Iran-Jaish al-Adl: ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। এই লক্ষ্যবস্তুগুলোকে ইরানের আধা-সরকারি সংবাদমাধ্যম 'জয়শ আল-ধুলম (জইশ আল-আদল) জঙ্গি গোষ্ঠীর দুটি প্রধান ঘাঁটি' বলে বর্ণনা করেছে। পাকিস্তান তার 'আকাশসীমার এই অপ্রীতিকর লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা' করেছে। একইসঙ্গে পাকিস্তান বলেছে যে হামলার ফলে, 'তিন জন মহিলা আহত হয়েছেন। সঙ্গে, দুটি শিশুরও মৃত্যু হয়েছে।' পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতিতে বলেছে, তেহরানের কাছে এই ঘটনায় একটি প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ইরানের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে 'হামলার তীব্র নিন্দা' করা হয়েছে।
- এই জঙ্গি গোষ্ঠীর নেতা হল আবদুর রহিম মোল্লাজাদেহ।
- তার সম্পর্কে বা তার অবস্থান সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি।
- কোনও ছবিও প্রকাশ্যে আসেনি।
জইশ আল-আদল কারা?
জইশ আল-আদল শব্দের বাংলা হল- বিচারের সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে এদের ঘাঁটি। এটি একটি সুন্নি সালাফিস্ট জঙ্গি গোষ্ঠী। এই জঙ্গিরা পাকিস্তান এবং ইরানের পার্বত্য সীমান্ত অঞ্চলে সক্রিয়। তারা সেই সব সুন্নি জঙ্গিগোষ্ঠীর অন্যতম, যারা পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশ এবং ভারত মহাসাগরের সীমান্তবর্তী ইরানের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে সিস্তান এবং বেলুচেস্তান (আসলে বেলুচিস্তান নামে পরিচিত) প্রদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে। জইশ আল-আদল ২০১৩ সাল থেকে ইরানের সীমান্তরক্ষীদের বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে এই জঙ্গিরা। বোমা হামলা চালিয়েছে। ইরানের সীমান্ত পুলিশ কর্মীদের অপহরণ করেছে বলেও অভিযোগ। ইরানের তাসনিম সংবাদমাধ্যম বলেছে যে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি জইশ আল-আদল, 'ইরানের দক্ষিণ-পূর্বে সিস্তান ও বেলুচেস্তান প্রদেশের রাস্ক শহরে একটি পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়েছিল। যার ফলে ১১ জন ইরানি পুলিশকর্মী প্রাণ হারান।' এই জঙ্গি গোষ্ঠীর নেতা হল আবদুর রহিম মোল্লাজাদেহ। তার সম্পর্কে বা তার অবস্থান সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি। কোনও ছবিও প্রকাশ্যে আসেনি।
জঙ্গি সংগঠনটির সন্ত্রাসের কিছু উদাহরণ?
(১) ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর: সিস্তান-বেলুচেস্তান প্রদেশে পুলিশ স্টেশন, ব্যাংক এবং দোকানে হামলা। ১৯ জন নিহত, কমপক্ষে ২০ জন আহত।
(২) ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি: একটি আত্মঘাতী গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে উড়ে যায় সিস্তান-বেলুচেস্তানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পস (IRGC) কর্মীদের বাস। হত ২৭, আহত ১৮।
(৩) ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর: ইরানের চাবাহার বন্দরের একটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে ৪০ জন নিরীহ নাগরিক প্রাণ হারান, আহত প্রায় ১০০।
(৪) ২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর: ইরানের পিশিনের এক বাজারে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪০ জনেরও বেশি নিহত।
(৫) ২০০৯ সালের ২৮ মে: সিস্তান-বেলুচেস্তান প্রদেশের রাজধানী জাহেদানের বড় মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩০ জন মুসল্লি নিহত এবং ৩০০ জন আহত।
আরও পড়ুন- মালদ্বীপে বিরাট ছক কষছে চিন, এই কারণেই চিন্তায় মোদী?
ইরানের হামলা
সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, পাকিস্তান সীমান্তের কাছে পাঞ্জগুর শহরে এই হামলা চালিয়েছে ইরান। পাকিস্তান সীমান্তের প্রায় ৫০ কিলোমিটার ভিতরে একটি মসজিদ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই পাকিস্তানি নিরাপত্তা আধিকারিকের বক্তব্যের ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়ায় এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এপি। ইরানের আধা-সরকারি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, 'এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল বেলুচিস্তানের কোহ-সাবজ (সবুজ পর্বত) নামে পরিচিত অঞ্চল'। যা, 'জয়শ আল-ধুলম জঙ্গিদের অন্যতম বড় ঘাঁটি বলে পরিচিত।'