Kashmir’s connection with philosophy and practice of yoga: দশম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে কাশ্মীরে পড়ুয়াদের সঙ্গে সময় কাটালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কারণ, যোগদর্শন এবং যোগ অনুশীলনের সঙ্গে কাশ্মীরের গভীর এবং দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্যই ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে শ্রীনগরে তাঁর বক্তৃতায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কাশ্মীরকে 'যোগ এবং ধ্যানের দেশ' বলে বর্ণনা করেছেন।
কাশ্মীরে শৈব ঐতিহ্য
৮৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে কাশ্মীরে একটি শৈব ঐতিহ্যের উদ্ভব হয়েছিল। সেই সময় গুর্জর-প্রতিহারদের সাম্রাজ্যকে, মুসলমান আক্রমণের আগে উত্তর ভারতে শেষ মহান হিন্দু সাম্রাজ্য হিসেবে মনে করা হচ্ছিল। গুর্জর-প্রতিহাররা ভারতের গাঙ্গেয় সমভূমির বেশিরভাগ অংশ শাসন করতেন। কাশ্মীরের শৈব দর্শন ১০ শতকে অভিনব গুপ্তের মাধ্যমে উপত্যকার বাইরে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। অভিনব গুপ্ত 'ত্রিকা' বা ত্রিত্বের ধারণা উত্থাপন করেছিলেন। যার ফলে কাশ্মীরের শৈবধর্ম 'ত্রিকা শৈববাদ' নামেও পরিচিতি লাভ করেছিল। যোগের দর্শন এবং অনুশীলনগুলোও ত্রিকা শৈবধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যার সঙ্গে গোরক্ষনাথের নাথ পাঠশালা এবং সন্ন্যাসীদের দশনামী সম্প্রদায়ের মত হঠযোগ ঐতিহ্যেরও গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র ছিল।
ত্রিকা যৌগিক অনুশীলন
তান্ত্রিক ঐতিহ্যের দীক্ষা নেওয়া ছিল ত্রিকা যৌগিক অনুশীলনের একটা পদ্ধতি। এক্ষেত্রে মালিনিবিজয়োত্তর তন্ত্র হল একটি মূল উৎস, যার পাঠ্য দীক্ষার তাৎপর্যকে তুলে ধরে। সেই তাৎপর্য হল, 'দীক্ষা ছাড়া, শৈব যোগের কোনও মূল্য নেই।' মালিনীবিজয়োত্তর তন্ত্র আরও বলে, 'যে যোগীন ভঙ্গিমা এবং মনকে আয়ত্ত করেছে, প্রাণশক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, ইন্দ্রিয়কে বশীভূত করেছে, ঘুমকে জয় করেছে, ক্রোধ ও উত্তেজনাকে জয় করেছে এবং যিনি প্রতারণা থেকে মুক্ত, তাঁদের উচিত শান্ত থাকা, আনন্দদায়কভাবে যোগ অনুশীলন করা। এই অনুশীলনের জন্য গুহা বা মাটির কুঁড়েঘর সবচেয়ে ভালো।'
আরও পড়ুন- সীমান্তে উত্তাপ কমাতে তৎপর ভারত-চিন! শীঘ্রই জিনপিঙের সঙ্গে বৈঠকের পথে মোদী?
কাশ্মীর নামের উৎপত্তি
পণ্ডিতদের একাংশের ধারণা, কাশ্মীর নামটি এসেছে ঋগ্বেদীয় ঋষি কাশ্যপের থেকে। মনে করা হয় যে ঋষি কাশ্যপ হলেন, বৈদিক ঐতিহ্যের সাত জন প্রাচীন ঋষির একজন। এই ধারণা অনুযায়ী, কাশ্মীর হল কাশ্যপ শব্দের অপভ্রংশ। অথবা, ঋষি কাশ্যপের হ্রদ। কাশ্মীরের যোগিক ঐতিহ্যগুলোও পূজনীয় ঋষিদের দ্বারা অনুসরণ করা ধ্যান এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন থেকে উদ্ভূত বলেই মনে করা হয়। তবে কাশ্মীরের যৌগিক ঐতিহ্যের প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন অভিনবগুপ্ত। তাঁর বিশ্বকোষীয় গ্রন্থ, তন্ত্রলোক হল তন্ত্র দর্শনের মূল পাঠ্য। তন্ত্রলোকের ৩৭টি অধ্যায়ে কৌল এবং ত্রিকার ঐতিহ্যের সমস্ত বিষয়ের কথা বলা আছে। অভিনবগুপ্তের শিক্ষায় শারীরিক অনুশীলনের বদলে মানসিক এবং আধ্যাত্মিক অনুশাসনে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।