Explained: গাজায় সাদা ফসফরাস ব্যবহার করছে ইজরায়েল? জানেন কী এই অস্ত্র?
ঠিক কীভাবে এই বারুদ কাজ করে? সামরিক ক্ষেত্রে কি এই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়? সাদা ফসফরাস কতটা ক্ষতিকারক? অতীতে কখনও এই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে? এই অস্ত্র ব্যবহার কি নিষিদ্ধ? এসব নিয়ে নানা কৌতূহল মানুষের মধ্যে রয়েছে।
ঠিক কীভাবে এই বারুদ কাজ করে? সামরিক ক্ষেত্রে কি এই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়? সাদা ফসফরাস কতটা ক্ষতিকারক? অতীতে কখনও এই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে? এই অস্ত্র ব্যবহার কি নিষিদ্ধ? এসব নিয়ে নানা কৌতূহল মানুষের মধ্যে রয়েছে।
মার্কিন বিমান বাহিনীর ডগলাস A-1E Skyraider ১৯৬৬ সালে দক্ষিণ ভিয়েতনামে একটি সাদা ফসফরাস বোমা ফেলেছিল। (ছবি সৌ: উইকিমিডিয়া কমন্স)
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন (আইএইচএল) লঙ্ঘন করে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজা এবং লেবাননে সাদা ফসফরাস বোমা ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছে। এই অভিযোগ রাষ্ট্র এবং অ-রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্যটা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেয়। একটি সশস্ত্র লড়াইয়ের মধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য এবং ভিডিও প্রমাণ দিয়ে গাজাবাসীদের শাসকগোষ্ঠী হামাস ফসফরাস বোমা ব্যবহারের অভিযোগ ইজরায়েলের বিরুদ্ধে তুলেছে। অভিযোগ করা হয়েছে, গাজার মত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইজরায়েলের এই ধরনের যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার সাধারণ নাগরিকদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। শুধু তাই নয়, এতে দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে। ইজরায়েলের সেনাবাহিনী অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। যার ফলে, প্রশ্ন উঠছে কী এই সাদা ফসফরাস?
Advertisment
সাদা ফসফরাস কী? সাদা ফসফরাস হল একটি পাইরোফোরিক। যা অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলে পুরু, হালকা ধোঁয়া এবং তীব্র ৮১৫-ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ উৎপন্ন করে। পাইরোফোরিক পদার্থ হল যেগুলো বাতাসের সংস্পর্শে থাকাকালীন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা খুব দ্রুত (পাঁচ মিনিটের কম) জ্বলে। আন্তর্জাতিক রাসায়নিক পদার্থের শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী, সাদা ফসফরাস 'পাইরোফোরিক সলিডস, ক্যাটাগরি ১'-এর মধ্যে পড়ে। যার মধ্যে রয়েছে এমন রাসায়নিক যা 'স্বতঃস্ফূর্তভাবে' আগুন ধরে যায়। বায়ুর সংস্পর্শে এলে এই পদার্থ সবচেয়ে অস্থির হয়ে ওঠে। সাদা ফসফরাস রসুনের মত গন্ধ ছড়ায়।
Advertisment
সাদা ফসফরাস কি সামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়? সাদা ফসফরাস আর্টিলারি শেল, বোমা এবং রকেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি রাসায়নিক ভেজানো কাপড়ের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। সামরিক ক্ষেত্রে এর প্রাথমিক ব্যবহার হয় স্মোকস্ক্রিন তৈরি করতে। মাটিতে সৈন্যদের গতিবিধি লুকিয়ে রাখার জন্য সাদা ফসফরাস ব্যবহার করা হয়। কারণ, তাতে ধোঁয়া তৈরি হয়। যার ফলে সামনে কিছু দেখা যায় না। আর, এই সুযোগে জওয়ানরা লুকিয়ে পড়েন। পাশাপাশি, সাদা ফসফরাস ইনফ্রারেড অপটিক্স এবং অস্ত্র ট্র্যাকিং সিস্টেমের সঙ্গেও ব্যবহৃত হয়। যা বাহিনীকে গাইডেড মিসাইল থেকে রক্ষা করে। ঘনীভূত ধোঁয়া তৈরি করে, একটি এলাকা ঢেকে রাখার জন্য এই রাসায়নিক যুদ্ধে সেনাবাহিনী হামেশাই ব্যবহার করে থাকে। পাশাপাশি, সাদা ফসফরাস একটি অগ্নিসংযোগকারী অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। মার্কিন বাহিনী ২০০৪ সালে ইরাকের ফালুজার দ্বিতীয় যুদ্ধের সময় সাদা ফসফরাস যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করেছিল বলে অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছিল, সেই সময় লুকিয়ে থাকা ইরাকি যোদ্ধাদের পালাতে বাধ্য করার জন্য ওই রাসায়নিক মার্কিন সেনা ব্যবহার করেছিল।