La Nina delayed: বিলম্বিত লা নিনা! কতটা প্রভাবিত হবে ভারতীয় বর্ষা?
Indian monsoon prediction: সেপ্টেম্বরের মধ্যে লা নিনা অবস্থার উদ্ভব হলে জলবায়ুগতভাবে বর্ষার শেষ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।
Indian monsoon prediction: সেপ্টেম্বরের মধ্যে লা নিনা অবস্থার উদ্ভব হলে জলবায়ুগতভাবে বর্ষার শেষ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।
Kolkata Weather: বৃষ্টি ভেজা শহর কলকাতার টুকরো ছবি। (এক্সপ্রেস ফটো: শশী ঘোষ।)
La Nina delayed Indian monsoon: একাধিক আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা, 'লা নিনা'র বিলম্বের পূর্বাভাস দিয়েছে। এই লা নিনা হল, নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার পর্যায়ক্রমিক শীতলতা। যদিও এর আগে জুলাইয়ের কাছাকাছি সময়ে 'লা নিনা'র সূচনা হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু, সর্বশেষ তথ্য বলছে যে সেপ্টেম্বর বা তার পরে 'লা নিনা' প্রভাব ফেলবে। জলবায়ুর ধাঁচ অনুযায়ী, ভারতে মরশুমি বৃষ্টিপাতের মূলে রয়েছে বর্ষাকাল। কিন্তু, ভারতে সেপ্টেম্বর প্রায় বর্ষাকালের শেষ পর্যায়। আর, তার ফলে 'লা নিনা' এবছর ভারতের বর্ষায় কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
Advertisment
ENSO কি?
এল নিনো সাউদার্ন অসিলেশন (ENSO) হল একটি জলবায়ু সংক্রান্ত পরিবর্তন। যা মধ্য, পূর্ব গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগর বরাবর সমুদ্রের তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে বায়ুমণ্ডলে ঘটে থাকে। আন্তর্জাতিক বায়ুমণ্ডলীয় সঞ্চালনের সঙ্গে এই পরিবর্তন ঘটে। যা, বিশ্বব্যাপী আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে। ENSO-এর তিনটি পর্যায় আছে- উষ্ণ পর্যায় (এল নিনো), শীতল পর্যায় (লা নিনা) এবং নিরপেক্ষ। এটি ২ থেকে ৭ বছর অন্তর অনিয়মিতভাবে পরিবর্তিত হয়।
Advertisment
এল নিনো পর্বে বায়ুর ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যায়। যার ফলে উষ্ণ জলের কম স্থানচ্যুতি ঘটে। ফলে, প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব দিক স্বাভাবিকের চেয়ে উষ্ণ হয়ে ওঠে। লা নিনা পর্বে, ঠিক তার বিপরীত ঘটে। সর্বশেষ এল নিনো, ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের মে মাসের মধ্যে হয়েছিল। আর, লা নিনো পরিস্থিতি ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে টানা তিন বছর স্থায়ী হয়েছিল। এই বছরের শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থাগুলো জুলাইয়ের কাছাকাছি লা নিনা অবস্থার সূত্রপাতের পূর্বাভাস দিয়েছিল।
Kolkata Weather Today: বৃষ্টি ভেজা শহর কলকাতার ছবি।
লা নিনা সম্পর্কে আবহাওয়া সংস্থাগুলো কী বলে?
ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ) লা নিনার বিলম্বের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। প্রথমে বলেছিল, আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে তৈরি হতে পারে। কিন্তু, ১১ জুলাই তারিখের আপডেটে জানিয়েছে, লা নিনা পরিস্থিতি তৈরি হতে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর হয়ে যাবে। সেই সময় উত্তর গোলার্ধে বর্ষা শেষ হয়ে শরৎ, হেমন্ত ঋতু চলে আসবে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যুরো অফ মেটিওরোলজি (BoM), হায়দরাবাদের ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান ইনফরমেশন সার্ভিসেস (INCOIS), সবাই বলেছে যে, নিরপেক্ষ অবস্থা এই বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকবে। তারপর লা নিনা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। INCOIS জানিয়েছে, 'লা নিনার বৃদ্ধি সেপ্টেম্বর-জানুয়ারিতে বেশি হয়। এই বছরে তা নভেম্বর মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে।'
এটা কি ভারতীয় বর্ষায় প্রভাব ফেলবে?
চলতি বছর, ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) জুন-সেপ্টেম্বর মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। জুলাইয়ের বৃষ্টিপাত আশাব্যঞ্জক বলে মনে হচ্ছে। কারণ, আগামী দশ দিনের মধ্যে দেশে ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। জুলাই এবং আগস্টে হওয়া বৃষ্টিপাত ভারতের মৌসুমি বৃষ্টিপাতের প্রায় ৭০%। সেপ্টেম্বরের মধ্যে লা নিনা পরিস্থিতির উদ্ভব হলেও, আবহাওয়াবিদরা তাই আশঙ্কার কোনও কারণ দেখতে পাচ্ছেন না। আর্থ সায়েন্সেস মন্ত্রকের প্রাক্তন সচিব এম রাজীবন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'লা নিনার বিলম্বিত বিকাশ ভারতে বর্ষার ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলবে না।'
যদিও লা নিনা পরিস্থিতি ভালো বর্ষা বা বৃষ্টির পক্ষে, তবে ভালো বৃষ্টি বা বর্ষার জন্য লা নিনা পরিস্থিতি অপরিহার্য নয়। আবার সেপ্টেম্বরের মধ্যে লা নিনা অবস্থার উদ্ভব হলে জলবায়ুগতভাবে বর্ষার শেষ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সাধারণত মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ১৫% থাকে। এবার বর্ধিত বৃষ্টিপাতের ফলে সেপ্টেম্বরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।