Karur Stampede: বিজয়ের অনুষ্ঠানে মৃত্যু, ভারতে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা বাড়ছে, পিছনে কোন ভয়ংকর কারণ?

Karur Stampede: কারুর (Karur)-এ পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। শুধু রাজনৈতিক সমাবেশই নয়, ভারতে মেলা, মন্দির, রেলস্টেশন, খেলাধুলার আসরেও পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা বেড়েছে।

Karur Stampede: কারুর (Karur)-এ পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। শুধু রাজনৈতিক সমাবেশই নয়, ভারতে মেলা, মন্দির, রেলস্টেশন, খেলাধুলার আসরেও পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা বেড়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Karur Stampede

Karur Stampede: কারুরে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ফের অভিযোগগুলো তুলে ধরল।

Karur stampede: তামিলনাড়ুর করুর জেলায় তামিলাগা ভেট্রি কাজহাগম (TVK) নেতা ও অভিনেতা বিজয়ের রাজনৈতিক সমাবেশে ভয়াবহ পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ভিড় সামলাতে না পারা এবং হঠাৎ সৃষ্ট আতঙ্ক থেকে কীভাবে এমন দুর্ঘটনা ঘটে যায়, আবার কেন ভারতে বারবার এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে আলোচনায় এসেছে নতুন প্রশ্ন। 

Advertisment

সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে ঘটে যেখানে জনসমাগম অত্যধিক এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা যথাযথ নয়। একটি ছোট ট্রিগার — যেমন কেউ পড়ে যাওয়া, গুজব ছড়ানো, ভিড় ঠেলে এগোনো — পুরো ভিড়কে আতঙ্কিত করে তোলে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মানুষ দিকভ্রান্ত হয়ে একসঙ্গে ছুটতে শুরু করে। এর ফলে ঘটে কমপ্রেসিভ অ্যাসফিক্সিয়া — শরীরের ওপর চাপ পড়ায় শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়। অনেক সময় পড়ে যাওয়া কয়েকজনের ওপর অন্যরা পড়ে যায় এবং মৃত্যু বাড়তে থাকে।

আরও পড়ুন- দুর্গাপূজায় পঞ্চমী থেকেই এখন 'মহা' শব্দটা জুড়ে দেওয়ার চল, শাস্ত্র কী বলে?

Advertisment

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিজয়ের গাড়ির পিছনে কিছু মানুষ গাছে উঠে পড়েছিলেন। সেখান থেকে হঠাৎ কয়েকজন পড়ে যান নীচের ভিড়ে। মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ চারদিকে ছুটতে শুরু করে এবং ভিড়ের চাপেই দুর্ঘটনা ঘটে। বিশ্লেষকদের মতে, সমাবেশের আকার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হওয়া এবং যথেষ্ট নিরাপত্তা পরিকল্পনা না থাকার কারণেই মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।

আরও পড়ুন- নবরাত্রির ষষ্ঠীতে পুজো হয় দেবী কাত্যায়নীর, জানেন কে তিনি, কী মাহাত্ম্য?

ভারতে কেন এত বেশি পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে হয়?

ভারতে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। কারণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য: অতিরিক্ত জনসমাগম – মন্দির, মেলা, রাজনৈতিক সভা, খেলার আসর ও রেল স্টেশন সব জায়গায় ভিড় অত্যাধিক। পরিকল্পনার ঘাটতি – ভিড় কত বড় হতে পারে তা সঠিকভাবে আন্দাজ করতে না পারা। নিরাপত্তা কর্মীর অভাব – যথেষ্ট পুলিশ বা ভলান্টিয়ার না থাকার কারণে দ্রুত ভিড় সামলানো যায় না। তার ওপর সামাজিক অভ্যাস – ভারতে ব্যক্তিগত স্পেসের গুরুত্ব কম, ফলে মানুষ সহজেই একে অপরের খুব কাছে ভিড় জমায়। দেরিতে উদ্ধার কাজ – বিপুল ভিড়ের কারণে দ্রুত উদ্ধার কাজ চালানো কঠিন হয়, ফলে মৃত্যু বেড়ে যায়।

সাম্প্রতিক কিছু পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা

২০২৫ Karur Rally Stampede – বিজয়ের রাজনৈতিক সভা। ২০২৫ বেঙ্গালুরু IPL বিজয় উদযাপন – RCB-র শোভাযাত্রায় ভিড়ে মৃত্যু। ২০২৫ গোয়া শ্রী লায়ারাই দেবী মন্দির – ধর্মীয় যাত্রায় পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা। ২০২৫ দিল্লি রেলস্টেশন – ট্রেন ধরতে গিয়ে ভিড়ের চাপে ১৮ জনের মৃত্যু। ২০২৫ কুম্ভমেলায় প্রয়াগরাজ – মৌনী অমাবস্যায় ভোরবেলা ৩০ জন নিহত। এনসিআরবি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ভারতে ৩,০৭৪ জন পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। গত তিন দশকে প্রায় ৪ হাজার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন- কেন এদিনের ষষ্ঠীকে দুর্গাষষ্ঠী বলা হয়? এর পিছনে রয়েছে এই কাহিনি!

পদপিষ্ট হওয়া শুধুমাত্র ভারতের সমস্যা নয়। ২০২২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার হ্যালোউইন উদযাপনে এবং ২০১০ সালে জার্মানির 'লাভ প্যারেড'-এও ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তবে সেসব দেশে পরবর্তী সময়ে কড়া নিয়ম ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়ায় পুনরাবৃত্তি হয়নি। ভারতে কিন্তু একই ধরনের ঘটনা ঘনঘন ঘটে চলেছে। সেটা রুখতে গেলে আগাম অনুমানের ভিত্তিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা করা উচিত। প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা উচিত। জরুরি বহির্গমন পথ (Emergency Exit) তৈরি করা উচিত। ভিড়ের মাঝে সঠিক বার্তা পৌঁছনোর ব্যবস্থা রাখা উচিত। জনগণকেও সচেতন করা—হঠাৎ আতঙ্কিত না হয়ে কীভাবে আচরণ করতে হবে, তা জনগণকে জানানো উচিত।

আরও পড়ুন- ষষ্ঠীতে দুর্গাপূজার বোধন! নবরাত্রি তো শুরুই হয়ে গিয়েছে, বোধনের দরকার কী?

কারুরের মত ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল যে ভারতের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে ভিড় নিয়ন্ত্রণে সামান্য অব্যবস্থাও প্রাণঘাতী হতে পারে। সময় এসেছে শিক্ষা নেওয়ার এবং কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের, যাতে একই ভুল বারবার না ঘটে।

Karur stampede