স্থানীয় আধিকারিকদের মতে, লিবিয়ায় প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যায় ১১,০০০-এরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। আর, ৩০,০০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সেপ্টেম্বরের প্রথম ১০ দিনের মধ্যে চারটি মহাদেশে বিধ্বংসী বন্যার খবর পাওয়ার পর এই বিপর্যয়ের ঘটনা সামনে এসেছে। তার মধ্যে তীব্র বৃষ্টিতে মধ্য গ্রিস, উত্তর-পশ্চিম তুরস্ক, দক্ষিণ ব্রাজিল, মধ্য ও উপকূলীয় স্পেন, দক্ষিণ চিন, হংকং এবং দক্ষিণ-পশ্চিম আমেরিকার কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে। আর ড্যানিয়েল নামে একটি ভূমধ্যসাগরীয় ঝড় লিবিয়া, গ্রিস এবং তুরস্ককে বন্যার দিকে চালিত করেছে। এই সময় এক ঘূর্ণিঝড় ব্রাজিলে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল এবং টাইফুন হাইকুই নামে পরিচিত আরেকটি ঝড় হংকং এবং চিনে বন্যার সৃষ্টি করেছিল।
বিভিন্ন জায়গায় বন্যা
আন্তর্জাতিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পটভূমিতে চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলোর এখন যেন সর্বশেষ সিরিজটি চলছে। যার মধ্যে, জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি পরিণতি হিসেবে বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জেরে সম্ভবত বন্যা হচ্ছে। তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর দায় চাপিয়ে বন্যার দায়িত্ব কোনও প্রশাসনই এড়িয়ে যেতে পারে না। পরিবেশবিদদের একাংশের সেকথা মাথায় রেখেই অভিযোগ- এক, সময়ের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনগুলো পর্যবেক্ষণ করার কোনও পর্যাপ্ত পরিসংখ্যান প্রশাসনের কাছে নেই। দুই, বন্যার গতি এবং তীব্রতার ওপর অন্যান্য অনেক কারণের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। প্রশ্ন হল- পরিবেশবিদদের এই কথা ঠিক হলে, জলবায়ুর পরিবর্তন এবং বন্যার মধ্যে সম্পর্কটা কী? আর, কোনও অঞ্চলে বন্যার কারণটাই বা কী?
আরও পড়ুন- বিশেষ অধিবেশনে উঠবে কমিশনারদের নিয়োগ বিল! কেন তার বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা?
বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনের সম্পর্ক
সেই সম্পর্কটা হল- উচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে ভূমি, মহাসাগর এবং জলাশয় থেকে বাষ্পীভবন হয়। যার অর্থ হল, একটি উষ্ণ বায়ুমণ্ডল তার আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন যে গড় তাপমাত্রায় প্রতি একডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির জন্য, বায়ুমণ্ডল প্রায় ৭% বেশি আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে। যা ঝড়কে আরও বিপজ্জনক করে তোলে। কারণ, বৃষ্টিপাতের তীব্রতা, সময়কাল এগুলোকে ঘনঘন বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করে। যা, শেষ পর্যন্ত মারাত্মক বন্যার আকার নেয়।