সুপ্রিম কোর্ট গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া ভূমিকা গ্রহণ করেছে। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগের মামলাটি তাঁর হাত থেকে সরিয়ে নিয়েছে। এরপরে শীর্ষ আদালতের সেক্রেটারি জেনারেলের (মহাসচিবের) কাছে নির্দেশের কপি চেয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তা-ও নির্দেশ দিয়ে স্থগিত করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
জবাবে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বলেছেন যে তিনি বিশ্বাস করেন, 'ধীরে ধীরে সমস্ত নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে'। সঙ্গে যোগ করেছেন, 'সুপ্রিম কোর্ট যুগ যুগ জিও (সুপ্রিম কোর্ট দীর্ঘজীবী হোক)।' কলকাতা হাইকোর্টের কোনও বিচারপতি শীর্ষ আদালতের সঙ্গে বাক্-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন, এটা কিন্তু নতুন কিছু নয়।
২০১৭ সালের মে মাসে, কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সিএস কারনানকে দেশের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জেএস কেহরের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির বেঞ্চ আদালত অবমাননার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল। যা প্রাক্তন বিচারপতি কারনানকে বরাবরের মত ইতিহাসে স্থান করে দিয়েছে। ভারতীয় বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনও স্থায়ী বিচারপতি জেলে গেলেন। শুধু ওই জেলে যাওয়াই নয়।
আদালতের আদেশের তিন দিন পর, কারনান শীর্ষ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ পেতে চেষ্টা চালান। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। এর একমাস পরে, তিনি বিচারপতির দায়িত্ব থেকে অবসর নেন এবং গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে যান। যাইহোক, কয়েক দিনের মধ্যেই পুলিশ তাঁকে কোয়েম্বাটুরের একটি রিসর্টে খুঁজে পায় এবং প্রেসিডেন্সি জেলের সাজা ভোগ করানোর জন্য কলকাতায় নিয়ে আসে।
আরও পড়ুন- জিএসটিতে রেকর্ড কেন্দ্রের, এপ্রিলে সংগ্রহ ১.৮৭ লক্ষ কোটি টাকা
বিচারপতি হিসেবে কারনান কিন্তু, বরাবরই বিতর্কিত। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি এসসি/এসটি জাতীয় কমিশনের কাছে জাতিগত পক্ষপাতের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। যা ভারতের প্রথম কোনও বিচারপতি দায়িত্বে থাকাকালীন দায়ের করেছেন। ফলে, কারনানের সেই কীর্তিও ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। সেই সময় কারনান অভিযোগ করেছিলেন, 'কিছু বিচারপতি খুব সংকীর্ণ মনের। তাঁরা দলিত বিচারপতিদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে চান।'