দুবাই-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন যে পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে 'আন্তরিক' এবং 'মর্যাদাপূর্ণ' আলোচনা চান। ভারতকে আলোচনার টেবিলে টেনে আনতে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রেসিডেন্ট শেখ মহম্মদ বিন জায়েদকে উদ্যোগী হতে আবেদন করেছেন। কারণ, নয়াদিল্লির সঙ্গে জায়েদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে।
এই আলোচনায় সমস্ত অসমাপ্ত ইস্যু নিয়ে ভারতের সঙ্গে বসতে চান শেহবাজ। তার মধ্যে কাশ্মীরে 'মানবাধিকার লঙ্ঘন' এবং 'জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের কথা' থাকবে বলেই শেহবাজ জানিয়েছেন। এসব কথা বলার অর্থই ভারতের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনাকে শুরুর আগেই শেষ করে দেওয়া। তারপরও শরিফের এরকম একমুখে পঞ্চাশ কথা বলার কারণ নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠছে।
শেহবাজ কিন্তু এমনিতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে ভারত-পাক শান্তি আলোচনার অনুঘটক হতে বলেননি। এর আগে আমিরশাহিই দাবি করেছিল, তারা ভারত-পাকিস্তানকে আলোচনার টেবিলে বসিয়েছে। ২০২১ সালে আমিরশাহির শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিবিদ এমনটাই দাবি করেছিলেন। সেই দাবিকে সমর্থন করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স।
শরিফের এই প্রস্তাবের সময়টাও রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ। তা হল, বর্তমানে পাকিস্তানে সঞ্চিত ডলারের পরিমাণ কম। সেই কারণে তারা ঋণখেলাপি হতে পারে, এমন উদ্বেগও তৈরি হচ্ছে। সেই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতেই গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে গিয়েছিলেন শেহবাজ। দু'দিনের সফরে আমিরশাহির কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- প্রতিবাদের ভাষা পদত্যাগ, ব্রিটেনে নার্সদের নতুন কৌশলে বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবা
সেই সাহায্যের প্রস্তাবের বিনিময়ে আমিরশাহি ২০০ কোটি ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পাকিস্তানকে। পাশাপাশি, আরও ১০০ কোটি ডলার সাহায্য করতে পারে বলেও জানিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি পাকিস্তানকে সেদেশ থেকে তেল আমদানির সুযোগ দিচ্ছে।
শেহবাজের সফরের আগে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সফরে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল অসীম মুনির। তিনি সৌদি আরবও সফর করেছেন। এই দুই দেশকে পাকিস্তানের ভাইয়ের সমান বলে জানিয়েছেন। ফলে, ভারতের ব্যাপারে শেহবাজের মন্তব্য যে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে খুশি করতে, সেনিয়ে কারও কোনও সন্দেহ নেই।
Read full story in English