India love affair with bhang: অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ডন সিনেমার গানের সেই বিখ্যাত লাইন, 'আরে ভাং কা রঙ্গ, জমা হো চকাচক, ফির লো পান চাবায়। আরে এ্যায়সা ঝটকা লাগে জিয়া পে, পুনর জনম হোই জায়' আজও অনেকেই ভোলেননি। এই গানের লাইনে যে ভাং-এর কথা বলা আছে, সেই ভাং, হোলি আর প্রেম ভারতীয় ঐতিহ্যে মিলেমিশে একাকার।
কয়েক হাজার বছরের ঐতিহ্য
কিছু নথি বলছে, ভারতে ভাং হাজার হাজার বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। এমনকী, বেদের মতো প্রাচীন গ্রন্থেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদ অনুযায়ী আবার ভাং শুধুমাত্র শারীরিক অসুস্থতাই নয়, উদ্বেগ নিরাময়েও কাজ করে। নেশাখোরদের কাছে আবার ভাং, 'ঈশ্বরের উপহার', 'সুখের উৎস'। কারও কাছে আবার, 'মুক্তিদাতা'। তবে, যে যেই চোখেই দেখুন না কেন, ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ধর্মের সঙ্গে ভাং ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
সাংস্কৃতিক তাৎপর্য
ব্রিটিশরা যখন এদেশে উপনিবেশ স্থাপন করল, তখন ভারতে ভাং-এর ব্যাপক ব্যবহার তাঁদেরকেও হতবাক করে দিয়েছিল। ১৯ শতকের শেষের দিকে ব্রিটিশরা ভাং-এর প্রভাব এবং তার সাংস্কৃতিক তাত্পর্য নিয়ে লেখাপড়া পর্যন্ত শুরু করে দিয়েছিলেন। এটা বিবিসির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, 'এই ভেজকে এতই পবিত্র হিসেবে দেখা হয়। আর, তা ব্যবহার করে লোকজন এতই সন্তুষ্ট হন যে, এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করলে বা ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করলে তা গণবিক্ষোভের কারণ হবে, দুর্ভোগ বাড়াবে। লোকজন অস্বস্তিতে পড়বেন।'
আরও পড়ুন- শুধু নেশা করায়? গাঁজার যা গুণ, শুনলে রীতিমতো চমকে উঠবেন
সমুদ্রমন্থন থেকে গাঁজা
ভূগোলবিদ বার্নি ওয়ার্ফ তাঁর গবেষণাপত্র ‘হাই পয়েন্টস: অ্যান হিস্টোরিক্যাল জিওগ্রাফি অফ ক্যানাবিস’-এ লিখেছেন যে, গাঁজা গাছের অংশ ব্যবহার করে ভাং তৈরি হয়। যার নেশা দীর্ঘকাল ধরেই ভারতে প্রচলিত। দেবতা শিবের সম্মানে বিয়ে এবং উৎসবেও তা খাওয়ার চল আছে। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, দেবতারা অমৃতের সন্ধানের সময় সমুদ্র মন্থন করার পরে গাঁজার খোঁজ পান। তাঁরা মনে করতেন, গাঁজা তাঁদের অমর করে তুলবে। তাঁদের শক্তি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করবে। মন্থনের প্রক্রিয়া চলাকালীন, অমৃতের একটি ফোঁটা (পবিত্র অমৃত) আকাশ থেকে পড়ে এবং যেখানে পড়ে, সেখান থেকেই প্রথম গাঁজা গাছটি অঙ্কুরিত হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে শিব, যিনি সমুদ্র মন্থনের সময় উঠে আসা বিষপান করেছিলেন, তিনি বিষের প্রভাব থেকে তাঁর গলাকে রক্ষা করার জন্য গাঁজা খেতেন।