রেলের ট্র্যাক বদলের জন্যই করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে। রবিবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ট্র্যাক বদলের ফলে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ঢুকে পড়েছিল মালগাড়ির লাইনে। মালগাড়ির পিছনে গিয়ে সজোরে ধাক্কা মারে। তার জেরেই ২৭৫টি মৃত্যুর সাক্ষী হল বালাসোর। সেই সময় মন্ত্রী বলেছিলেন, 'যেই করুক, এই কাজটা সে করেছে। যান্ত্রিকভাবে রেলপথ পরিবর্তন করা হয়েছিল। তার ফলে এই বেদনাদায়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে, কোনও স্বাধীন সংস্থা তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার পর আমি যা বলার সেটা বলব।'
মন্ত্রীর বক্তব্যের ভিত্তি
রেলপথ পরিবর্তন নিয়ে মন্ত্রীর একথা বলার কারণ, রেলের চলাচলে ইলেকট্রিক পয়েন্ট মেশিনের একটা বিরাট গুরুত্ব আছে। এর দ্বারাই ইন্টারলকিং সিস্টেম পরিচালিত হয়। ট্রেনের নিরাপদে চলাচল এই মেশিনের ওপর নির্ভর করে। পয়েন্ট মেশিনের গোলযোগ ঘটলে ট্রেনের চলাচলে প্রভাব পড়ে। এই মেশিনের ব্যবহারে কোনওরকম গোলযোগ হলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। যেমনটা ঘটেছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রে।
রেলে ইন্টারলকিং সিস্টেমের গুরুত্ব
রেলের সিগনালিং ব্যবস্থায় ইন্টারলকিং সিস্টেম একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ট্রেনগুলোর যাতে একের অপরের সঙ্গে সংঘর্ষ না-হয়, দুর্ঘটনা যাতে না-ঘটে, সেটাই নিশ্চিত করে ইন্টারলকিং সিস্টেম। এই সিস্টেমের তিনটি অংশ। একটি হল পয়েন্ট, দ্বিতীয় হল ট্র্যাক অকুপেন্সি সেন্সিং ডিভাইস। আর, তৃতীয়টি হল সিগনাল। ইন্টারলকিং সিস্টেম এই তিনটি অংশের সমন্বয় ঘটায়। আর, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখে। ইন্টারলকিং সিস্টেমের এই তিনটি অংশের কাজগুলোও বিভিন্ন।
আরও পড়ুন- বালাসোর ট্রেন দুর্ঘটনার দায় কার, কীভাবে তৈরি হল এই ভয়াবহ পরিস্থিতি?
কার, কী কাজ
সিগনাল- কখনও সবুজ, কখনও বা হলুদ, কখনও বা লাল। সিগনাল এভাবেই বদলায়। এই সিগনাল রেলপথের পাশে থাকে। ট্রেন ছাড়বে কি না, তা সিগনাল ঠিক করে দেয়। ট্র্যাক- ট্র্যাক অকুপেন্সি সেন্সিং ডিভাইস হল ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট। যা রেলপথে ট্রেনের উপস্থিতি নিশ্চিত করে। পয়েন্ট- ট্রেন ট্র্যাক বদলাবে কি না, তা এই পয়েন্টের মাধ্যমে স্থির হয়। পয়েন্ট যতক্ষণ না অনুমতি দিচ্ছে, ততক্ষণ ট্রেনের ট্র্যাক বদল হয় না।