Advertisment

"সিমলা চুক্তি বুঝতেই পারেননি রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব"

রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব গুতেরেজ কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সে বিবৃতি প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিবেক কাটজু, প্রাক্তন ভারতীয় কূটনীতিবিদ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Un Charter, Simla Agreement

গুতেরেজের বিবৃতির একদিন আগেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন পাকিস্তানের প্রতিনিধি

জম্মু কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ। ১৯৭২ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সিমলা চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছেন, জম্মু কাশ্মীরের চূড়ান্ত পরিস্থিতি স্থিরীকৃত হবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে, রাষ্ট্রসংঘের সনদ মোতাবেক।

Advertisment

শুক্রবার এই বিবৃতি দিয়েছেন গুতেরেজ। তার একদিন আগেই রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মালিহা লোধি জম্মুকাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার ও রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়ার ভারতীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে গুতেরেজের সঙ্গে কথা বলেন। গুতেরেজকে এ ব্যাপারে তাঁর প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করার কথা বলেন লোধি।

আরও পড়ুন, কাশ্মীর, ৩৭০ ও ম্যাকিয়াভেলি বনাম কলহন

গুতেরেজের বিবৃতির বিষয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস কথা বলেছে প্রাক্তন ভারতীয় কূটনীতিবিদ বিবেক কাটজুর সঙ্গে। তিনি বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে আফগানিস্তান ও কাশ্মীর নিয়ে কাজ করেছেন।

রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল তাঁর বিবৃতিতে এক জায়গায় বলেছেন, রাষ্ট্রসংঘের সনদ মোতাবেক। ভারতের অবস্থান হল ভারত-পাক সমস্যা হল দ্বিপাক্ষিক এবং সিমলা চুক্তি অনুসারে তা কেবল দ্বিপাক্ষিক স্তরেই সমাধান করা হবে। গুতেরেজের বিবৃতি কি ভারতের অবস্থানকে খণ্ডন করছে?

শিমলা চুক্তিতে বলা রয়েছে, ভারত এবং পাকিস্তান তাদের মধ্যেকার পার্থক্য দূর করবে দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে অথবা দুপক্ষের সম্মতিক্রমে কোনও অন্য শান্তিপূর্ণ উপায়ে।

ভারত সবসময়েই পার্থক্য ঘোচানোর জন্য দ্বিপাক্ষিক পথের উপরেই গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। বিশেষ করে জম্মু কাশ্মীর নিয়ে ভারত দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা ছাড়া অন্য যে কোনও সমাধানই নাকচ করে দিয়েছে।

সিমলা চুক্তিতেও দুবার  রাষ্ট্রসংঘের সনদের উল্লেখ রয়েছে। তাহলে কি মহাসচিবের এই উল্লেখের মধ্যে সমস্যা আছে?

সিমলা চুক্তিতে বলা হয়েছে দু দেশের মধ্যে সম্পর্ক পরিচালিত হবে সনদের নীতি ও উদ্দেশ্য নিয়ে। নিশ্চিতভাবেই এই সনদে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিসাধনের একটি সাধারণ ভিত্তি সনদে রয়েছে।

আরও পড়ুন, ছেঁড়া-খোঁড়া ইতিহাস, তালি দেওয়ার ভবিষ্যৎ

নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, এই সংস্থানকে রাষ্ট্রসংঘের সনদ মোতাবেক জম্মু কাশ্মীর সমস্যার সমাধান- এভাবে পাঠ করা চলে না।

রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব বলেছেন জম্মুকাশ্মীরের চূড়ান্ত অবস্থা স্থির হবে শান্তিপূর্ণ উপায়। এই চূড়ান্ত অবস্থা বলতে উনি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

আমার ধারণা মহাসচিব সিমলা চুক্তি ঠিকভাবে বোঝেননি। ওতে অবস্থা (স্ট্যাটাস) বলে কোনও শব্দই নেই। ওখানে জম্মু কাশ্মীরের চূড়ান্ত মীমাংসার কথা বলা আছে।

আমার মনে হয়, চূড়ান্ত অবস্থা ও চূড়ান্ত মীমাংসার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। মহাসচিব চুক্তিতে যা নেই তেমন শব্দ বলতে পারেন না।

দ্বিতীয়ত সিমলা চুক্তিতে জম্মুকাশ্মীর সমস্যার সমাধান রাষ্ট্রসংঘের সনদ মোতাবেক করার কথা বলা নেই। ওখানে সুনির্দিষ্টভাবে বলা রয়েছে দ্বিপাক্ষিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অথবা ভারত ও পাকিস্তানের উভয়ের সম্মতিক্রমে অন্য কোনও উপায়ে সমস্যার সমাধান হবে। ফলে রাষ্ট্রসংঘের সনদ ভারত-পাক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধার্য হতে পারে না।

সেক্ষেত্রে মহাসচিব আরও একবার সিমলা চুক্তি বুঝতে পারেননি এবং সেইসব প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন, আসলে চুক্তি যা নির্দিষ্টভাবে খারিজ করে দিয়েছে।

Read the Full Story in English

jammu and kashmir United Nations Article 370
Advertisment