সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঋণের বোঝায় জর্জরিত দরিদ্র দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছে। করোনা অতিমারির মত বিভিন্ন কারণে দেশগুলোর আর্থিক অবস্থা তলানিতে ঠেকেছিল। তার ওপর বিভিন্ন ধনী দেশ এবং ঋণদাতা সংস্থাগুলোর সুদ ফেরত দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। সেই কারণেই দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছে। এই দেশগুলো বেশিরভাগই দক্ষিণ গোলার্ধের।
বাড়ছে ঋণ
আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা এবং এশিয়ায় উন্নয়নশীল, স্বল্প উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলোকে একসঙ্গে গ্লোবাল সাউথ বলা হয়। সাম্প্রতিক বছরে এই সব দেশগুলোর ঋণের বোঝা কয়েকগুণ বেড়েছে। ধনী দেশগুলো থেকে করা ঋণ, বিশ্বব্যাংক অথবা আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডারের মত দাতাদের থেকে নেওয়া ঋণ ২০১১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১৫০% বেড়েছে। যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গত ২৫ বছরে। এমনটাই জানানো হয়েছে 'ঋণ, জীবাশ্ম জ্বালানির ফাঁদ' নামে ২১ আগস্ট, সোমবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে। যেখানে বলা হয়েছে, বর্তমানে ৫৪টি দেশ তীব্র ঋণ সংকটে ভুগছে। ঋণ পরিশোধের জন্য অতিমারির সময়ে দেশগুলো জনসাধারণের জন্য ব্যয়ের বাজেট কমাতে বাধ্য হয়েছে।
কেন বাড়ছে ঋণ
তার ওপর আবহাওয়ার দুর্বিপাক, বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার দরকার পড়লে এই দেশগুলোর হাল চরমে ওঠে। যেমন, ২০১৭ সালে হারিকেন মারিয়া দ্বীপে আঘাত হানার পর জিডিপির শতাংশের হিসেবে ডমিনিকার ঋণ ৬৮% থেকে বেড়ে ৭৮% হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্রমবর্ধমান ঋণ মোকাবিলা করতে দরিদ্র দেশগুলো আরও জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন করেছে। উদাহরণ হিসেবে আর্জেন্টিরা কথা বলা যায়। আর্জেন্টিনা উত্তর প্যাটাগোনিয়ায় ভাকা মুয়ের্তা তেল ও গ্যাস উত্তোলনে ফ্র্যাকিং প্রকল্পকে ছাড়পত্র দিয়েছে। লক্ষ্য, দেশের ঋণসংকট কমানো এবং রাজস্ব বৃদ্ধি। দরিদ্র দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডারও এই জাতীয় প্রকল্পগুলোকে সমর্থন করে চলেছে বলেই দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
আরও পড়ুন- চন্দ্রযান এবং অন্যান্য মুন মিশন সম্পর্কে এই ৫টি বিষয় আপনি হয়তো জানেন না, জানুন অজানা কাহিনী
সমস্যা কোথায়
প্রতিবেদনটির দাবি, এতে পরিবেশগত বিপর্যয় তৈরি হচ্ছে। বিশ্বে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ কমছে। যাতে দরিদ্র দেশগুলো আরও গরিব হয়ে যাচ্ছে। তাদের মুদ্রার মান কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি, এই জ্বীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন করতে দরিদ্র দেশগুলো আরও বিপুল পরিমাণে ঋণ নিচ্ছে। যা তাদের আরও ঋণের সাগরে ডুবিয়ে দিচ্ছে। অর্থাৎ, ঋণ কমার বদলে তা বাড়ছে।