জেহাদ অনুপ্রাণিত সন্ত্রাসবাদে মহিলাদের যোগাযোগ ও তার চরিত্র নিয়ে একটি বড় মাপের গবেষণা চলছে। ঘটনাচক্রে, শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত আত্মঘাতী জঙ্গিদের মধ্যে একজন মহিলাও ছিল। নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পিএইচডি ছাত্র এই গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন। আল কায়দা অনুপ্রাণিত জঙ্গি সংগঠনগুলি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে ব্র্যান্ডিস বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমি জেহাদ প্রকল্প। সেখান থেকেই এই গবেষণার জন্য তথ্য নেওয়া হবে।
যা যা এখনও অবধি জানা গিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে
মহিলা নিয়োগ ক্রমবর্ধমান
গবেষকরা বলছেন তথ্য থেকে জানা গেছে, জঙ্গি সংগঠনগুলিতে মহিলাদের নিয়োগ বাড়ছে। জঙ্গি সংগঠনে ১৯৯০ সালের পর জন্ম এমন মহিলাদের সংখ্যা ৩৪ শতাংশ। সংগঠনগুলিতে ওই সময়কালে জন্ম এমন পুরুষের সংখ্যা মাত্র ১৫ শতাংশ। গবেষকরা বলছেন এই তথ্য থেকে বোঝা য়াচ্ছে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিতে মহিলাদের যুক্ত থাকার পরিমাণ বাড়ছে।
বিভিন্ন ভূমিকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে পিএইচডি ছাত্র ক্রিস্টিন ব্রাগ-কে উদ্ধৃত করা হয়েছে। তিনি বলেন, "মহিলাদের জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা বা তার বাস্তবায়নে মহিলাদের যোগাযোগ তুলনা খুব কম। পরিকল্পনায় যুক্ত থাকেন মাত্র ৫২ শতাংশ মহিলা। অন্যদিকে পুরুষের ক্ষেত্রে তা ৭৬ শতাংশ।"
গবেষণা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপক সারা ডেসমারাইস জানিয়েছেন, "জঙ্গি গোষ্ঠীতে যুক্ত মহিলাদের ভূমিকা প্রথাগত লিঙ্গবৈষম্য ভিত্তিক। সংগঠনকে সমর্থন দেওয়ার জন্য তাঁর অধিকাংশ সময়েই অন্দর সামলানোর কাজ করেন।"
পটভূমির পার্থক্য
জঙ্গি বাহিনীতে যোগ দেওয়া মহিলাদের মাত্র ২ শতাংশের অপরাধপ্রবণতার ইতিহাস রয়েছে। পুরষের ক্ষেত্রে এ অনুপাত ১৯ শতাংশ। জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়া পুরুষদের মধ্যে ১৪ শতাংশ সংগঠনে যোগ দেওয়ার আগের ৬ মাস কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল না। অন্যদিকে ৪২ শতাংশ মহিলা সংগঠনে যোগ দেওয়ার ৬ মাস আগে কর্মহীন ছিলেন।
জেহাদ পেরিয়ে
ব্রাগ আরও বলেছেন, "আমাদের দেখতে হবে অন্য সাধারণ মানুষদের সাপেক্ষে এরা কোথায় এবং কিসের ভিত্তিতে এরা আলাদা হয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসবাদের মডেল বা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার কোনও রূপরেখা আছে কিনা, তাও দেখার। একই রকম ছাঁদের অন্য ধরনের সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যদি বিষয়টির তুল্যমূল্য বিচার করতে পারলেও খুব ভাল হয়। যে ফারাক আমরা এই গবেষণায় দেখছি তা কি কেবল জিহাদ-উদ্বুদ্ধ গোষ্ঠীগুলির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য! সংক্ষেপে বললে, এ ব্যাপারে অনেক কাজ করার রয়েছে।"
(এই গবেষণাপত্রটি জার্নাল অফ থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট-এ প্রকাশিত।)
Read the Story in English