Advertisment

নয়া নামকরণ তো হল, কিন্তু কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব কী?

১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে দাসপ্রথার পরিসমাপ্তির পর, এই বন্দর দিয়েই জাহাজে করে লক্ষ লক্ষ ভারতীয়দের চুক্তিশ্রমিক হিসেবে পাঠান হত সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kolkata port trust renamed

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মোদী (ছবি- পার্থ পাল)

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার ১২ জানুয়ারি কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের নয়া নামকরণ করেছেন। ভারতীয় জন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বন্দরের নাম করণ করা হয়েছে তাঁর নামে।

Advertisment

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ভাষণ দেবার সময়ে মোদী বলেন, "জলপথের দ্বারা দেশের লাভ হচ্ছে। হলদিয়া ও বেনারস একই ভাবে সংযুক্ত। জলপথের উন্নয়নের ফলে কলকাতা বন্দরের সঙ্গে পূর্ব ভারতের শিল্প কেন্দ্রগুলির যোগাযোগেরও উন্নতি হয়েছে। এর ফলে ভূটান, মায়ানমার, নেপালের মত প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যের সুবিধা হচ্ছে।"

কলকাতা বন্দরের ইতিহাস

ষোড়শ শতকের গোড়ায় পর্তুগিজরা প্রথম এখানে নোঙর ফেলেছিল। তাদের মনে হয়েছিল কলকাতা পেরিয়ে হুগলি নদী দিয়ে আরও এগিয়ে যাওয়া নিরাপদ নয়।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক কর্মচারী তথা প্রশাসক ছিলেন। তাঁর নাম জব চার্নক। মনে করা হয় ১৬৯০ সালে তিনিই এই বাণিজ্য ঘাটটি প্রতিষ্ঠা করেন। যেহেতু তিন দিক থেকে এ জায়গা ছিল জঙ্গলে ঘেরা, ফলে শত্রুর আক্রমণের ব্যাপারে অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকা যেত এখানে।

১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে দাসপ্রথার পরিসমাপ্তির পর, এই বন্দর দিয়েই জাহাজে করে লক্ষ লক্ষ ভারতীয়দের চুক্তিশ্রমিক হিসেবে পাঠান হত সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায়।

কলকাতা ক্রমে বাড়তে থাকে। আকারে এবং গুরুত্বের দিক থেকেও। শহরের ব্যবসায়ীরা ১৮৬৩ সালে এখানে বন্দর গড়ার দাবি তোলেন। ঔপনিবেশিক সরকার ১৮৬৬ সালে রিভার ট্রাস্ট গড়ে তুললেও, তা টেঁকেনি। এর পর সরকার নিজের হাতে তুলে নেয় এর প্রশাসনিক দায়ভার।

১৮৭০ সালে কলকাতা বন্দর আইন (১৮৭০ সালের ৫ নং আইন) পাশ হয়। তৈরি হয় কলকাতা পোর্ট কমিশনারের দফতর।

১৮৬৯ ও ১৮৭০ সালে স্ট্র্যান্ডে ৮টি জেটি তৈরি হয়। ১৮৯২ সালে খিদিরপুরে তৈরি হয় ওয়েট ডক। খিদিরপুরে দ্বিতীয় ডক তৈরির কাজ শেষ হয় ১৯০২ সালে।

বন্দরের কাজকর্মের পরিমাণ ক্রমশ বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে কেরোসিনের প্রয়োজনও। এর ফলে ১৮৯৬ সালে বজবজে তৈরি হয় একটি পেট্রোল ঘাটা।

১৯২৫ সালে আরও বেশি পরিমাণ বাণিজ্যপোতকে জায়গা দেবার উদ্দেশ্যে গার্ডেনরিচ জেটি সংযুক্ত করা হয়। ১৯২৮-এ তৈরি হয় নতুন কিং জর্জস ডক। ১৯৭৩ সালে তার নতুন নামকরণ হয় নেতাজি সুভাষ ডক।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জাপানি সেনা বন্দরে বোমাবর্ষণ করে।

স্বাধীনতার পর থেকেই বাণিজ্যপোতের যাতায়াতের সংখ্যা কমতে থাকে কলকাতা বন্দরে। উঠে আসতে থাকে মুম্বই, কাণ্ডলা, চেন্নাই, বিশাখাপত্তনম।

কলকাতা বন্দরের প্রাকৃতিক সমস্যা

কলকাতা বন্দরই দেশের একমাত্র নদীবন্দর, যা সমুদ্র থেকে ২০৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। হুগলি নদীতে প্রচুর বাঁক রয়েছে, যার ফলে খাঁড়ির মধ্যে দিয়ে জাহাজ আসতে সমস্যা হয়। এই খাঁড়িগুলির নাব্যতা বজায় রাখার জন্য সারা বছর ড্রেজিংয়ের কাজ চলে।

Advertisment