Advertisment

জম্মু কাশ্মীর: আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে গিয়ে কি কিছু সুবিধে হবে পাকিস্তানের?

জম্মু কাশ্মীরের বিষয়টি আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের এক্তিয়ারে পড়বে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে কারণ ভারত প্রথম থেকে বলে আসছে এটি এ দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Pakistan, ICJ

শাহ মেহমুদ (ফাইল)

জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ সে দেশের এক টিভি চ্যানেলকে এ কথা জানিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এক সহারী ফিরদৌস আশিক আওয়ার বলেছেন কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হবে।

Advertisment

আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত কী?

১৯৪৫ সালে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত প্রতিষ্ঠিত হয় রাষ্ট্র পুঞ্জের বিচারবিভাগীয় সংস্থা হিসেবে। কেবলমাত্র কোনও রাষ্ট্রই এই আদালতে হাজির হতে পারে, কোনও ব্যক্তি বা অসরকারি সংস্থা বা কোনও কর্পোরেশন বা কোনও ধরনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে না। এই আদালতে মোট ১৫ জন বিচারপতি রয়েছেন। এঁদের ৯ বছরের মেয়াদকালের জন্য নির্বাচন করা হয়। নির্বাচন করে রাষ্ট্র সংঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলি এবং রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।

আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের এক্তিয়ার কত দূর?

আন্তর্জাতি ন্যায় আদালতের এক্তিয়ার দু ধরনের। প্রথমত, বিভিন্ন দেশ এই আদালতের কাছে কোনও আবেদন করলে সে সম্পর্কিত আইনি বিষয়গুলির বিতর্কিত দিকগুলি দেখা। দ্বিতীয়ত, এর একটি পরামর্শমূলক আওতা রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন সংস্থার অনুরোধে বিভিন্ন আইনি বিষয়ে এই আদালত পরামর্শ দিয়ে থাকে। বিশেষ সংস্থাই এই ধরনের অনুরোধ জানাতে পারে।

আরও পড়ুন, পাক সেনাপ্রধান বাজওয়ার মেয়াদ বৃদ্ধি কী ইঙ্গিত করে?

আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের এক্তিয়ার কখন আবশ্যিক হয়ে ওঠে?

কোনও কোনও দেশ আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের এক্তিয়ারকে স্বীকৃতি দেয় একটি ছাড়পত্র দেওয়ার মাধ্যমে। ভারত এ ছাড়পত্র দিয়েছে ১৯৭৪ সালে। পাকিস্তান এ ছাড়পত্র দিয়েছে ২০১৭ সালে। এই ছাড়পত্র দেওয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশ (যে আন্তর্জাতিক ন্যায় আাদলতের আবশ্যিক এক্তিয়ার মেনে নিয়েছে) একইরকম দায়বদ্ধতার অঙ্গীকারবদ্ধ অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধে এই আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে।

এতদসত্ত্বেও জম্মু কাশ্মীরের বিষয়টি আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের এক্তিয়ারে পড়বে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে কারণ ভারত প্রথম থেকে বলে আসছে এটি এ দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়।

যদি আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের এক্তিয়ারভুক্ত কিনা সে নিয়েই সংশয় থাকে তখন কী হবে?

আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের এক্তিয়ার নিয়ে কোনও সংশয় থাকলে সে সম্পর্কে বিধিবদ্ধ আইনের ৩৬ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত নিজেই।

আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে মামলা দায়ের করার পদ্ধতি কী?

একপাক্ষিক আবেদনের ক্ষেত্রে ১৯৭৮ সালের আদালতের বিধি অনুসারে আবেদনকারী দেশ (এক্ষেত্রে পাকিস্তান)-কে বিষয়টি আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের এক্তিয়ারভুক্ত বলে নির্দিষ্টভাবে দেখাতে হবে। এ ছাড়া তাদের দাবির নির্দিষ্ট প্রকৃতিও বিবৃত করতে হবে।

যে দেশের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে, তার সম্মতি ছাড়া আদালতের কাজ শুরু করা যাবে না। এ ছাড়া সওয়াল জবাবের শুরুতে নিজেদের এক্তিয়ার স্থির করতে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহকে আইন ও তথ্য সম্পর্কিত সমস্ত তথ্যাবলীর বিষয়ে সওয়াল করার এবং এ ব্যাপারে প্রমাণ দাখিল করার অনুরোধ জানাতে পারে।

আরও পড়ুন, “সিমলা চুক্তি বুঝতেই পারেননি রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব”

আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের সিদ্ধান্ত কি সংশোধিত হতে পারে?

কোনও রায় সংশোধন করা হতে পারে যদি দেখা যায় আদালতের কাছে এ ব্যাপারে কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল না, এবং রায় ঘোষিত হওয়ার পর কোনও পক্ষ যদি সংশোধনের আবেদন করে। যে পক্ষ রায়ের সংশোধন চাইছে, তাদের আদালতের কাছে নিশ্চিত করে দেখাতে হবে যে বর্তমান তথ্য আদালতে ইতিমধ্যেই উপেক্ষিত হয়নি।

ভারত বা পাকিস্তান কি আগে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে?

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কুলভূষণ যাদবকে নিয়েই মামলা হয়েছে। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের একটি সামরিক আদালত ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছিল। এ নিয়ে ২০১৭ সালের ৮ মে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের শরণাপন্ন হয় ভারত।

এ বছরের ১৭ জুলাই এ নিয়ে এক প্রেস বিবৃতিতে আদালত জানায় ভারতীয় নাগরিত কূলভূষণ যাদবের আটক ও বিচারের ব্যাপারে ভিয়েনা কনভেনশনের ৩৬ নং অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান।

Read the Full Story in English

jammu and kashmir pakistan Article 370
Advertisment