Interim Union Budget: নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আসন্ন আর্থিক বছরের (২০২৪-২৫) কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করবেন। যেহেতু এটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট, জুলাই মাসে নতুন সরকার সাধারণ নির্বাচনের পরে একটি পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবে। বাজেট বক্তৃতাকে প্রতিবারই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। সরকার এই বক্তৃতায় তার সাফল্য তুলে ধরে। বিরোধীরা করেন ব্যর্থতার অভিযোগ। তবে, দেশের আর্থিক নীতি এই বক্তৃতায় কার্যত স্পষ্ট হয়ে যায়। কে কতটুকু সঠিক কীভাবে বুঝবেন? আসলে কোনও বাজেটের সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করা একটা লেখার মাধ্যমে সম্ভব নয়। তাহলে কীসের ওপর নজর রাখবেন?
- বাজেটেই পরিষ্কার হয়ে যায় দেশের আর্থিক ছবি।
- এবার অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ হচ্ছে।
- এবছর লোকসভা নির্বাচন। যার মাধ্যমে ঠিক হবে, সরকারে কে বসবে।
১) টাকা কোথা থেকে আসে এবং কোথায় যায়?
প্রতি বছরের বাজেট দুটি পাই চার্ট দেয়। তার মধ্যে একনম্বর পাই চার্ট, সরকারের আয় করা প্রতিটি টাকার উৎস-ভিত্তিক ব্রেক-আপ সামনে আনে। দ্বিতীয় পাই চার্টে থাকে বিশদ বিবরণ। যেখানে প্রতিটি টাকা কোথায় ব্যয় করা হয়েছে, তা বোঝানো হয়। এই চার্টগুলো, ব্যয় করা অর্থের নিখুঁত পরিমাণ শুধু বলে না। পরিবর্তে, তার আনুপাতিক ভাগকেও সামনে আনে। এর মাধ্যমে সরকারের আর্থিক স্বাস্থ্য স্পষ্ট হয়। আগের বছরের সঙ্গে বর্তমান বছরের পাই চার্ট যদি মিলিয়ে দেখেন, তাহলে আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে, সরকারের আর্থিক স্বাস্থ্য ঠিক কেমন।
সংস্থা থেকে আদায় করের পরিমাণ কমেছে
মোদী সরকার ২০১৪ সাল থেকে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে। পরিসংখ্যান বলছে, আগের টার্মে মোদী সরকার ২০১৬-১৭ সালে, সরকারের মোট আয়ের মাত্র ২১ শতাংশের জন্য ঋণ গ্রহণ করেছে। অর্থাৎ, গত কয়েক বছরে সরকারের ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমেছে। কারণ, ২০১৫-১৬ সালে, মোদী সরকার মোট আয়ের ২৪ শতাংশের জন্য ঋণ করেছিল। একইভাবে,
কোম্পানি থেকে আদায় করা করের পরিমাণ কমেছে-
২০১৫-১৬ সালে ছিল মোট আয়ের ২০%-এরও বেশি।
২০১৬-১৭ সালে ছিল মোট আয়ের ১৯%।
২০২৩-২৪ সালে ছিল মোট আয়ের মাত্র ১৫%।
প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় কমেছে-
২০১৭ অর্থবর্ষে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়, প্রতিটি রুপি প্রতি ছিল ১০ পয়সা।
২০২৪ অর্থবর্ষে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়, রুপি প্রতি কমে হয়েছে ৮ পয়সা।
ভর্তুকিও কমিয়েছে মোদী সরকার-
২০১৭ অর্থবর্ষে প্রতিটি রুপি থেকে ১০ পয়সা বিভিন্ন ধরনের ভর্তুকির পিছনে খরচ হয়েছিল।
২০২৪ অর্থবর্ষে প্রতিটি রুপি থেকে ৭ পয়সা বিভিন্ন ধরনের ভর্তুকির পিছনে খরচ হয়েছে।
২) নামমাত্র বৃদ্ধি বনাম বাস্তব বৃদ্ধি
বাজেটে প্রচুর সংখ্যা এবং শতাংশের উল্লেখ থাকে। তাতে অনেক সময়ই শ্রোতাদের সব গুলিয়ে যায়। তা হল, নামমাত্র এবং বাস্তব পরিবর্তনের পার্থক্য হল মুদ্রাস্ফীতি। যেমন, ইনক্রিমেন্টের মাধ্যমে বেতন বৃদ্ধি। কারও বেতন যদি ৩০ হাজার টাকা করা হয়, তাহলে তার বর্তমানে যা ক্রয়ক্ষমতা হবে, ১০ বছর আগের বিচারে তার পরিমাণ অনেক কম। কারণ, গত ১০ বছর মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি হয়েছে। সেভাবেই একটি বিভাগে বাজেট বরাদ্দ যদি ৭ শতাংশ বাড়ানো হয়, সেটা বর্তমান সময়ের বিচারে যথেষ্ট না-ও হতে পারে। সেটা এমনিতে প্রথমে বোঝাও যায় না। বিভিন্ন তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হয়, এই বরাদ্দ বৃদ্ধি আদৌ যথেষ্ট কি না।
আরও পড়ুন- বিরোধীদের চোখে এখন, নীতীশ ‘আয়া রাম, গ্যয়া রাম’! কোথা থেকে এল এই শব্দ?
রাজকোষ ঘাটতি আর জিডিপি
বাজেটে রাজকোষ ঘাটতি জিডিপির ওপর নির্ভরশীল। বেশি জিডিপি হলে সরকার বেশি ঋণ নিতে পারবে। তাতে রাজকোষের বা সরকারি তহবিলের ঘাটতি কমবে। আর, কম জিডিপি হলে সরকার কম ঋণ পাবে। তাতে রাজকোষের ঘাটতি বা সরকারি তহবিলের ঘাটতিও বাড়বে। এর ফলে, সরকারের ব্যয় করা বা বরাদ্দ করা অর্থের পরিমাণও কমবে।