বর্তমান ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। বিশ্বকাপ ক্রিকেট, টি-২০ ওয়ার্ল্ড কাপ ফরম্যাট ছাড়াও ক্রিকেটারদের নিজেদের পারফরম্যান্স বিশ্বকে দেখানর মস্ত প্ল্যাটফর্ম এই আইপিএল। কিন্তু করোনা থাবা পড়েছে সেখানেও। দেশে যে হারে বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাস, সেখানে এই টুর্নামেন্ট এ দেশে করা সম্ভব নয়। এদিকে, আইপিএল ২০২০-এর জন্য কোটি কোটি টাকা দিয়ে প্লেয়ার কেনাবেচার পাশাপাশি বিপুল অর্থও লগ্নি করেছে বিশ্বের একাধিক সংস্থা। অর্থ যাতে অনর্থ না ঘটাতে পারে সেই দিক বিচার করেই এবছর সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে আইপিএল আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দেড় মাস পরেই শুরু হবে আইপিএল। সংসবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সূত্রের খবর বলছে ১৭ সেপ্টেম্বর শুরু হবে আইপিএল। ফাইনাল নভেম্বর মাসের ৮ তারিখে। তবে কোন দলের সঙ্গে কবে খেলা এবং তার সময়সূচী এখনই বিশদে স্থির হয়নি। যদিও ফ্র্যাঞ্চাইজিদের এই বিষয়ে জানানো হয়ে গিয়েছে বলে খবর। তবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতেই খেলা হবে তা স্থির হয়েছে। এমিরেটাস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)-এর তরফে জানান হয় যে তাঁরা ২০২০ সালের আইপিএল আয়োজন করার জন্য বিসিসিআই-এর কাছ থেকে অফিসিয়াল চিঠি পেয়ে গিয়েছেন ইতিমধ্যেই।
জনপ্রিয় আইপিএল ম্যাচ কি সেখানে 'ক্লোজড ডোর' হবে?
বিসিসিআই-এর তরফে বলা হয়েছে সে দেশের প্রশাসন স্টেডিয়ামের ৫০ শতাংশ দর্শক প্রবেশে অনুমতি দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে করোনায় আক্রনাত হয়েছে ৫৮ হাজার ৫৬২ জন। জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৪৩ জনের। সংখ্যা একেবারে কম নয়। সেপ্টেম্বরে যদিও অনেক খেলা আয়োজনের অনুমতির দিয়েছে সে দেশ। তাই ভারত থেকে দর্শকরা সেখানে গিয়ে খেলা উপভোগ করতে পারবে বলেই বিশ্বাস। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই খেলা হবে এমনটাই জানান হয়েছে।
পরিচিত দৃশ্য কি দেখা যাবে?
আইপিএল অনুরাগীরা খেলা দেখার সুযোগ পাবেন?
সে দেশে গিয়ে খেলা দেখতে হলে অবশ্যই থাকতে হবে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট। সেখানে গিয়েও ৯৬ ঘন্টার মধ্যে পিসিআর টেস্ট করাতে হবে। যারা করোনা পজিটিভ হবে ১৪ দিনে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ভারতে বিমান পরিষেবা ফের বন্ধ হলেও দুবাইতে চলছে বিমান।
ফ্র্যাঞ্চাইজিরা সমস্যায় পড়বে?
টিকিট বিক্রির বিষয়ে অবশ্যই সমস্যায় পড়বে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি। ইডেনের মতো ৬৭ হাজার আসনের স্টেডিয়ামে টিকিট বিক্রিতে যে টাকা আসে তা পাওয়া সম্ভব নয়। যদি ক্লোজড ডোর খেলা হয় সেক্ষেত্রে প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজি কম করে ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা লোকসান করবে। এদিকে জানা গিয়েছে, প্রত্যেক ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অন্তত একমাস ট্রেনিং পর্ব সারতে চাইবে। অগাস্টের ২০ তারিখেই সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি অনুশীলন শুরু করবে। মার্চ মাসের ২৯ তারিখ আইপিএল শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে লকডাউনের জন্য তা পিছিয়ে গিয়েছিল ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর আরো কয়েকদফা লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির সঙ্গে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আইপিএল স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই বছরেই আইপিএল আয়োজনের চেষ্টা করছে বোর্ড।
বিসিসিআই-এর জন্য এই আইপিএল কতটা জরুরি?
দেখা যাচ্ছে আইপিএল যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ২ হাজার কোটি সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়তে হবে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডকে। এছাড়াও স্টারের মতো ব্রডকাস্টদের থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশের হিসেবে আরও ১ হাজার ৫০০ কোটি ক্ষতি গুনতে হবে। এছাড়াও আইপিএল কর্তৃপক্ষ, ড্রিম ১১ সংস্থা অন্যান্য পার্টনারদের থেকে বার্ষিক ১৬১ কোটি টাকাও পাবে না আইপিএল না হলে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন