India-Myanmar Border: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শনিবার (২০ জানুয়ারি) ঘোষণা করেছেন যে কেন্দ্রীয় সরকার অবাধ চলাচল বন্ধ করতে পুরো ভারত-মায়ানমার সীমান্ত কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ১,৬৪৩ কিলোমিটারের একটি বেড়াহীন সীমান্ত আছে। যা মণিপুর, মিজোরাম, অসম, নাগাল্যান্ড এবং অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে।
- ভিসা ছাড়াই অন্য দেশের অভ্যন্তরে ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণের অনুমতি দেয়।
- এফএমআর ২০১৭ সালেই লাগু করার কথা ছিল।
- এটি ২০১৮ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকারের অ্যাক্ট-ইস্ট নীতির অংশ হিসেবে লাগু হয়েছিল।
অমিত শাহ জানিয়েছেন
শাহ গুয়াহাটিতে বলেছেন, 'মায়ানমারের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত একটি খোলা সীমান্ত। নরেন্দ্র মোদী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ভারত-মায়ানমার সীমান্ত নিরাপদ থাকবে। পুরো সীমান্তে বাংলাদেশের সীমান্তের মত কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে। ভারত সরকার, মায়ানমারের সঙ্গে ফ্রি মুভমেন্ট রেজিম (FMR/এফএমআর) চুক্তি পুনর্বিবেচনা করছে। আর, আসা-যাওয়ার এই স্বাচ্ছন্দ্যের অবসান ঘটাতে চলেছে।' এফএমআর চুক্তিটি ২০১৮ সালে বাস্তবায়িত হয়েছিল। মণিপুরে মেইতিস এবং কুকিদের মধ্যে চলমান সংঘাতের জেরে গত বছর এই চুক্তি প্রত্যাহারের ব্যাপারে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন- ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, মালদ্বীপের চেয়ে লাক্ষাদ্বীপ কেন ভালো?
এফএমআর কী?
এফএমআর হল দুটি দেশের মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্মত ব্যবস্থা। যা উভয় পাশের সীমান্তে বসবাসকারী উপজাতিদের ভিসা ছাড়াই অন্য দেশের অভ্যন্তরে ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণের অনুমতি দেয়। এটি ২০১৮ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকারের অ্যাক্ট-ইস্ট নীতির অংশ হিসেবে লাগু হয়েছিল। ঠিক সেই সময়ে, যখন ভারত এবং মায়ানমারের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্রমশ উন্নতির দিকে যাচ্ছিল। আসলে, এফএমআর ২০১৭ সালেই লাগু করার কথা ছিল। কিন্তু, আগস্টে উদ্ভূত রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের কারণে তা পিছিয়ে যায়।
আরও পড়ুন- রামজন্মভূমি আন্দোলন কংগ্রেস ছাড়া অসম্পূর্ণ, গুরুত্ব পায়নি নেহরুর মতামতও
ভারত-মায়ানমার সীমান্ত
ভারত এবং মায়ানমারের মধ্যে সীমান্ত ১৮২৬ সালে ব্রিটিশরা এই অঞ্চলে বসবাসকারী জনগণের মতামত না-নিয়েই নির্ধারণ করেছিল। এই সীমান্তের মাধ্যমে কার্যকরভাবে একই জাতি ও সংস্কৃতির মানুষকে তাঁদের সম্মতি ছাড়াই দুটি দেশে বিভক্ত করেছে ব্রিটিশরা। বর্তমান ভারত-মায়ানমার সীমান্ত ব্রিটিশদের আঁকা রেখাকেই প্রতিফলিত করে। সীমান্তের ওপার আর এপারের অঞ্চলের মানুষের মধ্যে দৃঢ় জাতিগত এবং পারিবারিক বন্ধন আছে। মণিপুরের মোরেহ অঞ্চলে এমন গ্রাম রয়েছে, যেখানকার বাসিন্দাদের কিছু বাড়ি আছে মায়ানমারে। আবার, নাগাল্যান্ডের মোন জেলা সীমান্তটি আসলে লংওয়া গ্রামের প্রধানের বাড়ির মধ্যে দিয়ে গেছে। তাঁর বাড়িটিকে দুই ভাগে ভাগ করেছে।
আরও পড়ুন- শুধু ভারত না! প্রাচীনকালে রামায়ণ ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে
এমএমআরের প্রয়োজন
এমএমআর, স্থানীয় বাণিজ্য এবং ব্যবসায় উদ্দীপনা ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সীমান্ত হাটের মাধ্যমে এই অঞ্চলের আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। নিম্ন আয়ের অর্থনীতির পরিপ্রেক্ষিতে, স্থানীয় জীবিকা নির্বাহের জন্য এই ধরনের বিনিময় অত্যাবশ্যক বলেই বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছিলেন। মায়ানমারের সীমান্তবাসীদের জন্যও, তাদের দেশের চেয়ে ভারতীয় শহরগুলোই ব্যবসা, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার কেন্দ্র হিসেবে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে।