বিশাখাপত্তনম শ্রেণি ভারতীয় নৌবাহিনীর সবচেয়ে উন্নত জাহাজগুলোর অন্যতম। (ছবি X.com এর মাধ্যমে)
দেশের নৌবাহিনীতে মঙ্গলবারই (২৬ ডিসেম্বর) জুড়ল আইএনএস ইম্ফল। মঙ্গলবার মুম্বইয়ের নৌ-বন্দরে এই স্টিলথ-গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার মোতায়েন হল। উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল আরকে হরিকুমার। নৌসেনা প্রধান বলেন, 'এই প্রথম ভারতের উত্তর-পূর্বের কোনও শহরের নামে একটি যুদ্ধজাহাজের নামকরণ হল।' মঙ্গলবার মোতায়েন হলেও ২০ অক্টোবর এই জাহাজ ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে এসেছে। আইএনএস ইম্ফল, প্রজেক্ট ১৫বি-এর চারটি যুদ্ধজাহাজের মধ্যে তৃতীয়। এই প্রকল্পে বিশাখাপত্তনম শ্রেণির স্টিলথ-গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার তৈরি হয়েছে। এই জাহাজের আধুনিকতা, প্রযুক্তি, অস্ত্রশস্ত্র ভারতীয় নৌবাহিনীর সম্পদ।
Advertisment
প্রকল্প ১৫বি কী? ২০১৪ এবং ২০১৬-এর মধ্যে, ভারতীয় নৌবাহিনী কোড '১৫এ' নামে একটি প্রকল্পের অধীনে কলকাতা শ্রেণির তিনটি গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার অন্তর্ভুক্ত করেছিল। যে যুদ্ধজাহাজগুলোর নাম ছিল- আইএনএস কলকাতা, আইএনএস কোচি এবং আইএনএস চেন্নাই। এই জাহাজগুলো তাদের পূর্ববর্তী দিল্লি শ্রেণির জাহাজগুলোর থেকে একধাপ এগিয়ে ছিল। দিল্লি শ্রেণির জাহাজগুলোর মধ্যে ছিল, আইএনএস দিল্লি, আইএনএস মাইসোর এবং আইএনএস মুম্বই। যা প্রকল্প ১৫-এর অধীনে নির্মিত হয়েছিল এবং ১৯৯৭ এবং ২০০১ সালের মধ্যে চালু হয়েছিল। একটি জাহাজের শ্রেণি বলতে, তার একইরকম ভার, ব্যবহারিক ক্ষমতা এবং অস্ত্র-সহ নির্মিত বোঝায়। মাজাগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড (এমডিএসএল) হল একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা (পিএসইউ)। এই সংস্থাই দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সমস্ত জাহাজ তৈরি করেছে।
প্রকল্প ১৫বি চুক্তি কলকাতা ক্লাস গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ারের উন্নত রূপগুলো তৈরির জন্য, কোড '১৫বি' নামে এক প্রকল্পের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১১ সালের জানুয়ারিতে। প্রকল্প ১৫বি-এর অধীনে প্রধান জাহাজ আইএনএস বিশাখাপত্তনম কমিশনড করা হয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বরে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় জাহাজ আইএনএস মার্মাগাঁও যুক্ত হয়েছিল নৌবাহিনীতে। এবার ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে যুক্ত হল তৃতীয় জাহাজ আইএনএস ইম্ফল। চতুর্থ জাহাজটি যুক্ত হওয়ার কথা আগামী বছর। যার নাম হবে আইএনএস সুরাত। তা তৈরির কাজ গত বছরের মে মাসেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এর নকশা করেছে নৌবাহিনীর ওয়ারশিপ ডিজাইন ব্যুরো।
VIDEO | "I wish all the best to the crew of INS Imphal. The Imphal is also very significant, this is for the first time that we are naming a major warship after a city in the northeast of Bharat. We have a community of about 400 personnel from Manipur and it just symbolises the… pic.twitter.com/Xq73RNLGEB
আইএনএস ইম্ফলের বৈশিষ্ট্য এই জাহাজের গতি ঘণ্টায় ৫৬ কিলোমিটার। টানা ৪৫ দিন সমুদ্রে ভেসে থাকতে পারবে। এতে ৩২টি বারাক মিসাইল, ১৬টি ব্রহ্মোস অ্যান্টি শিপ মিসাইল, চারটি টর্পেডো টিউব, দুটি অ্যান্টি সাবমেরিন রকেট লঞ্চার, সাত ধরনের বন্দুক আছে। নিউক্লিয়ার, বায়োলজিক্যাল, কেমিক্যাল যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও জাহাজটি অক্ষত থাকতে পারবে। জাহাজটিতে একটি হেলিকপ্টারও আছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে আইএনএস ইম্ফল, উত্তর-পূর্বের একটি শহরের নামে নামকরণ করা হয়েছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বাধীন আইএনএ, ১৯৪৪ সালের ১৪ এপ্রিল মণিপুরের মইরাং-এ পতাকা উত্তোলন করেছিল। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে মণিপুরের ত্যাগ ও অবদানের জন্যই এভাবে শ্রদ্ধা জানানো হল।'