Iran Attacks Israel: সিরিয়ার দামাস্কাসে ইরানি দূতাবাসে এয়ার স্ট্রাইকের জবাবে রবিবার ইজরায়েলের উপর হামলা করল তেহরান। প্রায় ২০০টি ড্রোন ছোড়া হয়েছে ইজরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে। তবে যতটা তীব্রতর হামলা হবে বলে মনে করা হয়েছিল, ততটা হয়নি। ইজরায়েলি ভূখণ্ডে একের পর এক মিসাইল হানা আছড়ে পড়ে, কিন্তু সেই হামলা তেমন দাগ কাটতে পারেনি। আকাশেই ছোড়া মিসাইল-ড্রোন ধ্বংস হয়ে যায়।
এর নেপথ্যে রয়েছে ইজরায়ের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি। আমেরিকার সাহায্যে বছরের পর বছর ধরে একটু একটু করে এই প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি গড়ে তুলেছে ইজরায়েল। ইজরায়েল তিনদিক থেকে শত্রুর ঘেরাটোপে রয়েছে। একদিকে, লেবানন আরেকদিকে জর্ডন এবং অন্যদিকে মিশর। সঙ্গে প্যালেস্তাইনের হামাস তো রয়েইছে। এবার ইরানও হামলা চালিয়েছে। বিদেশি আক্রমণের হাত থেকে নাগরিকদের রক্ষা করতে ইজরায়েলের হাতে রয়েছে অত্যাধুনিক অ্যারো এরিয়াল ডিফেন্স সিস্টেম।
ইরানি মিসাইল-ড্রোন হানা থেকে ইজরায়েল রক্ষা পেয়েছে অত্যাধুনিক আয়রন ডোম ব্যবস্থা। কী এই আয়রন ডোম? ইজরাইল ২০১১ সালে আয়রন ডোম অ্যান্টি-মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি করেছিল। এটি হামাস জঙ্গি গোষ্ঠী-সহ বিদেশি আক্রমণের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হাতিয়ার।
ইজরায়েলের আয়রন ডোম কী?
২০০৬ সালে, লেবাননের জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবোল্লাহ ইজরায়েলের উপর একই ধরনের রকেট হামলা চালিয়েছিল। এতে বহু সাধারণ মানুষ নিহত হয়। এরপর রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা মোকাবিলায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর কথা জানায় ইজরায়েল। ইজরায়েলের বিখ্যাত সরকারি প্রতিরক্ষা সংস্থা রাফালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে। আমেরিকা এই প্রকল্পে ২০০ মিলিয়ন ডলার সাহায্য করে। অবশেষে, ২০১১ সালে, আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হাতে আসে ইজরায়েলের।
আয়রন ডোম কীভাবে কাজ করে?
আয়রন ডোম অ্যান্টি মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমে রয়েছে বিশেষ ধরণের ইন্টারসেপ্টর। যা শনাক্ত করে যে কোনও ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট কোনও আবাসিক এলাকায় পড়তে চলেছে বা কোনও ক্ষেপণাস্ত্র তার লক্ষ্য হারিয়েছে কিনা। ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আটকানোর পর, এই সিস্টেমটি এটিকে বাতাসে নিক্ষেপ করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিনরাত কাজ করতে এবং সমস্ত আবহাওয়ায় কাজ করতে সক্ষম। যদিও ইজরায়েল দাবি করেছে আয়রন ডোম অ্যান্টি-মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের সাফল্যের হার ৯০%। তবে একাধিক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন এই সিস্টেমের সাফল্যের হার ৭০-৮০%। গত বছর হামাস যেভাবে ৫ হাজার রকেট নিক্ষেপ করেছে, তাতে ইজরায়েলের আয়রন ডোম নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক।
আমেরিকার মিসাইল ডিফেন্স এজেন্সির সঙ্গে ইজরায়েলের এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ যৌথভাবে কাজ করে অ্যারো এরিয়াল ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি করেছে। ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বহুস্তরীয়। একেবারে উপরের স্তর হিসাবে অ্যারো ১ এবং অ্যারো ২ সিস্টেম চালু রয়েছে। অল্প এবং মাঝারি পাল্লার মিসাইল ধ্বংস করতে সক্ষম অ্যারো ২ সিস্টেম। তবে দূরপাল্লার মিসাইল ধ্বংস করতে পারে একমাত্র অ্যারো ৩ সিস্টেম। যেটা সম্প্রতি ইজরায়েল তাদের ডিফেন্স সিস্টেমে যুক্ত করেছে। রবিবার ইরানি হামলায় এই অ্যারো ৩ কাজে লেগেছে।