সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সংস্থা টুইটারকে জড়িয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনলেন এক সমাজকর্মী। টুইটারেরই প্রাক্তন আধিকারিক ওই সমাজকর্মীর অভিযোগ, ভারত সরকার এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সংস্থাকে কর্মী নিয়োগে বাধ্য করেছে। এই সব কর্মীরা সরকারের এজেন্ট হিসেবে টুইটারে কাজ করছেন।
তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটিতে নথিবদ্ধ বিভিন্ন ব্যক্তির তথ্য দেখা, পরীক্ষার অনুমতি পেয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে এই অভিযোগ করেছেন ওই সমাজকর্মী। এই অভিযোগ এমন একটা সময়ে উঠল যখন টুইটার তার অধিকার নিয়ে ভারত সরকারের ইলেকট্রনিক্স এবং আইটি মন্ত্রকের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে জড়িত।
ওই সমাজকর্মীর অভিযোগটা কী?
অভিযোগকারীর নাম পিটার মুজ জাটকো। তিনি টুইটারের প্রাক্তন নিরাপত্তা প্রধান। মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে তিনি অভিযোগটি জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ হল, টুইটার নিজে বেতন দিয়ে ভারত সরকারের এজেন্টকে কাজে বহাল করেছে। আর, সেটা করেছে মোদী সরকারের চাপে। এই কথা টুইটার তার ব্যবহারকারীদের কাছে গোপন করে গেছে। এর ফলে ওই এজেন্ট বা এজেন্টরা টুইটারের সিস্টেম এবং ডেটা সরাসরি ব্যবহার করছেন। ব্যবহারকারীদের যাবতীয় গোপন নথিতে নজরদারি করছেন।
কে এই সরকারি এজেন্ট?
কে এই সরকারি এজেন্ট, তা জাটকো প্রকাশ করেননি। শুধু জানিয়েছেন, সেটা তিনি মার্কিন গোয়েন্দাদেরকে জানিয়েছেন। এমনিতে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় সরকার (MeitY) ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি আইন, ২০২১ জারি করেছে। এই আইনে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে নোডাল অফিসার নিয়োগে বাধ্য করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- অনুব্রতর জামিনের আবেদন খারিজ, ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠাল আদালত
এই নোডাল অফিসারদের কাজ ছিল, তাঁরা তদন্তে সহায়তা করবেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলবেন। এর পাশাপাশি কোম্পানিগুলোকে একজন কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল, যাঁরা নিয়ম মেনে চলা নিশ্চিত করবেন। আর একজন অভিযোগকারী অফিসার নিয়োগ করতেও বাধ্য করা হয়েছিল, যিনি ব্যবহারকারীর অভিযোগের সমাধান করবেন। জাটকো যাঁকে সরকারি এজেন্ট বলছেন, তার সঙ্গে এই নোডাল অফিসার নিয়োগের কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তা-ও অবশ্য তিনি স্পষ্ট করেননি।
জাটকোর অভিযোগের জবাবে টুইটার কী জানিয়েছে?
টুইটারের মুখপাত্র বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ঠিকমতো নেতৃত্ব দিতে না-পারা এবং দুর্বল কর্মক্ষমতার জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারিতে জাটকোকে তাঁর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। বিবৃতিতে টুইটার জানিয়েছে, 'আমরা এখন পর্যন্ত দেখেছি যে টুইটার এবং তার গোপনীয়তা এবং তথ্য সুরক্ষা নিয়ে মিথ্যা, অসঙ্গতিপূর্ণ অভিযোগ জাটকো করেছেন। তিনি একজন সুবিধাবাদী। টুইটারের গ্রাহক এবং শেয়ার হোল্ডারদের মনোযোগ আকর্ষণ এবং সংস্থার ক্ষতি করার জন্যই তিনি এসব করেছেন। নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তাকে টুইটার বরাবরই অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং দেবে।'
Read full story in English