Domestic Air Travel: করোনাগ্রাফ নিম্নমুখী হতেই একাধিক রাজ্য শিথিল করেছে বিধি। দেশের মধ্যে আকাশপথে যাতায়াতেও তুলে নেওয়া হয়েছে একাধিক নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু ডেল্টা প্রজাতির প্রকোপ এবং তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা উদ্বেগের কারণ। তাই ঘরোয়া বিমানে যাতায়াতে কিছু বিধি এখনও বহাল একাধিক রাজ্যে।
স্বাভাবিকেই প্রশ্ন আসছে কী সেই বিধি? নিজের শহর থেকে দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা কিংবা হায়দরাবাদ যেতে কী সঙ্গে রাখতে হচ্ছে বিমানযাত্রীদের? সেই প্রশ্নের জবাব দিয়েছে কয়েকটি রাজ্যের সাম্প্রতিক কোভিড গাইডলাইন।
দিল্লি: রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর বিমানযাত্রীদের জন্য ৪টি রঙ চিহ্নিত করেছে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সংক্রমণের নিরিখে যাত্রীদের সেই রঙে আওতাভুক্ত করা হবে। সেভাবেই দিল্লি প্রবেশে তাঁদের ওপর শর্ত আরোপ করা হবে। এই চারটি রঙ হলুদ, অ্যাম্বার বা পীতাভ বাদামি (রাসায়নিক বা ওষুধ সংরক্ষণে যে রঙের শিশি ব্যবহৃত হয়), কমলা এবং লাল। যে যে রাজ্যের সংক্রমণের হার ৫%-এর বেশি, সেই রাজ্যের বিমানযাত্রীরা লাল রঙের আওতাভুক্ত।
পাশাপাশি ডেল্টা প্রজাতির বাড়বাড়ন্ত যে রাজ্যে, সে রাজ্যের যাত্রীরাও লাল রঙের আওতাভুক্ত। এই যাত্রীদের দিল্লি প্রবেশের ৭২ ঘণ্টা আগে করা আরটি-পিসিআর টেস্ট কিংবা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের শংসাপত্র হাতে রাখতেই হবে। এই দুয়ের কোনওটাই না থাকলে অন্তত ১৪ দিন সরকারি কোভিড সেন্টার বা নিজের খরচায় কোনও হোটেলে আইসোলেশন বাধ্যতামূলক।
মহারাষ্ট্র: রাজ্য সরকার সম্প্রতি আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক এই নিয়ম শিথিল করেছে। শুধু তাঁদের জন্য, যাঁদের ভ্যাকসিনের দুটি টিকাই নেওয়া। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, একাধিক বিমানযাত্রী কাজের সূত্রে সকালে মুম্বাই ঢুকে আবার সন্ধ্যায় বেরিয়ে যাচ্ছে। ফলে এই অল্প সময়ের জন্য তাঁরা আরটি-পিসিআর টেস্ট করাতে পারছে না।
এর আগে ১২ মে মহারাষ্ট্র সরকার আরটি-পিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছিল। দেশের যেকোনও রাজ্য থেকে যেকোনও পথে মহারাষ্ট্রে যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে এই টেস্ট করানো বাধ্যতামূলক ছিল।
হিমাচল প্রদেশঃ
দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনবান্ধব রাজ্য। সম্প্রতি সে রাজ্যের একাধিক হিল স্টেশনে পর্যটকদের বেপরোয়া মনভাবে উদ্বেগ বেড়েছে চিকিৎসকদের। তবে এই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, হিমাচল প্রদেশ প্রবেশে আর নেগেটিভ আরটি-পিসিআর বাধ্যতামূলক নয়। এর ফলে সাম্প্রতিককালে হিমাচল ভ্রমণে বেড়েছে পর্যটকদের জমায়েত।
অন্ধ্রপ্রদেশঃ
বিমানে দক্ষিণের এই রাজ্য প্রবশে লাগছে না নেগেটিভ আরটি-পিসিআর। কিন্তু বিমান যাত্রার আগে থার্মাল স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক। আর সেই রিপোর্ট অন্ধ্র সরকারের পোর্টাল (www.spandana.ap.gov.in). –এ নথিভুক্ত করা আবশ্যিক। উপসর্গহীন সংক্রমিতদের ১৪ দিনের কোয়ারান্টিন বাধ্যতামূলক অন্ধ্রে।
অসম:
আরটি-পিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক নয়। তবে বিমানবন্দরে প্রবেশে থার্মাল স্ক্রিনিং আবশ্যিক। বিমানবন্দরে প্রবেশমাত্রই আবশ্যিক করা হয়েছে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট। এমনকি, নমুনা পরীক্ষার ওপর সংক্রমিতদের ৭ দিন কোয়ারান্টিণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
কর্নাটকঃ
মহারাষ্ট্র থেকে কর্নাটক প্রবেশে আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক। বিমান যাত্রার অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে সেই টেস্ট করতে হবে। এমনকি কর্নাটক সরকারের নির্দেশ, আরটি-পিসিআর রিপোর্ট নেগেটিভ থাকলেই তবে যাতে যাত্রীদের বোর্ডিং পাশ ইস্যু করে বিমান সংস্থাগুলো। নয়তো ভ্যাকসিনের অন্তত একটা ডোজ থাকলেও চলবে।
গোয়াঃ
দেশের অন্যতম পর্যটনবান্ধব রাজ্য গোয়া। সেই রাজ্য সম্প্রতি নিয়ম করেছে আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়েই বিমানে গোয়া ঢুকতে পারবেন পর্যটকরা। যাত্রার অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে সেই টেস্ট করাতে হবে। গোয়া সরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটি সম্প্রতি সুপারিশ করেছে আরটি-পিসিআর ছাড়া ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট নিয়েও গোয়ায় প্রবেশ করা যাবে।
বাংলাঃ
জুলাই মাস জুড়েই রাজ্যে বলবৎ করোনা বিধি নিষেধ। তাও বিমানে এ রাজ্যে প্রবেশে নেগেটিভ আরটি-পিসিআর রিপোর্ট বাধ্যতামূলক। অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে করাতে হবে সেই নমুনা পরীক্ষা। এমনটাই নবান্নের নিদান।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন