গত সপ্তাহে জাপানি সংস্থা ফুজিফিল্ম ঘোষণা করেছে, তারা আভিগান নামক ওষুধের তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করেছে। এই ওষুধ করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসায় বেশ কিছু দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে।
কোভিড ১৯-এর কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকায় অন্য রোগের ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। ম্যালেরিয়া, এইচআইভি, আর্থ্রাইটিস, ইত্যাদির ওষুধ কোভিড ১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে - যার বিভিন্ন রকম ফল মিলছে।
আভিগান অ্যান্টি ইনফ্লুয়েঞ্জা ওষুধ ২০১৪-১৬-য় ইবোলা মহামারীর সময়ে ভাল ফল দিয়েছিল, এবারেও তেমনটাই আশা করা হচ্ছে। এর জেনেরিক নাম ফাভিপিরাভির।
ফাভিপিরাভির কী ?
ফুজিফিল্ম কোম্পানির ইধীনস্থ টয়োমা কেমিক্যালস এ ওষুধ নির্মাতা। এটি ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য ব্যবহৃত হয়। ২০১৪ সালে জাপানে এ ওষুধ স্বীকৃত হয় এবং আভিগান নামে বাজারজাত হয়।
ইবোলা ভাইরাস মহামারীর সময়ে জাপান ফাভিপিরাভির আপৎকালীন ওষুধ হিসেবে ২০১৪-১৬ সময়কালে উপদ্রুত দেশগুলিতে রফতানি করে। ইবোলায় ১১ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছিল।
ওয়ার্ডে প্রকাশিত নিবন্ধ অনুসারে এই ওষুধ প্রয়োগে মৃত্যুহার ৩০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে কমে এসেছিল।
টাইমের রিপোর্ট অনুসারে জাপান এবং আমেরিকার মত দেশ কয়েক বছর রে এই ওষুধ বহুল পরিমাণে মজুত করেছে। মার্স মহামারীর সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতেও এ ওষুধ মজুত করা হয়।
করোনা অতিমারীতে প্রয়োগ কোভিড ১৯ রোগে স্বল্প থেকে মাঝারি সংক্রমিতদের ক্ষেত্রে এ ওষুধ ভাল কাজ দিচ্ছে। রোগ খারাপ অবস্থায় পরিণত হওয়া আটকাতে এ ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে সংক্রমণ অনেকগুণ বেড়ে গেলে এ ওষুধ তেমন কাজ করছে না বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান পত্রিকা।
কয়েকটি গবেষণা বলছে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে ভ্রূণমৃত্যু বা বিকৃতি। ফলে গর্ভবতীদের জন্য এ ওষুধ দিতে নিষেধ করা হচ্ছে। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে করোনাভাইরাস যখন জাপানে শুরু হয়েছে, তখনই ফুজিফিল্ম আপৎকালীন ব্যবহারের জন্য বেশি পরিমাণে এই ওষুধ তৈরি শুরু করে দেয়।
বেশকিছু ক্ষেত্রে এই ওষুধ প্রয়োগের উপসর্গের উপশম হচ্ছে বলে রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। চিন তাদের রোগীদের উপর এই ওষুধ প্রয়োগ করেছে।
১৮ মার্চ চিনের বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রক ৩৪০ জন রোগীর চিকিৎসায় অতি নিরাপদ ও স্পষ্টত কার্যকর ভূমিকা নিয়েছে বলে জানিয়ে এই ওষুধকে ছাড়পত্র দিয়েছে।
২৮ মার্চ জাপানের প্রধানমন্ত্রী শি়নজো আবে বলেছেন তাঁর সরকার কোরনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহারের ট্রায়ালের জন্য যাতে দ্রুত ছাড়পত্র পাওয়া যায় সে ব্যাপারে যথাসম্ভব উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন