জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ প্রায় ৩৪ বছর আগে শ্রীনগরে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত বিচারক নীলকান্ত গাঞ্জুকে হত্যার পিছনে 'বৃহত্তর ষড়যন্ত্র' উদঘাটনের জন্য জনসাধারণের কাছে সাহায্য চেয়েছে। ৪ নভেম্বর, ১৯৮৯ সালে গাঞ্জুর হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। আর, সেই হত্যাকাণ্ড যেন পরপর ঘটে যাওয়া একের পর এক ঘটনাকে সাজিয়ে তুলতে সাহায্য করেছিল। ১৯৯০ সালের গোড়ার দিকে উপত্যকা থেকে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ব্যাপকভাবে দেশত্যাগের দিকে পরিচালিত করেছিল এই সব ঘটনা। যে ক্ষত আজও নিরাময় হয়নি। বরং, জম্মু ও কাশ্মীরে হিন্দু-মুসলিম ফাটলকে চওড়া করেছে। ভারতকে ঠেলে দিয়েছে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের দিকে।
জঙ্গিদের তৎপরতা
জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ) ১৯৮৯ সালে পাকিস্তান থেকে কাশ্মীরে একে৪৭ রাইফেল নিয়ে এসেছিল। শ্রীনগরের হরি সিং হাইতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল বদগামের চাদুরা এলাকার প্রভাবতী নামে এক কাশ্মীরি পণ্ডিত মহিলাকে। এই হত্যার মাধ্যমে সন্ত্রাসের প্রচার শুরু করেছিল জঙ্গিরা। ১৪ মার্চ, ১৯৮৯ সালে রাস্তায় খুন হওয়া প্রভাবতীর হত্যাকারীদের আর কখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই বছরের ২১ আগস্ট, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা মহম্মদ ইউসুফ হালওয়াইকে দিবালোকে শ্রীনগরের কেন্দ্রস্থলে কালাশপোড়ায় হত্যা করা হয়। কিন্তু, প্রশাসন সেভাবে সক্রিয়া না-হওযায় এরপর জঙ্গিরা তাণ্ডব চালাতে থাকে। বিজেপি নেতা টিকালাল তাপলু, গাঞ্জু, দূরদর্শনের আধিকারিক লাসা কউল ও সমাজসেবী পিএন ভাটকে হত্যা করে।
আরও পড়ুন- লোকসভায় বিল, জম্মু-কাশ্মীরে ভোটে বড় লাভের অঙ্ক বিজেপির, কীভাবে?
নীলকান্ত গাঞ্জু
অবসরপ্রাপ্ত দায়রা জজ যখন হরি সিং হাই স্ট্রিটে জম্মু ও কাশ্মীর ব্যাংকের শাখায় গিয়েছিলেন তখন তিন জেকেএলএফ জঙ্গি গাঞ্জুকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করেছিল। ১৯৬৮ সালের আগস্টে, গাঞ্জু পুলিশ ইনস্পেক্টর অমর চাঁদের হত্যার জন্য দুই বছরের বিচারের পর জেকেএলএফের প্রতিষ্ঠাতা মকবুল ভাট ও অন্য একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের দ্বারা সাজা নিশ্চিত করা হয়েছিল এবং ১৯৮২ সালে সুপ্রিম কোর্ট সেই সাজা বহাল রেখেছিল। মকবুল ভাটকে ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির তিহার জেলে ফাঁসি দেওয়া হয়। জেকেএলএফ এর আগে মকবুল ভাটকে অপহরণ করে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল। ব্রিটেনে ভারতীয় কূটনীতিক রবীন্দ্র মাত্রে-কে হত্যা করে ভয় দেখাতে চেয়েছিল। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। মকবুল ভাটের ফাঁসি হয়।