বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দুই দিনের প্যারিস সফর শুরু হয়েছিল। তারমধ্যে প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ কাউন্সিল (ডিএসি) নৌবাহিনীর জন্য তিনটি স্কোর্পেন সাবমেরিন-সহ ২৬টি রাফালে মেরিন ফাইটার জেট বিমান কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছে। প্রতিরক্ষা খাতে বড় ধরনের লেনদেনের জন্য ডিএসির অনুমোদন লাগে। এই কাউন্সিলের নেতৃত্বে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই কমিটির সিদ্ধান্ত মোদীর প্যারিস সফরে রাফালে এম বিমান কেনার ব্যাপারে একটি সম্ভাব্য ঘোষণার পথ প্রশস্ত করেছে। যদিও ডিএসি ২৬টি ফাইটার জেট বিমান কেনার প্রয়োজনীয়তার স্বীকৃতি (এওএন) মঞ্জুর করেছে (যা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কেনার প্রথম ধাপ), মূল্য এবং ক্রয়ের অন্যান্য শর্তাবলী পরবর্তীতে ফরাসি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই স্থির করা হবে। কারণ, তা আন্তঃসরকারি চুক্তি (আইজিএ) অনুযায়ী কেনা হবে।
রাফালে জেট এবং তাদের নৌ সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
রাফালে সামুদ্রিক যুদ্ধবিমানগুলো রাফালে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে রাখা যুদ্ধবিমানগুলোর বিকল্প। যার মধ্যে ৩৬টি বিমান ভারতীয় বিমানবাহিনী দ্বারা পরিচালিত হয়। ফ্রান্সের দাঁসো এভিয়েশন দ্বারা তৈরি, রাফালে হল উন্নত টুইন ইঞ্জিন, মাল্টিরোল ফাইটার জেট। যা আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত। এর মধ্যে রয়েছে মেটিওর-বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল, হ্যামার এয়ার থেকে সারফেস স্মার্ট অস্ত্র সিস্টেম, স্কাল্প ক্রুজ মিসাইল, যা লাগানো রয়েছে অত্যাধুনিক সেন্সর এবং রাডারের সঙ্গে। এর ফলে ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ, লক্ষ্যবস্তুর চিহ্নিতকরণ, লক্ষ্যবস্তুর ওপর আক্রমণ করতে সুবিধা হয়। রাফালে জেটগুলো সাধারণভাবে উচ্চ পেলোড বহন করতে পারে।
ভারতের উপযোগী করে তৈরি
জেটগুলোকে নির্দিষ্টভাবে ভারতের পরিবেশের উপযোগী করে সাজানো হয়েছে। যাতে বিভিন্ন অভিযান চালাতে কোনও অসুবিধা না-হয়। জেটগুলোর নৌ সংস্করণ কিছুটা আলাদা হবে। কারণ এই সব বিমান সমুদ্রে জাহাজবাহী বিমান হিসেবে কাজ করবে। সাধারণ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে এর পার্থক্য হল- ভাঁজযোগ্য ডানা, ক্যারিয়ারে অবতরণের জন্য একটি লম্বা এয়ারফ্রেম এবং অবতরণ করার পর ক্যারিয়ারে আটকে থাকার জন্য একটি টেইল হুক।
আরও পড়ুন-পরমাণু বোমার জনক জে রবার্ট ওপেনহাইমার, যিনি শান্তি খুঁজে পেয়েছিলেন গীতায়!
এতে রয়েছে নির্দিষ্ট প্রযুক্তি
ফরাসি সংস্থা সাফরানের মতে, রাফালের নৌ সংস্করণে বিমানের সামনের অংশ এবং প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ারগুলোকে শক্তিশালী করা হয়েছে। যাতে বিমানের জন্য অবতরণে কোনও সমস্যা তৈরি না-হয়। উপরন্তু এতে আছে 'জাম্প স্ট্রুট প্রযুক্তি'। যা হামলার সময় নির্দিষ্ট কোণ বলে দিয়ে হামলা চালাতে বিমানকে সাহায্য করে। রাফালে যুদ্ধবিমানের এই নৌ সংস্করণ জাহাজ-বিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র, আকাশ থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র এবং সামুদ্রিক অভিযানের জন্য রাডার-সহ বিস্তৃত পরিসরের অস্ত্র বহন করতে পারে।