ভারতের সন্ধ্যা, তবে ল্যান্ডার বিক্রম চন্দ্রের হিসেবে অবতরণ করেছে ভোরে। আর, তারপরই ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে এসেছে রোভার প্রজ্ঞান। উভয়েই কাজ শুরু করেছে। ল্যান্ডারের মধ্যে আছে চারটি পেলোড। যা তথ্য সংগ্রহের কাজে লাগানো হয়েছে। আর, রোভারের মধ্যে আছে দুটি পেলোড। তা-ও তথ্য সংগ্রহ করছে। আগামী এক চন্দ্রদিবস (পৃথিবীর ১৪ দিন) ধরে যতটা তথ্য সংগ্রহ করা যায়, সেটা সংগ্রহ করাই এখন ল্যান্ডার এবং রোভারের লক্ষ্য। চন্দ্রযান ৩-এর পেলোডগুলো চন্দ্রের ভূমিকম্প, খনিজ গঠন এবং চাঁদের পৃষ্ঠের কাছাকাছি ইলেকট্রন এবং আয়নগুলো পরীক্ষা করে দেখবে। দুটি পূর্ববর্তী অভিযানের থেকে পাওয়া তথ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। এবারের অভিযানটি চাঁদে জল বা বরফ আছে কি না, তা জানার চেষ্টা করবে। এর আগে চন্দ্রযান-১ চাঁদে জল ও বরফ আছে বলেই সংকেত দিয়েছিল।
অভিযানে কী কী পরীক্ষা
ল্যান্ডার বিক্রমের বোর্ডে চারটি পেলোডের মাধ্যমে পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। যেসব বিষয়গুলোর পরীক্ষা হবে, তা হল:
১) রেডিও অ্যানাটমি অফ মুন বাউন্ড হাইপারসেনসিটিভ আয়নোস্ফিয়ার অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ার (রম্ভা)- চাঁদের পৃষ্ঠের কাছাকাছি ইলেকট্রন এবং আয়নগুলো সময়ের সঙ্গে কীভাবে পরিবর্তন হয় তা পর্যবেক্ষণ করবে।
২) চন্দ্রের সারফেস থার্মো ফিজিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট (চেস্ট)- মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপীয় বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যবেক্ষণ।
৩) দ্য ইনস্ট্রুমেন্ট ফর লুনার সিসমিক অ্যাক্টিভিটি (আইএলএসএ)- ল্যান্ডিং সাইটের কাছাকাছি চন্দ্রের কম্পন পরিমাপ করবে এবং চাঁদের ভূত্বক তথা আবরণের গঠন পরীক্ষা করবে।
৪) লেজার রেট্রোরেফ্লেক্টর অ্যারে (এলআরএ)- নাসার একটি পরোক্ষ পরীক্ষা যা ভবিষ্যতের অভিযানের জন্য খুব সঠিক পরিমাপের লক্ষ্যে লেজারগুলোর বিষয়ে পরীক্ষা চালাবে।
এছাড়া রোভার প্রজ্ঞানের দুটি পেলোডের মাধ্যমেও পরীক্ষা চলবে। সেই পরীক্ষাগুলো হল:
১) লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ (এলআইবিএস)- চন্দ্রপৃষ্ঠের রাসায়নিক এবং খনিজ গঠন নির্ধারণ করবে।
২) আলফা পার্টিকেল এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার (এপিএক্সএস)- চাঁদের মাটি এবং শিলায় ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, টাইটানিয়াম এবং লোহার মতো উপাদানগুলোর গঠন নির্ধারণ করা হবে।
আরও পড়ুন- মাত্র একদিন চাঁদে থাকবে চন্দ্রযান, এইটুকু সময়ে কী জানতে গেল?
চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার বিক্রিম চাঁদের ৭০ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে অবতরণ করেছে। অতীতে কোনও মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুর এত কাছে পৌঁছতে পারেনি। বিক্রম থেকে একটি সিঁড়ি নামার পরে, ছয় চাকার ২৬ কেজি ওজনের রোভার প্রজ্ঞান ধীরে ৫০০ মিটার পর্যন্ত চন্দ্রপৃষ্ঠে ঘুরে অনুসন্ধানের কাজ চালাচ্ছে।