রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ইস্যুতে এবার সুপ্রিম কোর্টের উলটোপথে ল কমিশন। সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে প্রায় বছরখানেক আগে। এবার, জাতীয় আইন কমিশন সুপারিশ করেছে যে পদ্ধতিগত সুরক্ষা এবং বর্ধিত কারাদণ্ডের মেয়াদ-সহ রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বজায় রাখা হবে। প্রশ্ন উঠছে, কমিশন কেন রাষ্ট্রদ্রোহ আইন জোরদার করার সুপারিশ করল?
কমিশন কী বলেছে?
কর্ণাটক হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থির নেতৃত্বে বর্তমান বা ভারতের ২২তম আইন কমিশন তার ৮৮-পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলেছে যে ২০১৬ সালের মার্চে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের থেকে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন খতিয়ে দেখার একটি প্রস্তাব পেয়েছিল। সেই প্রস্তাবে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ব্যবহার এবং সংশোধনের ব্যাপারে যদি কোনও পরামর্শ থেকে থাকে, সেই পরামর্শ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল।
পরাধীন ভারতের আইন
কমিশন ২০২২ সালের নভেম্বরে এই প্রস্তাব পেয়েছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এনভি রমনার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ ২০২২ সালের মে মাসে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে শাস্তির বিধান স্থগিত করেছিল। তার কয়েক মাস পরে কমিশনের কাছে সুপারিশ গিয়েছিল। সরকার এই বিধান পর্যালোচনা না-করা করা পর্যন্ত, সুপ্রিম কোর্ট ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারা চালু রাখতে চায়নি। আইনগত ভাবে আদালত রাষ্ট্রদ্রোহ আইনটি বাতিল করেনি। আদালত সেটা করেও না। আদালত কেবল এই আইনটি ক্ষমতাহীন করে দিয়েছিল। কারণ, এই আইন ব্রিটিশ শাসনধীন ভারতের জন্যই উপযুক্ত ছিল।
আরও পড়ুন- এবছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের থিম কী ছিল, কী তার তাৎপর্য?
রাষ্ট্রদ্রোহ আইন কী?
ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারা হল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ। সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা বা সরকারের বিরুদ্ধে উত্তেজনা বৃদ্ধির চেষ্টাকে এই আইনের আওতায় বিচার করা হয়। ১৯৬২ সালে, 'কেদারনাথ সিং বনাম বিহার রাজ্য' মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আইপিসির ১২৪এ ধারার সাংবিধানিক বৈধতা বহাল রাখে। তবে, আদালত তার অপব্যবহারের সুযোগ সীমিত করার চেষ্টা করেছিল। আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল যে, উসকানি বা হিংসার আহ্বান না-থাকলে, সরকারের সমালোচনাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না।