Advertisment

Explained: জাপানে ভূমিকম্পের পরই বারবার জারি হচ্ছে সুনামি সতর্কতা, কেন দ্বীপদেশেই আছড়ে পড়ে সুনামি?

সুনামির ঢেউ জাপানের উপকূলীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি অংশে আঘাত হেনেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Japan Earthquake

জাপানে ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি।

সুনামির ঢেউ সোমবার (১ জানুয়ারি) জাপানের উপকূলীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি অংশে আঘাত হেনেছে। দেশটির উত্তর-মধ্য অঞ্চলে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের পর জরুরি পরিস্থিতিতে নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে সতর্কতা। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, একটি টেলিভিশন ভাষণে, নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সরকারি নির্দেশ মানার অনুরোধ করেছেন। তিনি তাঁদের সতর্ক করে জানিয়েছেন যে আরও শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা। একইসঙ্গে সুনামির আরও প্রবল ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে জাপানের উপকূলে। এমনটাই জানিয়েছেন কিশিদা।

Advertisment

সুনামি কী?

সুনামি একটি জাপানি শব্দ। যার অর্থ 'বন্দর তরঙ্গ'। সমুদ্রের নীচে ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট দৈত্যাকার সমুদ্রের তরঙ্গগুলোর একটি সিরিজ এই সুনামি। যখন সমুদ্রের নীচে ভূমিকম্প হয়, তখন সমুদ্রের তলটির একটি বড় অংশ হঠাৎ করে ওপরের দিকে বা নীচের দিকে সরে যেতে পারে। যার ফলে হঠাৎ করে বিপুল পরিমাণ জলের স্থানচ্যুতি ঘটে। যাতে সুনামির তরঙ্গ সৃষ্টি হয়। সাগরে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটলে একই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। আগ্নেয়গিরি থেকে প্রবাহিত লাভা তার চারপাশের জলকে স্থানচ্যুত করে এবং সেই জল একটি বড় তরঙ্গে পরিণত হতে পারে। নাসার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'বড় সুনামি সাধারণত গভীর সমুদ্রে শুরু হয়। যেখানে প্রচুর পরিমাণে জল স্থানচ্যুত হতে পারে, সেখানে শুরু হয় বড় সুনামি। ঢেউটি তীরের কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গেই সমুদ্র অগভীর হওয়ার পাশাপাশি এটি লম্বা হতে থাকে।' সুনামি তরঙ্গগুলো কয়েকশো ফুট লম্বা হতে পারে। গভীর জলের ওপর জেট প্লেনের মত দ্রুত যেতে পারে। অগভীর জলে পৌঁছনোর সময় আবার তা ধীর হয়ে যায়। যাইহোক, সমস্ত ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের জেরে কিন্তু সুনামি হয় না। সুনামির গঠন- সমুদ্রতলের আকৃতি, ভূমিকম্পের দূরত্ব এবং দিক-সহ বিভিন্ন কারণের ওপর নির্ভর করে।

আরও পড়ুন-  ‘হিট অ্যান্ড রান’ আইনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে ট্রাক চালকদের ধর্মঘট, কী এমন আছে এই আইনে?

জাপান কেন ভূমিকম্প এবং সুনামি বেশি হয়?

তার অবস্থানের কারণে। জাপান 'প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ার' বরাবর অবস্থিত, যা বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকম্প টেকটোনিক বেল্ট। এখানে বিশ্বের অনেক ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। রিং অফ ফায়ারের মধ্যে, প্যাসিফিক প্লেট, ইউরেশিয়ান প্লেট এবং ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেট-সহ বিভিন্ন টেকটোনিক বেল্ট রয়েছে। যার একের সঙ্গে অপরের সংঘর্ষে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং সুনামি তৈরি হয়। ২০১১ সালে, জাপানে একটি ৯.০ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এর ফলে সুনামি জাপানের উত্তর-পূর্ব উপকূলে আঘাত হানে। যাতে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। কয়েক হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হন। এই সুনামির তরঙ্গগুলো ফুকুশিমা বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যা সোভিয়েত ইউনিয়নে ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল বিপর্যয়ের পর সবচেয়ে গুরুতর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুর্ঘটনা।

আরও পড়ুন- ২০২৪ কি লিপ ইয়ার? কেন প্রতি চার বছর অন্তর লিপ ইয়ার হয় না?

Japan earthquake tsunami
Advertisment