Advertisment

কেন ইসরোর EOS-03 উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হল?

জিএসএলভি রকেটের মাধ্যমে এটিকে পৃথিবীর নির্দিষ্ট কক্ষপথে (geostationary orbit) পাঠানোর কথা ছিল, কিন্তু ওই রকেটের ইঞ্জিনে গোলমাল হওয়ায় সব ভেস্তেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে বড় ব্যর্থতার মুখে পড়ল ইসরো।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে বড় ব্যর্থতার মুখে পড়ল ইসরো। বৃহস্পতিবার সকালে পৃথিবী নিরীক্ষণের উদ্দেশে একটি উপগ্রহ উৎক্ষপণ-মিশন শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো ঘোরতর গোলযোগ শুরু হয়ে যায়। মিশনটির সাড়ে সর্বনাশ যা ডেকে আনে। স্যাটেলাইটের নাম-- ইওএস-জিরো থ্রি (EOS-03)। জিএসএলভি রকেটের মাধ্যমে এটিকে পৃথিবীর নির্দিষ্ট কক্ষপথে (geostationary orbit) পাঠানোর কথা ছিল, কিন্তু ওই রকেটের ইঞ্জিনে গোলমাল হওয়ায় সব ভেস্তেছে। ইসরো বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, 'প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপে সব ঠিক ছিল। কিন্তু ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনের উপরের ধাপে যান্ত্রিক কারণে আগুন জ্বলেনি। এর ফলে মিশনে সাফল্য আসেনি।'

Advertisment

ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন কী?

এই ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি, তরল হাইড্রোজেন ও তরল অক্সিজেন ভয়ঙ্কর কম তাপমাত্রায় ( শূন্যের থেকে অনেক অনেক নীচে) এখানে থাকে, এ-ই হল রকেটের উত্থানশক্তি বা জ্বালানি। ভারী রকেট, যেমন জিএসএলভি, ভারী বস্তু মহাকাশে নিয়ে যেতে পারে। ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন বেশ শক্তিশালী হতে হবে এর জন্য, কারণ হেঁইয়ো ধাক্কা ঊর্ধ্বপানে দেওয়া প্রয়োজন। প্রযুক্তির সূক্ষ্ম কারসাজিতে ওই ইঞ্জিনের জ্বালানিতে আগুন জ্বলে ওঠে ধাপে ধাপে, তার পর বিশাল ভার নিয়ে সোঁওও করে রকেট উড়ে যায়, বার বার যে দৃশ্য বন্দি হয়েছে ক্যামেরায়, কাউন্টডাউন গায়ে শিহরণও তুলেছে, মিশনে যুক্ত থাকা মহাকাশ বিজ্ঞানীদের শ্বাস বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয় এই সময়টায়। হবে তো গো, সফল হবে তো মিশন… নাহ, এ দিন তাঁরা অসীম হতাশই হয়েছেন।

সাফল্য-ব্যর্থতা

তবে এ-ই শুধু নয়, এর আগেও ইসরোর মিশনে ক্রায়োজেনিক-বিঘ্ন ঘটেছে। আবার বহু মিশন দুরন্ত সফলও। এটি জিএসএলভি রকেটের ১৪ নম্বর উৎক্ষেপণ ছিল, এবং ব্যর্থতার সংখ্যা হল চার। জিএসএলভি-র এই রকেটের নাম মার্ক-টু। মার্ক-টু জি-স্যাট সেভেন-এ (GSAT-7A) স্যাটেলাইটকে যথা জায়গায় পৌঁছে দিতে পেরেছে ২০১৮-র ডিসেম্বরে। আর, ২০১০ সালে এই রকেট মিশনে অসফল হয়েছিল এর আগে। এ দিনের মিশনে এই অসাফল্য ইসরোর উপর বিশাল ধাক্কা, এই কথাটা বলা যায় এক কথায়। কারণ, মহামারির জন্য এমনিতে এই মিশনে ঘিরে ধরেছিল তুমুল অনিশ্চয়তা। ইওএস-জিরো থ্রি স্যাটেলাইট গত মার্চে উৎক্ষেপণ করা হবে বলে স্থির হয় প্রথমে, তখন মহামারি নয় যান্ত্রিক ত্রুটির ধাক্কায় পিছোয় এক দফা, তার পর আসে মহামারির কোপ।

ইওএস-জিরো থ্রি হল পৃথিবী নিরীক্ষণের নতুন প্রজন্মের কৃত্রিম উপগ্রহ। বন্যা, সাইক্লোনের উপর নজর দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যাবে। জলস্থান, ফসল, বন ইত্যাদির উপর প্রখর নজরও দিতে পারবে এটি। এ দিনের ব্যর্থতার প্রভাব পড়বে আগামী দিনেও, এটা সহজেই বোঝা যাচ্ছে, আগামী বছরে জিএসএলভি-র বেশ কয়েকটি মিশন রয়েছে, সে সবে চিন্তা বাড়ছে।

ISRO GSLV F-10
Advertisment