সোমবার সুপ্রিম কোর্ট লোকসভার সচিবালয়ের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতা তথা লাক্ষাদ্বীপের সাংসদ মহম্মদ ফয়জলের আবেদনের শুনানি করতে রাজি হয়েছে। কেরল হাইকোর্ট, হত্যার চেষ্টার অভিযোগে তাঁর শাস্তি এবং ১০ বছরের সাজা স্থগিত করেছে। তার প্রেক্ষিতে লোকসভার সচিবালয়ের কাছে সাংসদ পদ খারিজের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিলেন ফয়জল। কিন্তু, লোকসভার সচিবালয় তার পরও তাঁর সাংসদপদ ফিরিয়ে দেয়নি।
ফয়জলের মামলা
এই অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিবাদেই লোকসভার সচিবালয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ ফয়জল। কংগ্রেস সাংসদের হয়ে আদালতে এই আবেদন করেছেন প্রবীণ আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তিনি প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চের কাছে মঙ্গলবার এই আবেদন করেছেন।
ফয়জলের সঙ্গে কী হয়েছে?
গত ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি, ফয়জলের বিরুদ্ধে লাক্ষাদ্বীপের আন্দ্রোথ দ্বীপ থানায় একটি 'মিথ্যা মামলা' নথিভুক্ত হয়েছিল। বিচার চলাকালীন ফয়জল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রশাসিত লাক্ষাদ্বীপের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। ওই বছরের ১১ জানুয়ারি, ফয়জল এবং তাঁর ভাই-সহ অন্য তিন জনকে কাভারত্তির একটি দায়রা আদালত দোষী সাব্যস্ত করে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিএম সঈদের শ্বশুর মহম্মদ সালিহকে ২০০৯ সালে হত্যার চেষ্টা করেছে। দায়রা আদালত এই অভিযোগে ফয়জল-সহ অন্যান্য দোষীদের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়। সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করে।
লোকসভা সচিবালয়ের-কাণ্ড
লাক্ষাদ্বীপের আদালত ২০২৩ সালের ১৩ জানুয়ারি ফয়জল-সহ অন্যান্যদের দোষী সাব্যস্ত করার মাত্র দুই দিন পরে লোকসভার সচিবালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে ফয়জলের সাংসদ পদ খারিজ করে। এর পর ১৮ জানুয়ারি, নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে লাক্ষাদ্বীপ সংসদীয় আসনে উপনির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করে। যা এতদিন ফয়জলের দখলে ছিল। নির্বাচন কমিশন যখন এই বিজ্ঞপ্তি দেয়, তখনও কিন্তু ফয়জলের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে আবেদন কেরল হাইকোর্টের বিচারাধীন ছিল।
আরও পড়ুন- ‘ভগৎ সিংয়ের মত সাহস বিরল,’ ঠিক এই বাক্যেই প্রশংসা করেছিলেন স্বয়ং নেহরুও
কী নির্দেশ দিয়েছে কেরল হাইকোর্ট?
কেরল হাইকোর্ট ২৫ জানুয়ারি সেশন কোর্টের আদেশ স্থগিত করেছে। ফয়জলের দোষী সাব্যস্ত হওয়া স্থগিত করেছে। তাঁর ভাই সৈয়দ মহম্মদ নুরুল আমিন-সহ তিন আসামির সাজাও স্থগিত করেছে। যার জেরে, নির্বাচন কমিশন লোকসভা আসনের উপনির্বাচনও স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপনির্বাচন ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তা সত্ত্বেও, লোকসভার সচিবালয় ফয়জলের বিরুদ্ধে সদস্যপদ খারিজের নোটিশ প্রত্যাহার করেনি।