Lakshadweep coral reefs undergoing severe bleaching: প্রবাল প্রাচীর দিয়ে তৈরি লাক্ষাদ্বীপ অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। মালদ্বীপে অহরহ যাওয়া ভারতীয়দের পর্যটনস্থল হিসেবে লাক্ষাদ্বীপকে তুলে ধরতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী নিজে লাক্ষাদ্বীপে গিয়েছেন। সেখানে কাটানো মুহূর্তগুলো, লাক্ষাদ্বীপের সৌন্দর্য- সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। শুধু তাই নয়, লাক্ষাদ্বীপকে কেন্দ্র করে নৌবাহিনীকে সাজিয়ে নেওয়ার বৃহত্তর পরিকল্পনাও ছকে ফেলেছে কেন্দ্র। কিন্তু, তারই মধ্যে এসেছে দুঃসংবাদ। লাক্ষাদ্বীপকে ঘিরে বিপদের অশনিসংকেত।
গবেষকরা যা দেখেছেন
আইসিএআর (আইসিএআর/ICAR)-সেন্ট্রাল মেরিন ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিএমএফআরআই/CMFRI)-এর পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে যে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দীর্ঘকালীন সামুদ্রিক তাপপ্রবাহের জেরে লাক্ষাদ্বীপ সাগরের প্রবাল প্রাচীরগুলো প্রচণ্ড ঘামছে বা কোরাল ব্লিচিং হচ্ছে। এই গবেষণার নেতৃত্বে থাকা সিএমএফআরআই-এর প্রবীণ বিজ্ঞানী ড. আরকে শ্রীনাথ ও ড. শিলটন পাড়ুয়ার মতে, প্রবাল প্রাচীর ঘেমে যাওয়া বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, লাক্ষাদ্বীপের বৈচিত্র্যময় সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে।
প্রবাল ব্লিচিং কী?
গরম জলে প্রবাল ঘেমে ওঠে। এই সময় প্রবালের টিস্যুতে থাকা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র শৈবাল বেরিয়ে আসে। এই শৈবাল বা শ্যাওলা প্রবালের খাদ্য তৈরি করে। এই শ্যাওলা ছাড়া প্রবালের কোষ তার রং হারায়। শুকিয়ে যায়। সাদা কঙ্কালের মত হয়ে যায়। একেই বলে ক্লোরাল ব্লিচিং বা প্রবালের ঘাম। প্রবাল ঘেমে উঠলে, সে শ্যাওলার অভাবে অনাহারে ভোগে আর মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শ্যাওলা ছাড়া প্রবাল বড়জোড় সপ্তাহ দুয়েক বেঁচে থাকতে পারে। গত সপ্তাহে এই প্রবালের ঘামের ব্যাপারটা বিজ্ঞানীদের চোখে ধরা পড়েছে।
কিন্তু, তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে ব্যাপারটা গত অক্টোবর থেকে চলছে। যার অর্থ ইতিমধ্যে অসংখ্য প্রবালের মৃত্যু হয়েছে। আর, জল ঠান্ডা না-হলে বাকি প্রবালগুলোও মারা যেতে পারে। অবশ্য প্রবালের এমন ঘাম কিন্তু, লাক্ষাদ্বীপে নতুন নয়। ১৯৯৮, ২০১০, ২০১৫ সালেও এমনভাবেই লাক্ষাদ্বীপের প্রবালকে ঘামতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, সেটা এবারের মত এতটা ব্যাপক আকারের ছিল না। এটাই পার্থক্য।
আরও পড়ুন- মোদী সরকারকে ফেলে দিতে বিরাট ছক? আড়াল থেকেই ভয়ংকর খেলায় জঙ্গিনেতা পান্নুন
কী ক্ষতি হতে পারে?
লাক্ষাদ্বীপ প্রবাল প্রাচীর নিয়ে তৈরি। সেখানে প্রবালের মৃত্যু হলে, তা জমে থাকবে। নতুন প্রবাল তৈরি হবে না। পরবর্তীকালে মৃত প্রবালের প্রাচীর ক্ষয়ে দ্বীপ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, প্রবালের মত ওই অঞ্চলে সামুদ্রিক ঘাসের ভূমি এবং গাছগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। সালোকসংশ্লেষ ঠিকমতো হচ্ছে না। সমুদ্রের জলে তাপপ্রবাহের কারণে গাছগুলো সংখ্যায় বাড়ছে না।