হামাসের প্রাক্তন প্রধান, খালেদ মাশাল, শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) কেরলের মালাপ্পুরমে প্যালেস্তাইনপন্থী সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি, গাজায় ক্ষয়ক্ষতি রুখতে বিশ্বজুড়ে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। জামায়াতে ইসলামির যুব শাখা সংহতি যুব আন্দোলন এই সমাবেশের আয়োজন করেছিল।
মাশাল বলেছেন
গাজায় বর্তমান সংঘর্ষের মধ্যে, মাশাল প্যালেস্তাইন সম্পর্কে বলেছেন, 'আমরা একসঙ্গে জায়নবাদীদের পরাজিত করব। গাজার জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলব। কারণ, গাজাবাসী আল আকসা (মসজিদ)-র জন্য লড়াই করছেন। ইজরায়েল আমাদের বাসিন্দাদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। তারা গাজার অর্ধেকেরও বেশি ধ্বংস করেছে। তারা গির্জা, মন্দির, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকী রাষ্ট্রসংঘের প্রতিষ্ঠানও ধ্বংস করছে।' পালটা বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রন 'হামাস চরমপন্থীদের' এই সমাবেশের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন হল, কে এই মাশাল? একবার টাইম ম্যাগাজিন, মাশালকে 'দ্য ম্যান হু হন্টস ইজরায়েল' নামে অভিহিত করেছিল। মাশাল বর্তমানে কাতারে থাকেন।
খালেদ মাশাল কে?
মাশাল ১৯৫৬ সালে প্যালেস্তাইনের পশ্চিম তীরের শহর সিলওয়াদে জন্মগ্রহণ করেছেন। ১৯৬৭ সালে ইজরায়েল এবং আরব রাষ্ট্রগুলির মধ্যে যুদ্ধের পর তাঁকে পরিবার-সহ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছিল। এরপর ইজরায়েল পশ্চিম তীর জয় করে এবং দখল করে। মাশাল তখন হামাসের সদস্য হন। এই হামাস হল একটি জঙ্গি সংগঠন, যা স্বাধীন প্যালেস্তাইন গঠনের জন্য হিংসাত্মক আন্দোলনের পথ নিয়েছে। মাশাল ১৯৯৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত হামাসের পলিটব্যুরো বা এর প্রধান সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থার প্রধান ছিলেন। আল জাজিরার সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে ২০১৭ সালে তিনি বলেছিলেন, 'আমি সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। প্রথম দিন থেকেই সেখানে ছিলাম। ১৯৮৭ সালে হামাস আনুষ্ঠানিকভাবে তৈরি হওয়ার আগে থেকে আমি এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠা ও শুরু করার দায়িত্বে ছিলাম। প্রথম দিন থেকে আমি এই সংগঠনের পরামর্শদাতা পরিষদ এবং নেতৃত্বের অংশ ছিলাম।'
বর্তমানে যে দায়িত্বে
বর্তমানে, মাশাল হামাস পলিটব্যুরোর কাতারভিত্তিক 'আন্তর্জাতিক' গোষ্ঠীর প্রধান। মাশাল ১৯৬৭ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে কুয়েতে ছিলেন। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যালেস্তাইনবাদী ইসলামি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৯০ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধ শুরু হলে, ইরাকের কুয়েত আক্রমণের সময় পশ্চিমী জোট মাশালের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করলে তিনি জর্ডানে চলে যান। তারই মধ্যে কখনও সিরিয়া, কখনও আবার ইরাকেও বসবাস করেছেন মাশাল।