বন্ধ ইন্টারনেট
কাশ্মীরে পাঁচ মাস ইন্টারনেট বন্ধ থাকার পর, সুপ্রিম কোর্ট ১০ জানুয়ারি জানিয়ে দিয়েছে ইন্টারনেট অ্যাকসেস সংবিধানের আওতায় থাকা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।
এই প্রথমবার সুপ্রিম কোর্ট ইন্টারনেট অ্যাকসেসকে সংবিধানের ১৯ (১) (এ) এবং ১৯ (১) (জি) অনুচ্ছেদের অংশের অন্তর্বর্তী হিসেবে দেখেছে। প্রথম ক্ষেত্রে বিষয়টি মত প্রকাশ ও কথা বলার অধিকার, দ্বিতীয়টি যে কোনও পেশা বা ব্যবসার অধিকার।
এর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কেরালা হাইকোর্ট ইন্টারনেট অ্যাকসেসকে মৌলিক অধিকার বলে রায় দিয়েছিল।
যদিও সুপ্রিম কোর্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখা বেআইনি কাজ বলে জানিয়েছে, তবে জম্মু কাশ্মীরের ইন্টারনেট বন্ধ রাখা, যা দেশের দীর্ঘতম ইন্টারনেট শাট ডাউনের ঘটনা, তাকে বেআইনি বলে উল্লেখ করেনি।
তার বদলে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সরকারকে বলেছে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার নির্দেশকে পর্যালোচনা করে দেখতে।
পর্যালোচনার নির্দেশ সত্ত্বেও সরকার নতুন করে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিতে পারে।
আদালত একই সঙ্গে বলেছে স্বল্পকালীন ভিত্তিতে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার নির্দেশও যেনতেনপ্রকারেণ দেওয়া যাবে না, এবং তা বিচারবিভাগীয় পর্যালোচনা সাপেক্ষ। আদালত বলেছে, সংবিধানের ১৯(২) অনুচ্ছেদে যেভাবে বলা রয়েছে তেমন ভাবেই ইন্টারনেট অ্যাকসেস সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়টি মত প্রকাশের অধিকারের উপর লাগাম দেওয়ার মতই সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
কাশ্মীরের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা যথার্থ ছিল কিনা, সে নিয়ে কিছু না বলে শীর্ষ আদালত কেবলমাত্র এ সিদ্ধান্তকে পর্যালোচনা করতে বলেছে।
১৪৪ ধারা
১৯৭৩ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা মারফৎ গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়ে আদালত বলেছে, এ ধরনের প্রতিরোধমূলক নির্দেশকে নাগরিকদের আইনি মত প্রকাশ রোধ করার হাতিয়ার করে তোলা যায় না।
জম্মু কাশ্মীর সরকার বলেছিল, ১৪৪ ধারা বলবৎ করার নির্দেশ আদালত পরীক্ষা করতে পারে না। এ সওয়াল খারিজ করে দিয়েছে আদালত। আদালত রাজ্য সরকারকে আদেশ দিয়েছে, রাজ্যের যে সমস্ত নির্দেশের ফলে নাগরিকদের জীবনে প্রভাব পড়তে পারে, সে সব নির্দেশই প্রকাশ করতে হবে, যাতে নাগরিকরা সে নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।
১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ দেওয়ার সময়ে ম্যাজিস্ট্রেটদের সংবেদনশীল হতে বলেছে আদালত। বলা হয়েছে, তাঁরা যেন নিরাপত্তা ও নাগরিকদের স্বাধীনতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখেন। আদালত বলেছে, সংবেদনশীল না হয়ে এ ধরনের নির্দেশ জারি করলে মৌলিক অধিকার খর্ব হবে।