Advertisment

কেরালায় সোনা পাচারের রাঘব বোয়ালরা বেঁচে যায় কী করে?

চোরাচালানকারীরা প্রায়ই সেলিব্রিটি ও সিনেমা জগতের ব্যক্তিত্বদের এক কেন্দ্র থেকে আরেক কেন্দ্রে সোনা পাচারের কাজে ব্যবহার করে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Kerala Gold Smuggling

কেরালায় গত কয়েক বছরে বহু টন সোনা পাচার হয়েছে, সেসব সোনা গয়না হিসেবে স্বর্ণালঙ্কারের দোকানে শোভা পেয়েছে

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক কেরালায় ৩০ কিলোগ্রাম বেআইনি সোনা পাচারের ঘটনার তদন্তভার এনআইএ-কে দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাজ্যে মধ্য প্রাচ্য থেকে সোনা পাচারের দীর্ঘ ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কেরালায় গত কয়েক বছরে বহু টন সোনা পাচার হয়েছে, সেসব সোনা গয়না হিসেবে স্বর্ণালঙ্কারের দোকানে শোভা পেয়েছে,শুল্ক বা অন্যান্য সব করই ফাঁকি পড়েছে তাতে। শুল্ক বিভাগ ও ডিআরআই সোনা বাজেয়াপ্ত করেছে, কেরিয়ারদের গ্রেফতারও করা হয়েছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক পাচারে যুক্ত রাঘব বোয়ালরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পলাতক।

Advertisment

কেরালায় সোনা পাচার কত বড় ব্যবসা?

শুল্কবিভাগের সূত্রের মতে ২০১৯-২০-তে কাস্টমস ও ডিআরআই ৫৫০ কিলোগ্রাম বেআইনি সোনা বাজেয়াপ্ত করেছে। এটি একটি সর্বকালীন রেকর্ড। মনে রাখতে হবে, যত সোনা পাচার হয়েছে তার সামান্য অংশই বাজেয়াপ্ত হয়। তা সত্ত্বেও, সূত্র বলছে ভারতে যত সোনা বাজেয়াপ্ত হয়েছে, এটি তার ১৫ শতাংশ। ২০১৮-১৯ সালে এ রাজ্য থেকে বাজেয়াপ্ত হয় ৪০১ কিলোগ্রাম সোনা।

আরও পড়ুন, কেরালার সোনা পাচার, কূটনৈতিক কার্গো ও এক পলাতক মহিলা

পাচার করা সোনার এত চাহিদা কেন?

বর্তমান বাজার দর অনুসারে এক কিলোগ্রাম পাচার করা সোনায় শুধু আমদানি শুল্কতেই লাভ থাকে ৫ লক্ষ টাকা। পাচার করা সোনা দোকানে গয়না হিসেবে যাওয়া পর্যন্ত এই কর ফাঁকি চলতই থাকে, ফলে সব মিলিয়ে ডিলাররা প্রচুর লাভ করে।

পাচারকারীদের মোডাস অপারেন্ডি কী?

মোডাস অপারেন্ডির খুব বদল গত বেশ কয়েক বছরে হয়নি। শুল্কবিভাগের সূত্র জানিয়েছে যে "এই কেরিয়ারেরা, যারা সাধারণত গ্রেফতার হয়ে থাকে, কখনওই তাদের কেরালা বা উপসাগরীয় দেশের লিং দেয় না। সূত্রের কথা মত, একবার কোনও একজন প্যাসেঞ্জারকে যদি গোল্ড কেরিয়ার হিসেবে স্থির করা হয়ে যায় এবং তার শরীর বা ব্যাগেজে সোনা লুকোনো হয়ে যায়, তার পর এই দলের সদস্যরা, ওই প্যাসেঞ্জারের ফোটো বিমানবন্দরের বাইরে বা নির্দিষ্ট জায়গায় অপেক্ষারত ব্যক্তির কাছে পাঠিয়ে দেয়। ওই ব্যক্তি সোনা নিয়ে যায়।"

ফলে এই কেরিয়ার কেরালায় তার কাছ থেকে কে সোনা নেবে সে কথাই জানতে পারে না। তার কাছ থেকে যে সোনা নেবে তার উপরেই বিষয়টা নির্ভর করে। সূত্রটি জানিয়েছে "আমরা যদি এই কেরিয়ারকে পাকড়াও করেও ফেলি, তার কাছ থেকে কে সোনা নিতে আসবে সে কথাই জানা যায় না, কে এই সুতোর শেষ আছে তা জানার তো কোনও প্রশ্নই ওঠে না। ফলে কেরিয়ার একবার ধরা পড়ে গেলে তার পর সবাই উধাও হয়ে যায়।" এভাবেই বড় মাথারা আড়ালে থেকে যেতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্র।

আরও পড়ুন, পেট্রোলিং পয়েন্ট কী, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় এগুলির গুরুত্ব কত?

সূত্রের কথায়, চোরাচালানকারীরা প্রায়ই সেলিব্রিটি ও সিনেমা জগতের ব্যক্তিত্বদের এক কেন্দ্র থেকে আরেক কেন্দ্রে সোনা পাচারের কাজে ব্যবহার করে।

শুল্কবিভাগ সোনা চোরাচালান আটকাতে পারছে না কেন?

ভারতীয় শুল্ক বিভাগের কাছে একটা বড় সমস্যা হল মধ্যপ্রাচ্যে তদন্তে সীমাবদ্ধতা। বেশ কয়েকবার এজেন্সির তরফ থেকে চোরাচালানের মাথাদের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করা হয়েছে। সে নোটিস জারি থাকা কালীনই অনেক সন্দেহভাজন কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে নেমে সড়কপথে ভারত-নেপাল সীমান্ত ভারতে ঢুকে পড়ে।

ইমিগ্রেশন ও সীমান্ত চেকিংয়ে ঘাটতির কারণেও এরা সহজে সীমান্ত পেরোতে পারে, যা কেরালা বিমানবন্দরে কড়া নজরদারির মধ্যে সম্ভব নয়। একবার নেপাল থেকে ভারতে প্রবেশ করে ফেললে রেল বা সড়কপথে কেরালা পৌঁছে যেতে পারে নজর এড়িয়ে, বলছে সূত্র।

kerala Gold
Advertisment