কোভিড-১৯ ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত এখনও কমেনি। বিশ্বজুড়েই দাপট বজায় রেখেছে এই জীবাণু। কিন্তু কাজ তো থেমে থাকছে না। ভারতে আটকে পড়া বিদেশি হোক, কিংবা কর্মসূত্রে বাইরে থাকা ভারতীয়রা হোক করোনা আবহে উড়ানযাত্রা বন্ধ হওয়ায় নাজেহাল হতে হয়েছে সকলকেই। লকডাউনের চার মাস অতিক্রান্ত। কিন্তু পরিস্থিতিতে কি বদল এসেছে? উড়ান পরিষেবা বলছে 'আসেনি'। ভারত থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে অস্থায়ী উড়ান পরিষেবা শুরু হলেও টিকিট থেকে অভিবাসন নিয়মের ফাঁসে কালঘাম ছুটছে যাত্রীদের।
কারা এই বিশেষ বিমানে যাতায়াতের সুযোগ পাচ্ছেন?
অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের তরফে যে নিয়ম জারি হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানে যাত্রা করতে হলে ভারতীয় নাগরিকদের বিদেশে যাত্রা করতে পারবে সেই অনুমতিপত্র থাকতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যে নির্দেশিকা রয়েছে সেই মোতাবেক অনুমতি নিতে হবে। আর যেসকল মার্কিনী চান এই মুহুর্তে দেশে ফিরতে তাঁদের থাকতে হবে মার্কিন মুলুকের নাগরিকত্বের প্রমাণ এবং বৈধ ভিসা। ইউরোপের দেশগুলির ক্ষেত্রে কেবল ফ্রান্স এবং জার্মানি থেকে যারা এসেছেন ভারতে এবং লকডাউনে আটকা পড়ে গিয়েছেন এই সব বিশেষ বিমানে কেবল তাঁরাই ফিরতে পারবেন।
আরও পড়ুন, ভাইরাসে ‘করোনা’ নেই! বিশ্বকে অবাক করে নয়া রূপ নিল কোভিড
আদৌ কি সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে?
অসামরিক পরিবহন মন্ত্রকের তরফে যে পরিবহণ 'নিয়ম' প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে বলা আছে, "কোনও রিজার্ভেশন করার আগে যাত্রীদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে তাঁদের কাছে অন্য দেশে যাওয়ার অনুমতিপত্র বা পারমিট আছে।।" এই নিয়ম বলবৎ হওয়ার ফলে মাল্টিভিসা থাকা সত্ত্বেও বিপাকে পড়ছেন ভারতীয়রা। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রে একটি ভিসাতেই ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলিতে ভ্রমণের অনুমতি পাওয়া যায়। কিন্তু কোভিড আবহে ভারতীয়দের পারমিট দিতে নারাজ বহু দেশ। যদিও জুলায়ের ১ তারিখ থেকে ইউরোপের ১৫টি দেশে নিয়মের ফাঁস কিছুটা আলগা করা হয়েছে। তবে ভারতের ক্ষেত্রে এখনও জারি রয়েছে সেই বজ্রআঁটুনি।
কবে থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা স্বাভাবিক হতে পারে?
অসামরিক উড়ান পরিবহন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি জানিয়েছেন নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়। দেশে প্রতিদিন রেকর্ড তৈরি করছে করোনা। ভাইরাসের গতি যত নিম্মমুখী হবে ততই নিয়মের ফাঁস আলগা করা সম্ভব হবে, সেই মতোই নেওয়া হবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত, এমনটাই জানিয়েছেন মন্ত্রী। এও বলা হয়, প্রাথমিক সময়ে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা জারি থাকার দরুণ রেকর্ড সংখ্যক সংক্রমণ ছড়ায় ভারতে। উদাহরণস্বরূপ রাখা হয় নিউজিল্যান্ডকে। যেখানে করোনামুক্ত হওয়ার পরও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরু করলে ফের আক্রান্ত হয় কিউইদের এই দেশ।
আরও পড়ুন, অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন তৈরির নেপথ্যে এই মহিলা বিজ্ঞানী, আশা দেখাচ্ছেন বিশ্বকে
ভারতীয় উড়ান সংস্থাগুলি কি আন্তর্জাতিক ভ্রমণ আবার শুরু করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে?
ভারত সরকারের এয়ার ইন্ডিয়া বিমান লকডাউনেও 'বন্দে ভারত মিশন' জারি রেখে বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনে। তবে এবার বেসরকারি বিমানও লংরুটের বিমান পরিষেবা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মত, যাত্রীদের সকলেই 'ওয়ান স্টপ' ফ্লাইটের থেকে 'নন-স্টপ' ফ্লাইট পছন্দ করছে। বিমানে ব্রেক জার্নি নিতে চাইছে না কেউই। ফলে সমস্যায় পড়েছে উড়ান সংস্থাগুলি। মূলত, ইন্ডিয়া, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া হয়ে যে বিমানগুলি ইউরোপ-আমেরিকাতে যেত। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি মাথায় রেখে ভারত সরকারের কাছ থেকে ব্রিটেন এবং মার্কিন মুলুকে বিমান পরিষেবা চালু করতে নির্ধারিত 'কেরিয়ার স্ট্যাটাস' নিয়েছে স্পাইস জেট সংস্থাটি। যদিও ওই দুই দেশ থেকে ছাড়পত্র এখনও সংস্থার হাতে এসে পৌঁছয়নি। স্পাইসজেট বিশ্বের অন্যান্য বিমান সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা জারি রেখেছে যাতে ছাড়পত্র মিলতেই এয়ারবাস ন্যায় বিমান তাঁরা লিজ নিয়ে পরিষেবা দিতে শুরু করতে পারে।
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন