকে সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দুই রাজ্যেই এখন সংক্রমিত ২৩ হাজারের বেশি। তেলেঙ্গানায় গত সপ্তাহে ৯৫০০ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, কর্নাটকে ১০ হাজার জনের।
আন্তর্জাতিক স্তরে এয়ার ব্রিজ তৈরিতে সমস্যা কোথায়?
বেশ কিছু দেশ ইতিমধ্যেই এয়ার ব্রিজ বা ট্রাভেল বাবল তৈরি করেছে। এর ভিত্তি হল, সংশ্লিষ্ট দেশগুলি করোনা মোকাবিলায় কতটা সক্ষম তার উপর। যেমন নিউজিল্যান্ড রোগ প্রতিরোধে সম্পূর্ণ সফল এবং তারা অন্য যেসব দেশ অতিমারী মোকাবিলায় সফল হয়েছে, তাদের সঙ্গে ট্রান্স-তাসমানিয়ান এয়ার বাবল তৈরি করেছে। তিনটি বাল্টিক দেশ এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া ও লাটভিয়া নিজেদের মধ্যে এয়ার বাবল তৈরি করেছে এবং এখানে ভ্রমণে প্রায় কোনও নিষেধাজ্ঞাই রাখা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি ও রাশিয়াকে সংখ্যার দিক থেকে টপকে যাওয়ার ফলে সরকারের এয়ার ব্রিজ তৈরির চেষ্টা ধাক্কা খেতে পারে।
যেসব দেশ ভ্রমণে শিথিলতা আরোপ শুরু করেছে তারা ভারত নিয়ে কী ভাবছে?
কিছু দেশ ভ্রমণের জন্য সীমান্ত খুলে দিলেও তারা ভারত, আমেরিকা ও ব্রাজিলের মত অতি গুরুতর দেশগুলিকে বাদ রেখেছে। ইউরোপিয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ নিয়ে তৈরি একটি গোষ্ঠী তাদের প্রাথমিক নিরাপদ তালিকায় গত সপ্তাহে ১৪টি দেশের নাম রেখেছে। সে গেশগুলির যাত্রীরা জরুরি ছাড়া অন্য কাদেও এই দেশগুলিকে ভ্রমণ করতে পারবেন। এই তালিকা প্রতি দু সপ্তাহে পর্যালোচনা করা হবে। এ ছাড়া ব্রিটেন সরকার ৫৯টি দেশের সঙ্গে ট্রাভেল করিডোর তৈরি করেছে, যেখান থেকে যাত্রীরা ১০ জুলাই পরবর্তী সময়কাল থেকে নিজেদের আইসোলেট করার শর্ত বিহীনভাবে সে দেশে যেতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে ব্রিটেন ভ্রমণের আগের ১৪ দিনের মধ্যে তালিকা বহির্ভূত দেশে ভ্রমণের ইতিহাস থাকা চলবে না। ব্রিটেনের নিরাপদ দেশের তালিকায় ভারতের নাম নেই।