রবিবারই মারা গিয়েছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ। দুবাইয়ের এক হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ২০০৮ সালে তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করেন। সেই সময় ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী তাঁকে ইমপিচ করার হুমকি দিয়েছিল। বাধ্য হয়ে তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়। তবে, মাত্র একটা কারণে পারভেজ মুশারফ পদত্যাগ করেননি। তাঁর পদত্যাগের পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ ছিল। তাঁর কার্যকালের শেষদিকে বেশ কিছু বিতর্কের মধ্যে জড়িয়ে গিয়েছিলেন মুশারফ। যার জেরে পাকিস্তানজুড়ে অশান্তি শুরু হয়েছিল।
প্রধান বিচারপতির ওপর গুলি
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ইফতিকার মহম্মদ চৌধুরির ওপর গুলিচালনার প্রতিবাদে মুশারফের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিলেন আইনজীবীরা। তাঁর জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণাও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগও ওঠে মুশারফের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, মুশারফের তৈরি রাজনৈতিক দল পিএমএল-কিউ ২০০৮ সালের নির্বাচনে অত্যন্ত খারাপ ফলাফল করেছিল।
পাকিস্তানজুড়ে জঙ্গি হামলা
যাইহোক, অনেক বিশেষজ্ঞ অবশ্য মুশারফের পতনের পিছনে ২০০৭ সালে ইসলামাবাদের লাল মসজিদে সেনা অভিযান অনেকাংশে দায়ী। তার ফলে মুশারফের চারপাশের পরিস্থিতিটা দ্রুত বদলে যায়। বদলে যায় মুশারফের সঙ্গে পাকিস্তানের জঙ্গিদের সম্পর্কের রসায়নও। লাল মসজিদের ওই অভিযানের জেরে জন্ম নেয় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামে এক জঙ্গি সংগঠন। যার জেরে পাকিস্তানজুড়ে শুরু হয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর হামলা। অবশেষে ২০২২ সালের জুনে গিয়ে টিটিপি পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেছে। কিন্তু, তারপরও ওই জঙ্গি সংগঠন পাকিস্তানের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে রয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া জানুয়ারির শেষ দিকে (৩০ জানুয়ারি) টিটিপি পাকিস্তানের পেশোয়ারে এক মসজিদে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তাতে কমপক্ষে শতাধিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন- কার্গিলের লড়াইয়ে কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন মুশারফ?
লাল মসজিদের ইতিহাস
পাকিস্তানে ১৯৬৫ সালে লাল মসজিদ তৈরি হয়েছিল। তারপর থেকে এই মসজিদ ইসলামের উগ্রবাদের পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ আবদুল্লাহ গাজি। তিনি জিহাদের পক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য কুখ্যাত ছিলেন। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজির সঙ্গে পাকিস্তানের প্রাক্তন একনায়ক জেনারেল জিয়া-উল-হকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
Read full story in English