scorecardresearch

Explained:পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গাছের আবিষ্কার, সে গাছের আকার-আয়তন জানেন?

কী ভাবে এত বড় হল এবং এত দিন বাঁচল?

largest plant in the world
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গাছের আবিস্কার, সে গাছের আকার-আয়তন জানেন?

এক বার এক জন সই চাইতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনার মতে পৃথিবীর শ্রেষ্ট বই কোনটা? রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, নেচার অ্যাবহোরস সুপারলেটিভস। একটু ঘুরিয়ে মানেটা করলে হয়, বৃহত্তম সর্বোত্তম যা কিছু, সবই প্রকৃতির জিম্মায়। এবং প্রকৃতিতে আরও একটি সুপারলেটিভ পাওয়া গিয়েছে। সেটি গাছের জগতে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গাছের সন্ধান মিলেছে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলে। গাছটি লম্বায় ১৮০ কিলোমিটার। প্রসারিত হতে পারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত। মানে হল, মুম্বই থেকে পুণে পর্যন্ত দৈর্ঘ্য, বুঝতে পারছেন তো, রূপকথাকেও হার মানাবে।
রিবন উইড বা পোসিডনিয়া অস্ট্রেলিয়া। এর নাম। অস্ট্রেলিয়ার গ্যাসকয়েন অঞ্চলের শার্ক বে-তে এটি পাওয়া গিয়েছে। আবিস্কারের কৃতিত্ব ফ্লিন্ডার্স ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া-র গবেষকদের। গবেষকরা আরও জানিয়েছেন যে, এই গাছটির বয়স ৪ হাজার পাঁচশো বছর। গাছটি প্রজনন-অক্ষম, ক্রমোজমের সংখ্যা এই জাতীয় অন্যান্য গাছের তুলনায় দ্বিগুণ। শার্ক বে-র অগভীরতায় এবং নানা প্রাকৃতির বৈগুণ্য টপকে কী এক অসীম ক্ষমতায় বেঁচে গিয়েছে।

গাছের আকার সম্পর্কে আরও দু’কথা
রিবন উইড ২০ হাজার হেক্টর জুড়ে ছড়ানো। এর পরের যে গাছটির স্থান, সেটি আমেরিকার ইউটা-র কোয়াকিং অ্যাসপেনের ক্লোনান কলোনি। এই গাছ ৪৩.৬ হেক্টর জমিতে রয়েছে। ভারতের সবচেয়ে বড় গাছ হল হাওড়ার বোটানিকাল গার্ডেনের গ্রেট ব্যানিয়ান ট্রি। প্রবীণ এই বটবৃক্ষটি ১. ৪১ হেক্টর জমিতে নিজের বিস্তার ঘটিয়েছে।

এত বড় গাছ, কিন্তু কেন এখন এর আবিস্কার?
সামুদ্রিক ঘাসের অস্তিত্ব অজানা ছিল না। কিন্তু এটা যে একটাই গাছ, সেইটি এত দিনে জানা গেল। গবেষকরা একটি তৃণভূমি ভেবেছিলেন প্রথমে। তারা এর জিনগত বৈচিত্র জানতে চেয়েছিলেন। নানা অংশ সংগ্রহ করেছিলেন সে জন্য। সেই বিশ্লেষণ করে তো মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়বার জোগাড়, কারণ তাঁরা বুঝতে পারলেন– ছড়িয়ে থাকা এই নানা অংশ একটিই গাছের। ইউরেকা ইউরেকা বলতে বলতে তাঁদেরই কেউ আর্কেমেডিস সদৃশ ছুটেছিলেন কিনা জানা নেই!

কী ভাবে এত বড় হল এবং এত দিন বাঁচল?

হরপ্পা যুগের কোনও সময়ে এই গাছটি প্রথম গজিয়েছিল শার্ক বে-তে। তার পর তার রাইজোমগুলির মাধ্যমে সেটি ছড়াতে থাকে। প্রকৃতির সব বাধা কাটিয়ে বেঁচে যেতে থাকে। ক্রমে আজকের আকার সে লাভ করে।
রিবন উইডের রাইজোম এক বছরে ৩৫ সেন্টিমিটার বাড়তে পারে। সেই বিচার করে বিজ্ঞানীরা এর বয়স হিসেব করেছেন। সাড়ে চার হাজার বছরের গাছটির বয়স, তাঁরা সত্যিই চমকে হতবাক হয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের চাপে যখন আমরা তিতিবিরক্ত, তখন এত দিনের একটি গাছকে পেয়ে প্রকৃতি প্রেমী ও পড়ুয়ারা খুশি রীতিমতো। তা ছাড়া, অন্য কারওর সঙ্গে মিলিত না হয়ে এত দিন ধরে ধীরে ধীরে এই অকল্পনীয় বৃদ্ধি। নিজের সঙ্গেই মিলনের ফল কি এই মহা-বৃদ্ধি! সোলোগামির প্রাচীনতম উদাহরণ কি একে বলা যায় না!

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Explained news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Know about the largest plant in the world