কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে অর্থমন্ত্রী কেএন বালাগোপালের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল 'সাংবিধানিকভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা' নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছেন। খানের মতে, বালাগোপাল তাঁর পদাধিকারের শপথ লঙ্ঘন করেছেন। ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ন করেছেন। এনিয়ে
রাজ্যপাল ২৫ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে লিখেছেন যে 'বালাগোপাল আমার খুশি থাকার কারণটিকে কেড়ে নিয়েছেন'।
তাঁর চিঠিটি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে এবং সাংবিধানিকভাবে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নকে বলেছেন কেরলের রাজ্যপাল। চিঠিতে আরিফ মহম্মদ খান উল্লেখ না-করলেও, তা পড়ে প্রত্যেকেরই ধারণা হয়েছে যে তিনি কেরলের অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে বলেছেন। এর কারণ, এর আগে রাজ্যপাল ১৭ অক্টোবর তাঁর সরকারি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি বার্তা পোস্ট করেছিলেন।
সেই বার্তায় কার্যত বরখাস্তের হুমকিই দিয়েছিলেন কেরলের রাজ্যপাল। বার্তায় তিনি লিখেছিলেন, 'রাজ্যপালকে পরামর্শ দেওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদের রয়েছে। কিন্তু, কোনও মন্ত্রীর ব্যক্তিগত মন্তব্য যদি রাজ্যপালের কার্যালয়ের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করে, তবে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে এমনকী, মর্যাদাও কেড়ে নেওয়া হতে পারে।'
আরও পড়ুন- স্যাটেলাইট ফোন সঙ্গে রেখে বিপত্তি, চামোলিতে গ্রেফতার সৌদি সংস্থার ব্রিটিশ আধিকারিক
কেরলে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এলডিএফ) সরকারের নেতৃত্বে রয়েছে সিপিএম। রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের মন্তব্যের পর সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। প্রতিক্রিয়ায় সিপিএম কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে যে দেশের সংবিধান রাজ্যপালকে 'স্বৈরাচারী ক্ষমতা' দেয়নি। আর, বিরোধী দলের কেরল সরকারের বিরুদ্ধে খানের 'রাজনৈতিক পক্ষপাত' প্রকাশ্যে এসে গেছে।
তারপরে, বিজয়ন নিজেই একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে তিনি জানান যে রাজ্যপালের ক্ষমতা 'খুবই সীমিত। যদি কেউ ঘোষণা করেন যে তিনি সংবিধান এবং আইনি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করবেন আর সেই পথ নেবেন, তবে তাকে বৈধ বলা যাবে না।' বিজয়ন এই কথা বললেও, সংবিধানের ১৬৪ (১) ধারা অনুযায়ী মন্ত্রীরা রাজ্যপালের সম্মতিতেই দফতরের দায়িত্বে পেয়েছেন। আর, কেরলের অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হাত ধুয়ে লাগতে সংবিধানের সেই ধারাকেই হাতিয়ার করেছেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। এমনটাই অভিযোগ সিপিএমের। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টও স্পষ্ট করে দিয়েছেন কোনও রাজ্যপালের কোনও মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা নেই। দেশের ইতিহাসেও কখনও তা ঘটেনি।
Read full story in English