আমেরিকান বহুজাতিক কর্পোরেশন জেনারেল ইলেকট্রিক (GE) বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ঘোষণা করেছে যে ভারতীয় বিমান বাহিনীর (IAF) জন্য ফাইটার জেট ইঞ্জিন তৈরি নিয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL)-এর সঙ্গে তারা একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। গুরুত্বপূর্ণ জেট ইঞ্জিন প্রযুক্তি হস্তান্তর সহজতর করার জন্য যুগান্তকারী এই চুক্তি প্রত্যাশিতই ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন। ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে মার্কিন কংগ্রেসের একটি যৌথ সভায় তাঁর ভাষণ দেওয়ার প্রস্তুতির মধ্যেই চুক্তির বিষয়টি সামনে এল।
এই চুক্তি ভারতের হালকা যুদ্ধবিমান (LCA) Tejas Mk2-এর জন্য GE-এর তৈরি F414 ইঞ্জিনের লাইসেন্সের অধীনে ভারতকে সেই সব ইঞ্জিন উৎপাদনের অনুমতি দেবে। মাত্র কয়েকটি দেশ - যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স- যুদ্ধবিমানকে শক্তি জোগাতে পারে এমন একটি ইঞ্জিন তৈরি করার মত প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি এবং ধাতুবিদ্যা আয়ত্ত করেছে। ভারত এই তালিকায় নেই। তা সত্ত্বেও ক্রায়োজেনিক রকেট ইঞ্জিন-সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি তৈরিতে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত।
তবে, যুদ্ধবিমানগুলোর জন্য উন্নত ইঞ্জিন তৈরির প্রযুক্তি রয়েছে এমন দেশগুলো ঐতিহ্যগতভাবে সেই সব প্রযুক্তি অন্য দেশের সঙ্গে ভাগ করে নিতে ইচ্ছুক নয়। এই কারণেই বৃহস্পতিবার ভারতে GE-এর F414s তৈরির চুক্তিটি অবশ্যই নতুন রাস্তা দেখাবে। সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই চুক্তিটি শেষ পর্যন্ত একটা যুগের অবসান ঘটাল। সেই যুগের অবসান, যেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তাঁর জমানায় ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে অভিযোগ করেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমী দেশগুলো ভারতের ওপর বাতিল প্রযুক্তি চাপিয়ে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন- গো ফার্স্টের দেউলিয়া হওয়ার আবেদন, সমাধান প্রক্রিয়া রয়েছে কোন পর্যায়ে?
শুধু তাই নয়, সেই বছর ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী, পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীগুলো থেকে ভারত পরমাণু শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। যাকে মনমোহন সিং বলেছিলেন, 'পরমাণু মূলধারা এবং প্রযুক্তি ইস্যুতে কড়া শাসনের অধীনে থাকা ভারতের কয়েক দশকের বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটল।'