প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে নতুন সদস্য হিসেবে ইরানকে স্বাগত জানিয়েছেন। ইরানের যোগদানের আগে এসসিওতে আটটি সদস্য দেশ ছিল: চিন, রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার চারটি দেশ- কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান।
এসসিও গঠন
সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা গোষ্ঠী ২০০১ সালে ভারত ও পাকিস্তানকে বাদ দিয়ে সাংহাইয়ে ছয়টি সদস্য দেশকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে আফগানিস্তান, বেলারুশ, ইরান এবং মঙ্গোলিয়া এসসিও-তে পর্যবেক্ষক দেশের মর্যাদা পেয়েছে। অন্য ছয়টি দেশ- আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, কম্বোডিয়া, নেপাল, তুরস্ক এবং শ্রীলঙ্কা পেয়েছে কথা বলার মত অংশীদারের মর্যাদা।
তৈরির প্রাথমিক উদ্দেশ্য
এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল মধ্য এশিয়া অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং চরমপন্থা দমনের প্রচেষ্টার জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি। কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে ভূ-রাজনৈতিক চিত্রে বড়সড় বদল এসেছে। বিশেষ করে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশৃঙ্খল প্রস্থান মধ্য এশিয়ায় চিনা প্রভাব বৃদ্ধি ও বিনিয়োগের জন্য জায়গা খুলে দিয়েছে। চিন তার কৌশলগত আলিঙ্গনে পাকিস্তানকে আরও শক্তভাবে টেনেছে। আর, আন্তর্জাতিক মঞ্চে চিন-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়ে উঠেছে। যেহেতু ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে, আর রাশিয়ার সাথে পশ্চিমী দুনিয়ার সম্পর্ক সর্বকালের খারাপ স্তরে নেমে গিয়েছে, তার সূত্র ধরেই বেজিং এবং মস্কোর সাথে 'সীমাহীন' বন্ধুত্বের সূচনা হয়েছে।
ইরান এবং এসসিও
এসসিওতে ইরানের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার আবেদন বেশ কয়েক বছর ধরেই বিবেচিত হচ্ছে। ২০১৬ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা শক্তিগুলির সঙ্গে ইরান পরমাণু চুক্তি (যাকে জেসিপিওএ বলা হয়) স্বাক্ষর করেছে। তার প্রেক্ষিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি যে ইরানের পরমাণু সমস্যা সমাধান হওয়ার পরে এবং রাষ্ট্রসংঘ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার পরে, ইরানের সদস্যপদ পেতে আর কোনও বাধা নেই।'
আরও পড়ুন- অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বাস্তবায়নে বিলম্ব মূল্যবোধের পক্ষে ক্ষতিকর, কেন্দ্রের ওপর চাপ ধনখড়ের
আবেদন বিবেচনাধীন
কিন্তু, পুতিন একথা বলার পরেও এসসিও-তে ইরানের সদস্যপদ পাওয়া আবেদন বিবেচিত আছে। তার কোনও মীমাংসা হয়নি। কারণ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে জেসিপিওএ বা চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে। যার জেরে চুক্তিটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। এর একবছৎ পরে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তেল রফতানি রোধ করে সমস্ত ছাড়ের অবসান ঘটায় বা নিষেধাজ্ঞা চুক্তির আগের মত বহাল রাখে।