কেশবানন্দ ভারতী মামলার চূড়ান্ত রায়, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধান সংশোধনের জন্য সংসদের ক্ষমতার সীমার ওপর 'মৌলিক কাঠামো' সংক্রান্ত মতবাদ লাগু করেছে। সোমবার সেই মামলার ৫০ বছর পূর্ণ হল। গত কয়েক দশক ধরেই, মৌলিক কাঠামোর মতবাদ বারবার সমালোচিত হয়েছে। ক্ষমতা বণ্টনের নীতিকে দুর্বল করার জন্য, সংসদের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করার জন্য এবং বিচার বিভাগের পর্যালোচনাকে অস্পষ্ট হলেও বিষয়গত রূপ দেওয়ায় সমালোচিত হয়েছে মৌলিক কাঠামোর মতবাদ।
অর্ধশতাব্দী ধরে এই মতবাদের প্রয়োগ নানাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করা। পর্যবেক্ষণগুলো বলার ধরন, মত প্রকাশ আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত 'মৌলিক কাঠামো' সংক্রান্ত মতবাদের সীমিত ব্যবহারের কথা বলেছে। কিন্তু, পরবর্তীতে দেখা গিয়েছে, আদালত মৌলিক কাঠামোকে সামনে রেখে যেখানে বিচারের ক্ষমতা হ্রাস করা হয়েছে, সেই সব সংশোধনীর অধিকাংশই বাতিল করে দিয়েছে।
• ১৯৭৩ সাল থেকে, কেশবানন্দ ভারতীর রায়ের বছর, সংবিধান ৬০ বারের বেশি সংশোধন করা হয়েছে। এই পাঁচ দশকে, সুপ্রিম কোর্ট কমপক্ষে ১৬ টি ক্ষেত্রে মৌলিক কাঠামোর মতবাদের বিরুদ্ধে সংবিধান সংশোধনী পরীক্ষা করেছে। আর, তা নানা ক্ষেত্রেই বাতিল করেছে।
• এই ১৬টি মামলার মধ্যে নয়টিতে, সুপ্রিম কোর্ট সাংবিধানিক সংশোধনী বহাল রেখেছে। যা মৌলিক কাঠামো মতবাদ লঙ্ঘনের কারণে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ছয়টি সংরক্ষণ সম্পর্কিত। যার মধ্যে রয়েছে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) এবং অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণি (ইডব্লিউএস) এবং পদোন্নতিতে সংরক্ষণের জন্য কোটা-সহ সংশোধনীও।
আরও পড়ুন- মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী বদলাতে দিল্লিতে বৈঠক চলছে, গোপন খবর ফাঁস করলেন সঞ্জয় রাউত
• সুপ্রিম কোর্ট একবারই সাংবিধানিক সংশোধনী সম্পূর্ণরূপে বাতিল করেছে। যা হল সংবিধানের (৯৯তম সংশোধনী) আইন, ২০১৪। ওই সংশোধনী অনুযায়ী জাতীয় বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমান কলেজিয়াম ব্যবস্থার বদলে ওই কমিশন তৈরি হয়েছিল। এই কমিশনের মাধ্যমে বিচারপতি নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই সংশোধনীটি ২০১৫ সালে পাঁচ বিচারপতির সংবিধানিক বেঞ্চ বাতিল করেছে। কারণ, ওই সংশোধনী 'বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা'কে হুমকির মুখে ফেলেছিল। এই বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে আদালত সংবিধানের একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য বলে রায় দিয়েছে।