২০১৪-২০১৮: আদর্শগত দিক থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত হওয়া সত্ত্বেও পিডিপি ও বিজেপির জোট হল সরকার গঠনের স্বার্থে, যে সরকারের মুখ্যমন্ত্র হলেন মুফতি মহম্মদ সঈদ ও তাঁর মৃত্যুর পর সে আসন গ্রহণ করলেন মেহবুবা মুফতি। জঙ্গি বুরহান ওয়ানির হত্যার পর উপত্যকা জুড়ে দেখা দিল অসন্তোষ, জোটসঙ্গীদের মধ্যে সম্পর্কে তার ছাপ পড়ল, মেহবুবা ২০১৮ সালে পদত্যাগ করলেন।
২০০৪-২০১৪: মনমোহন সিংয়ের সময়কাল চিহ্নিত হয়ে থাকবে কয়েকটি কারণে। এর মধ্যে রয়েছে ২০১০ সালে জম্মু কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগের জন্য দায়িত্বে ছিলেন দিলীপ পাডগাঁওকর, এমএম আনসারি ও রাধা কুমার। ২০০৬ সালে প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফের বৈঠক হয় নিউ ইয়র্কে। ২০০৮ সালে অমরনাথ মন্দিরের জমি হস্তান্তর নিয়ে অশান্তি হয়।
আরও পড়ুন, ছেঁড়া-খোঁড়া ইতিহাস, তালি দেওয়ার ভবিষ্যৎ
এপ্রিল ২০০৩: প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী জম্মু কাশ্মীর সফর সেরে এসে লোকসভায় ভাষণ দিলেন- যে ভাষণ তার পর থকেে বিভিন্নবার উদ্ধৃত হতে থাকবে। "আমি জোর দিয়ে বলতে চাই বন্দুক কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারবে না, ভ্রাতৃত্ব তা পারবে। সমস্যার সমাধান হতে পারে যদি আমরা ইনসানিয়ত, জামহুরিয়ত ও কাশ্মীরিয়তের নীতিমালা কে আদর্শ ধরে অগ্রসর হই।"
১৯৯৯: কার্গিলের যুদ্ধ- মে থেকে জুলাই। পাকিস্তানি বাহিনী ও জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে অনুপ্রবেশ করে, পরে ভারত অবস্থা পুনরুদ্ধার করে। দেশে ১৯৪৭, ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের পর ফের এই প্রথম যুদ্ধ হল- এর মধ্যে কেবল ১৯৭১ সালের যুদ্ধই কাশ্মীর নিয়ে ছিল না।
১৯৯০: জম্মু কাশ্মীর পুলিশের ২০০৮ সালের দেওয়া একটি রিপোর্ট অনুসারে ১৯৮৯ সালের পর থেকে ২০৯ জন কাশ্মীরি পণ্ডিত খুন হয়েছেন, এর মধ্যে ১৯৯০ সালেই খুন হন ১০৯ জন। এর পরেই কাশ্মীরি পণ্ডিতরা ঘর ছাড়তে শুরু করেন। শোফিল্ডের বইয়ে দেওয়া তথ্য অনুসারে সে বছরের মার্চ মাসের গোড়ায় উপত্যকা ছাড়েন ১.৪ লক্ষ হিন্দু।
আরও পড়ুন, কেন আমাদের দেশে এখন মোট ২৮টি রাজ্য
জানুয়ারি ১৯৯০: নয়া দিল্লি ফের রাজ্যপাল জগমোহনকে নিয়োগ করা হয়। জনতার বাড়ি বাড়ি হানার পর শ্রীনগরের গওয়াকাডাল সেতুর উপর একদল জনতা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। সিআরপিএফের বাহিনী নিরস্ত্র জনতার উপর গুলি চালায়। শোফিল্ড লিখছেন এ ঘটনায় মারা যান একশো জনের উপর। ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যপালের শাসন চালু হয় রাজ্যে।
১৯৮৯: ইতিহাসবিদ ভিক্টোরিয়া শোফিল্ড তাঁর বই কাশ্মীর ইন কনফ্লিক্টে লিখছেন সে বছরই শুরু হয় বিদ্রোহ। ঘনঘন ধর্মঘট শুরু হল, তৈরি হল বেশ কিছু সন্ত্রাসবাদী দল। মুফতি মহম্মদ সঈদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই অপহৃত হন তাঁর মেয়ে রুবাইয়া।
২৩ মার্চ ১৯৮৭: রিগিংভরা নির্বাচন প্রত্যক্ষ করল সবাই, শুরু হল জঙ্গিবাদের দিকে পথ চলার এক ঝোঁক। ১৯৮৪ সালে যে ফারুক আবদুল্লাকে বরখাস্ত করে কংগ্রেসের সমর্থনে তাঁরই আত্মীয়কে সে পদে বসানো হল, ১৯৮৭ সালে সেই কংগ্রেসের সমর্থনে ফের মুখ্যমন্ত্রী হলেন সেই ফারুক আবদুল্লাই।
২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫: ইন্দিরা গান্ধী- শেখ আবদুল্লা চুক্তি। জম্মু কাশ্মীর রাজ্য দেশের ৩৭০ ধারা দ্বারাই পরিচালিত হবে বলা হল চুক্তিতে।
১৪ মে, ১৯৫৪: রাষ্ট্রপতির নির্দেশে ৩৫এ ধারা প্রযুক্ত হল, যার মাধ্যমে স্থায়ী বাসিন্দাদের সম্পর্কিত যেসব আইন রাজ্য বিধানসভায় পাশ হবে তাকে চ্যালেঞ্জ করা মৌলিক অধিকার বলে স্বীকৃত হবে। জম্মু কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেন।
৯ অগাস্ট, ১৯৫২: জম্মু কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাকে গ্রেফতার করা হল, তাঁর সরকারকে বরখাস্ত করা হল। তাঁর গ্রেফতারির নির্দেশে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হল যে তিনি মন্ত্রিসভার আস্থা হারিয়েছেন। ১১ বছর জেলবন্দি রাখার পর তাঁর সঙ্গে সমঝোতা করেন কংগ্রেস।
২৬ জানুয়ারি, ১৯৫০: ভারতীয় সংবিধান কার্যকর হল। কিছু শর্তসাপেক্ষে তা লাগু হল জম্মু কাশ্মীরেও।
২৬ অক্টোবর, ১৯৪৭: হরিসিং ভারতভুক্তির চুক্তি স্বাক্ষর করলেন। তাঁর এ চুক্তি স্বাক্ষরের পিছনে রয়েছে উত্তরপশ্চিম ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্সের উপজাতির মানুষদের অনুপ্রবেশ, যাদের পিছনে সমর্থন ছিল পাকিস্তানের। মহারাজা ভারতের সামরিক সাহায্য চান, যে সাহায্যের বিনিময়মূল্য ছিল ভারতভুক্তি।
১৫ অগাস্ট, ১৯৪৭: ১৯৪৭ সালের ভারতের স্বাধীনতা আইন ব্রিটিশ ভারতকে ভারত ও পাকিস্তানে বিভক্ত করে। রাজন্য পরিচালিত রাজ্যগুলির সামনে তিনটি রাস্তা খোলা ছিল- স্বাধীন থেকে যাওয়া, ভারতে যোগ দেওয়া বা পাকিস্তানে যোগ দেওয়া। হরি সিং স্বাধীন থাকতে চেয়েছিলেন।